এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > এবার মাদক পাচারকারীর সন্ধান মিলল ঘাসফুলের অন্দরে, বিপাকে শাসক দল

এবার মাদক পাচারকারীর সন্ধান মিলল ঘাসফুলের অন্দরে, বিপাকে শাসক দল


সামনেই আসছে পুরসভার নির্বাচন। রাজ্যের শাসক দল বিধানসভা নির্বাচনের আগেই পুরসভা নির্বাচনকে ঘিরে রীতিমতন ব্যস্ত। এবারের পুরসভার নির্বাচন তাঁদের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তারই মধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা তৃণমূল নেতৃত্বকে যথেষ্ট অস্বস্তির মুখোমুখি দাঁড় করাবে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। সম্প্রতি মালদা্র কালিয়াচক 1 গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের হাতে। ঘটনাটি সামনে আসার পরেই রাজনৈতিক মহলে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, বিরোধী দল এই ঘটনাকে তাঁদের হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছে ইতিমধ্যে ।

পুরো বিষয়টি মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এ নিয়ে খোঁজখবর শুরু করা হয় বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, জনপ্রতিনিধিরা যদি এভাবে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত হন তাহলে বড়ই চিন্তার বিষয় বলে মনে করছে জেলা পুলিশের কর্তারাও। পুলিশের দাবি, রাস্তাঘাটে যখন গাড়ি চেক করা হয় তখন জনপ্রতিনিধিদের গাড়ি কিছুটা ছাড় পায়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যদি কেউ মাদক পাচার করে, তাহলে পুলিশকে দোষীকে ধরার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়। তাই এবার পুলিশকর্তারা নতুন নিয়ম আনার পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা শুরু করেছেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধিরাও পুলিশের গাড়ি চেকিং এর আওতায় চলে আসবেন বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি কালিয়াচক-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ আমিরুদ্দিন গ্রেপ্তার হন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের হাতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মণিপুর থেকে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করত একটি চক্র। এই চক্রের সঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধানের যোগ আছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, এই ঘটনা সামনে আসার পরেই শাসক দলের নেতারাও চরম অস্বস্তিতে বলে জানা গেছে। ভবিষ্যতে যাতে অন্য কোনো জনপ্রতিনিধি এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত না হন সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে প্রত্যেককে। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল নেতা হেমন্ত শর্মা জানিয়েছেন, ‘বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত কাউকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। আইনের আওতায় ধৃত প্রধানের বিচার হবে। দল এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না। এধরনের ঘটনা কাম্য নয়।’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে মালদা জেলা পুলিশের এক আধিকারিক এর কথা থেকে জানা গেছে, কিছুদিন আগে ইংলিশবাজার শহরের একটি হোটেলে 60 লক্ষ টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট আটক করা হয়। এবং সেখান থেকে প্রায় 5 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জানা গেছে, ওই ট্যাবলেট মালদা হয়ে কলকাতায় এসেছে এবং ধৃতদের জেরা করেই উঠে আসে শেখ আমিরউদ্দিনের নাম। জানা যায়, এই মাদকদ্রব্য পাচার করতে গিয়ে যাতে কোনো রকম অসুবিধা না হয় তার সমস্ত ব্যবস্থা করে দিতেন উক্ত জনপ্রতিনিধি। উপরন্তু শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার পুরো ফায়দা তিনি নিতেন বলে মনে করা হচ্ছে। উপরন্তু জানা গেছে, এধরনের কাজ করে আমিরউদ্দিন মোটা টাকা দাবি করতেন।

অন্যদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মালদা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘কালিয়াচকের মতো বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উপদ্রুত এলাকার জনপ্রতিনিধি পাচারকাণ্ডে যুক্ত হয়ে পড়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এলাকার পাচারকারীদের ব্যাপারে তথ্য জোগাড়ের ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময় স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানদের সহায়তা নিয়ে থাকি। সেখানে খোদ প্রধানের পাচারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি সমাজের পক্ষে ভয়ানক। আমাদেরও কাজে সমস্যা হবে।’

তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে আর কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যে পুরসভা নির্বাচন। আর তার আগে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের ভাবমূর্তি জনসমক্ষে কিছুটা হলেও ক্ষুন্ন হলো। অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, তৃণমূলের ভেতরের এই ধরনের লোকজন যদি থাকে তাহলে তৃণমূলের ভাবমূর্তি প্রতিনিয়ত ক্ষুন্ন হবে জনমানসে। এদিকে বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে এই ঘটনার উল্লেখ করে দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলের অন্দরে এধরনের অপরাধী খুঁজলে আরো পাওয়া যাবে। আপাতত পুরো পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছে প্রশাসন।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!