এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ফের বিজেপির অস্বস্তি বাড়ালো চন্দ্র বসু, জেনে নিন কি করলেন এবার তিনি

ফের বিজেপির অস্বস্তি বাড়ালো চন্দ্র বসু, জেনে নিন কি করলেন এবার তিনি


সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ও জাতীয় জনগণনা পঞ্জি নিয়ে ইতিমধ্যে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। মানুষের ক্ষোভ ক্রমশ আগ্নেয়গিরির আকার ধারণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গও পিছিয়ে নেই। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে কলকাতার রাজপথে বিরোধী মিছিলে পা মিলিয়েছেন। গর্জে উঠেছেন মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, সম্প্রতি রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ একটি দলীয় সভা থেকে এনআরসি সংক্রান্ত এমন একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। রাজ্য রাজনীতির এই অস্থির সময়ে এবার মন্তব্য রাখলেন দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর বংশধর চন্দ্র বসু।

এদিন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে চন্দ্র বসু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কোনভাবেই কারোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না বরং মানুষকে এই আইন সম্পর্কে বোঝাতে হবে। ধর্মের সাথে এই আইনের যে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই তা মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে বোঝাবার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বলতে গিয়ে চন্দ্র বসু বলেন, ‘আমি আমার দলের নেতৃত্বকে পরামর্শ দিয়েছি, নাগরিকত্ব আইনে সামান্য পরিবর্তন করলেই বিরোধীদের বিক্ষোভ বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের নির্দিষ্ট করে বলা উচিত, নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের জন্য এই আইন করা হয়েছে। কোনও ধর্মের কথা উল্লেখ করা উচিত নয়। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত আলাদা।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কাজ হল মানুষকে বুঝিয়ে বলা, আমরা যা বলছি, তা ঠিক। বিরোধীরা ভুল বলছে। আমাদের উদ্ধত হওয়া উচিত নয়। সংসদে আমাদের অনেক এমপি আছেন বলেই আমরা কাউকে ভয় দেখাতে পারি না। তার চেয়ে আমাদের মানুষকে বুঝিয়ে বলা উচিত, এনআরসি হলে তাঁদের কী লাভ হবে।’ তবে চন্দ্র ঘোষের মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, সম্প্রতি দিলীপ ঘোষ যেভাবে প্রতিনিয়ত বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন, চন্দ্র বোস এদিন সে ব্যাপারেই সতর্ক করলেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বেশ কিছুদিন ধরেই এনআরসি এবং সিএএ এর বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন। সম্প্রতি রবিবার উত্তর 24 পরগনার একটি দলীয় জনসভা থেকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ বাবু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন,’৫০ লক্ষ মুসলিম অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দরকার হলে তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।’ এবং এই মন্তব্যের পর আবারো রাজনৈতিক মহলে চূড়ান্ত সমালোচনা শুরু হয়েছে দিলীপ ঘোষকে নিয়ে। এরআগেও বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও দিলীপ ঘোষের মন্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

গত পয়লা ডিসেম্বর সংসদের নাগরিকত্ব আইন পাস হয়। এই নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে প্রতিবেশী দেশ থেকে যেসব নাগরিকরা ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে দেশ ছেড়েছেন, তাঁদের এদেশে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের পরেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত বিক্ষোভ। আন্দোলন বাড়তে বাড়তে ক্রমশ হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। উত্তরপ্রদেশে এই হিংসাত্মক আন্দোলন থামাতে গিয়ে উত্তর প্রদেশে পুলিশ গুলি চালায় আর সেই গুলিতে অন্তত কুড়ি জন মারা যান। অবশ্য পুলিশের দাবি মাত্র একজন ব্যক্তি তাঁদের গুলিতে মারা গেছে।

বিগত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত দেশের রাজনীতি। নাগরিকত্ব ইস্যুতে দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়েছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। দেশের বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এনআরসি নিয়ে যেভাবে সারাদেশে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে, তা সামাল দিতে বিজেপি সরকারকে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য দেশের শান্তি বজায় রাখার অনুকূল নয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আপাতত দেশের এবং রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিতে চলেছে নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন্দ্র করে, সেদিকে লক্ষ্য থাকবে দেশের আপামর জনগণের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!