এবার মমতার সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপির অস্বস্তি বাড়ালেন নেত্রী জাতীয় December 7, 2019 ভারতে শুক্রবার ভোররাতে তেলেঙ্গানা এনকাউন্টারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশজুড়ে প্রশংসার বন্যা। তবে এভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি গত 27 নভেম্বর সামসাবাদ টোল প্লাজার কাছে পশুচিকিৎসক তরুণী প্রিয়াঙ্কার রেড্ডিকে ধর্ষণ করে তাঁকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে ওই চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর দুদিনের মধ্যে পুলিশ 4 অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। গোটা দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। ঘটনার ভয়াবহতায় স্তম্ভিত হয়ে যায় গোটা দেশ। আর এদিন ওই এনকাউন্টারে অভিযুক্তরা মারা যাওয়ায় গোটা দেশ এদিন পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিরা ভিন্ন সুরে নিজেদের বক্তব্য পেশ করলেন এই এনকাউন্টারের বিরুদ্ধে। এদিন সকালে পুলিশ 4 অভিযুক্তকে দিয়ে পুনরায় ঘটনার পুনঃ নির্মাণ করার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু সেখানে পুলিশি হেফাজত থেকে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা চালায়, এবং সাথে পুলিশকে আক্রমণ করে তাঁরা। ফলে তাঁদের এনকাউন্টার করা হয়। এই এনকাউন্টার নিয়েই এবার দেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা তাঁদের বক্তব্য পেশ করতে শুরু করেছেন। আইন হাতে তুলে নেওয়ায় পুলিশের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিরা। এর মধ্যে যেমন আছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেরকমই ছিলেন বিজেপি সাংসদ মানেকা গান্ধী। এদিন কলকাতায় তেলেঙ্গানা এনকাউন্টার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আইন হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়।’ এর পরেই তিনি দাবি জানিয়েছেন, অপরাধীদের কড়া শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার আর তার জন্য দরকার দ্রুত চার্জশিট গঠন। এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ হিসেবে মালদার ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। উল্লেখ করেছেন, উন্নাওঁয়ের নির্যাতিতার প্রসঙ্গটি। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় শাসককে প্রশ্ন করেছেন উন্নাওঁয়ের নির্যাতিতা কেন কোনো নিরাপত্তা পাননি? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে বিজেপি সাংসদ মানেকা গান্ধীও পুলিশের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। তিনি প্রসঙ্গ উত্তাপন করে জানিয়েছেন, কোনোমতেই আইন হাতে তোলা উচিত নয়। রীতিমতো তীব্র বিরোধিতা করেছেন তিনি এই এনকাউন্টারের। এ প্রসঙ্গে মানেকা গান্ধী বলেছেন, ‘কাউকে মারতে চাওয়ার ইচ্ছে থেকেই কাউকে হত্যা করা উচিত নয়। এটা দেশের জন্য ভয়ানক। তেলেঙ্গানার অভিযুক্তরা হয়তো আদালতের আইনের শাস্তি পেতে পারত।’ এ প্রসঙ্গে এদিন মুখ খুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি এদিন তেলেঙ্গানা এনকাউন্টারের বিরুদ্ধে গিয়ে বলেছেন ‘আইনে ভরসা নেই মানুষের। এটা অত্যন্ত আতঙ্কের বিষয়।’ অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ভি পরিষ্কার বলেছেন, মানবাধিকারের বিতর্ককে কিছুটা দূরে সরিয়েই যুক্তির ওপর আবেগকে স্থান দিতে হয় কখনও কখনও। দেশের মানুষের আবেগও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে যায় এক্ষেত্রে। কারণ দেশ মানুষের। অন্যদিকে সূত্রের খবর, পুলিশ এনকাউন্টারে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযুক্তদের নিহত হওয়ার ঘটনায় এদিন সাতসকালে প্রিয়াঙ্কার বাবা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁর মতে এই ঘটনার পর তাঁর মেয়ের আত্মা শান্তি পেল। এদিকে এনকাউন্টারের ঘটনা সামনে আসতেই দেশজুড়ে পুলিশের জন্য প্রশংসার বান বয়ে আসে। এদিন পুলিশকে লক্ষ্য করে পুষ্প বৃষ্টি হয়েছে সব জায়গায়। সারা দেশজুড়ে তেলেঙ্গানা পুলিশের পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি সামনে আসার পরেই দেশজুড়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ফাঁসির দাবি ওঠে। তবে এদিন ফাঁসি না হলেও পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় ওই চার অভিযুক্তের। রাজনৈতিক চাপানউতোর চললেও তেলেঙ্গানার এনকাউন্টার দেশের আপামর জনগণের কাছে হিরোইক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আপনার মতামত জানান -