এবার কি শাসকের রোষে ইউটিউবার? সত্যি কথা বলার কোন খেসারত দিলেন শুদ্ধশীল! কলকাতা রাজ্য September 16, 2024September 16, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- আরজিকর কান্ড নিয়ে প্রতিবাদে ভাসছে পশ্চিমবঙ্গ। মিছিল, মিটিং, ব্যারিকেড, প্রতিরোধ, প্রতিবাদ প্রত্যেকদিন দেখা মিলছে মহানগরী থেকে শুরু করে জেলা শহর এবং শহরতলীগুলোতেও। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে আসরে নেমেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। অথচ প্রতিবাদের ঢেউ রেয়াত করছে না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। রাজ্যজুড়ে সকল মানুষের প্রার্থনা, গনতন্ত্র ফিরে আসুক। মানুষের কথা বলার অধিকার, সম্মান-সম্পত্তি নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার এইসবের জন্য যেন প্রার্থনা করতে না হয়। সরকার বুঝুক, এই মৌলিক অধিকার দিতে তারা বাধ্য। সেজন্য বিরোধী আমলের আন্দোলন, গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বানী সবকিছু ভুলে তদানীন্তন বিরোধী নেত্রী এখন শুধুই শাসক। যার হ্যাঁ তে হ্যাঁ, নাতে না মেলাতে পারলে সরকারের করালগ্রাসের শিকার হতে পারেন আপনিও – এমন ভয়ঙ্কর দাবি করতে শুরু করেছেন বিরোধী থেকে আন্দোলন মুখর জনতার একাংশ। অনেকে অবশ্য সরকারের পক্ষ নিয়েও কথা বলছেন। কিন্তু তাদের কাছে সর্বসাধারণের প্রশ্ন, সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে প্রিন্ট মিডিয়া, ইউটিউবার থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া, সমালোচনা করলেই হয় তুমি শত্রু, না হয় বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনুচর। গনতান্ত্রিক কোনো সরকার কি শুধু সমালোচনা করার কারণে ইউটিউবারদের প্রতি সরাসরি প্রতিহিংসাপরায়ন হতে পারে? যদি তা নাই হবে, তাহলে বারবার কেন সরকারের সমালোচনা করার জন্য সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, সফিকুল ইসলাম, মানব গুহ এবং শুদ্ধশীল ঘোষ মত ইউটিউবারদের বারেবারে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে – উঠে যাচ্ছে সেই প্রশ্নও! আইনগত ভাবে, কোনো সাংবাদিক সংবিধানকে উলঙ্ঘন করলে বা ভুল করলে আইনানুগ ভাবে বিচার ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করাই যায়। কিন্তু বিগত দিনের ঘটনাচক্রে পরিস্কার – শাসকের মনে ধরবে এমন শ্রুতিমধুর মনভোলানো কথা না বলতেই কি এঁদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে? আমজনতা কিন্তু সমস্বরে সেই প্রশ্নই তুলতে শুরু করে দিয়েছেন! সমালোচনার ঝড় উঠছে – এর কারন বোধহয় একটাই, যে কোনো প্রক্রিয়ায় বিরোধী কন্ঠস্বর বা সমালোচনার কন্ঠস্বরকে দাবিয়ে দিতে হবে। আমরা অতীতেও দেখেছি, ইউটিউবার শুদ্ধশীল ঘোষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে অগনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। পরবর্তীতে কোর্টের কাছে মুখ থুবড়ে পুড়তে হয়েছে সরকারকে। তারপরে বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে গ্রেপ্তারের বহু চেষ্টা হয়েছে। শেষমেষ যে যন্ত্রের সাহায্যে ইউটিউবাররা সংবাদ পরিবেশন করে থাকেন, সেই ল্যাপটপ, স্পিকার, অ্যান্ড্রয়েড ফোন সবকিছুই তুলে নিয়ে যাওয়া হলো পুলিশ পাঠিয়ে। পুলিশের তরফ থেকে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে – কিন্তু অভিযোগ যদি এতই গুরুতর হবে, তাহলে আদালতে কেন আইনি লড়াইয়ের সুযোগ না দিয়েই বাড়িতে অর্ডার বেরকরে এনে সমস্ত কিছু নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস? গোটা ঘটনার পর্যবেক্ষণ করে এমনটাই মনে করছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ। জনতার মধ্যে থেকেই প্রশ্ন উঠছে, আরজি কর নিয়ে আপোসহীন বিচার চাওয়াটাই কি শুদ্ধশীলের অপরাধ? যেমনটা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দেখতে পাওয়া গিয়েছে যে, বিচার চেয়ে সাধারণ মানুষের গনতান্ত্রিক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে রাজ্যের শাসক দল! যেনতেন প্রকারে স্তব্ধ করে দাও গনতন্ত্রের কন্ঠ। গোটা ঘটনায় প্রিয়বন্ধু মিডিয়ার কর্নধার আপোসহীন ইউটিউবার শুদ্ধশীল ঘোষের মতামত, “গতকাল আচমকাই বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘিরে ফেলে আমার বাড়ি। তাদের দাবি, ম্যাজিস্ট্রেটের অর্ডারে সার্চ করতে আসা হয়েছে, তাদের কাছে নাকি সার্চ ওয়ারেন্ট আছে। আমি যতক্ষণে লিগ্যাল অ্যাডভাইস নিচ্ছি, ততক্ষণে পুলিশ ভাঙতে শুরু করেছে বাড়ির দরজা। অবশেষে আইনজীবীর পরামর্শ মত দরজা খুলে দেওয়া হলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ এবং সমস্ত ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, এমনকি বাড়ির অত্যন্ত ব্যাক্তিগত সিসিটিভি ক্যামেরার স্টোরেজ পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করতে থাকে। দেওয়া হয়নি সিজার লিস্টের কোনো কপিও। কোনো বিষয়ে ক্রস কোয়েশ্চেন করলেই মেজাজ হারাচ্ছিলেন পুলিশ আধিকারিকগন।” এখন জনগনের প্রত্যক্ষ প্রশ্ন, বেছে বেছে কেন রবিবারেই এই সার্চ অপারেশন চালানো হলো? পেছনে কি আদালতে যেতে বাধা দেওয়ার মানসিকতা কাজ করেছিল? যে রাজ্যে ভোররাতে অভয়ার নৃশংস ধর্ষন এবং হত্যকাণ্ড হওয়ার অনেকগুলো ঘন্টা পড়ে দায়ের হয় এফআইআর, যে রাজ্যে গনতান্ত্রিক আন্দোলনে শাসক দলের নেতা কর্মীরা আক্রমণ করলে ঢিল ছোড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ চোখেই দেখতে পায় না, যে রাজ্যে নির্যাতিতারা বিচার পান না, সেই রাজ্যে একজন ইউটিউবারকে সার্চ করতে সূদূর কালনা থেকে এত কিলোমিটার পার করে কি করে এসে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী? এমনকি একই সাবজেক্ট ম্যাটারে রাজ্যের বিভিন্ন কোনায় এফআইআর করা হচ্ছে? নিন্দুকেরা বলছেন, আদালত বারবারই বলেছে, এই রাজ্যের কিছু ক্ষেত্রে একেবারেই নিস্ক্রিয়, কিছু ক্ষেত্রে আবার অতি সক্রিয়। আর মানুষের প্রশ্ন, এই সক্রিয়-নিস্ক্রিয়, শাসক-বিরোধী তকমা কাটিয়ে পুলিশ কবে নিজের পায়ে দাঁড়াবে? কবে হবে প্রকৃত গনতান্ত্রিক ভাবে তদন্ত এবং বিচার? রাস্তায় জমতে থাকা প্রত্যেকটি প্রতিবাদী আন্দোলনের ভিড় সমস্বরে একটাই দাবি জানাচ্ছে, পুলিশ তুমি পক্ষ ছাড়ো, আইন মেনে বিচার করো। শুদ্ধশীলের বাড়িতে পুলিশ অভিযানের সময়কার ভাইরাল CCTV ফুটেজ শুদ্ধশীলকে গ্রেপ্তারের ছক? সকাল সকাল ২০-২৫ জন পুলিশ বাড়ির দরজায়! শুদ্ধশীলের বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা পুলিশের, সব কিছুই প্রায় নিয়ে চলে গেলো! আপনার মতামত জানান -