এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এবার প্রশান্ত কিশোরের কাছে বড়সড় আবদার নিয়ে হাজির তৃণমূল কর্মীসমর্থকদের

এবার প্রশান্ত কিশোরের কাছে বড়সড় আবদার নিয়ে হাজির তৃণমূল কর্মীসমর্থকদের

2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কোনোরকমে নিজেদের ঘর বাঁচায়। পরিস্থিতি বিচার করে এবং আগামী দিনের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশান্ত কিশোরের শরণাপন্ন হন। ইতিমধ্যে গত নভেম্বরে হয়ে যাওয়া উপনির্বাচনে রাজ্যের তিনটি জেলা যথাক্রমে খড়গপুর, করিমপুর ও কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল জয়লাভ করে প্রাশান্ত কিশোরের পরামর্শে। প্রথম পরীক্ষায় পাশ করলেও এবার আগামীদিনের বিধানসভা ভোট ও তার আগে হওয়া পুরভোটের দিকে তাকিয়ে প্রশান্ত কিশোর নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তবে এবার তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের নতুন আবদার প্রশান্ত কিশোরের কাছে।

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূলের ভোট কৌঁশলী হিসেবে কাজ করছেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু দলের নিচু স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে থেকে একটি বার্তা ঘুরে ফিরে আসে। তাঁদের সাথে পিকের দূরত্ব এখনো কমেনি। এবার সেই দূরত্ব কমাতে তৃণমূল স্তরেও প্রশান্ত কিশোরকে পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তৃণমূল দল। ইতিমধ্যে দলীয় নানা কর্মসূচিতে পিকের পরামর্শকে পাথেয় করে শীর্ষ নেতৃত্ব এগিয়ে চলেছে। এবার সেই পর্বেই দলীয় ছোট বৈঠকে প্রশান্ত কিশোরকে এগিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে।

এবার থেকে প্রশান্ত কিশোরকে সমস্ত বৈঠকে সামনে রাখা হবে। তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন। বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করবেন তিনি। প্রয়োজনে দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেবেন এবং পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন দলীয় নেতৃত্ব তাঁর পাশে থাকবেন বলে জানা গেছে। তৃণমূল সংগঠনে প্রত্যেক সপ্তাহে জেলাওয়ারি বৈঠক করা হচ্ছে। সেই বৈঠকে এতদিন প্রশান্ত কিশোর নিরপেক্ষ ভূমিকায় ছিলেন। কখনো তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে প্রশান্ত কিশোর থাকতেন। নানান কথা-বার্তা তিনি মন দিয়ে শুনে সেখান থেকে বিদায় নিয়েছেন।

তবে সদ্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি নিয়ে সরাসরি কেন্দ্রের বিরোধিতায় রাজনৈতিক আন্দোলনে সামিল হয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। শুধু তাই নয়, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও স্বর চড়িয়েছেন জেডিইউ-এর এই নেতা। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি নিয়ে পাঞ্জাব, কেরল, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গ সরাসরিভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করলেও অন্য কোন রাজ্য এখনো পরিষ্কারভাবে তাঁদের মতামত প্রকাশ করেনি। তবে এনআরসি ইস্যুতে ইতিমধ্যে রাজ্য তৃণমূল রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে আন্দোলনের পথে নেমেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে দলের স্তরের কর্মীদের মধ্যে নানান অভিমান দেখা যাচ্ছে। শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে সেকথাও পৌঁছেছে। শোনা যাচ্ছে, প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল দলের পরামর্শদাতা হয়েও সরাসরি তিনি কারো সাথেই কথা বলেন না। অন্যদিকে, একাধিক জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্বকে যে ‘তৃণমূল স্তরে তথ্য পাওয়া যাবে তৃণমূল স্তরে মেলামেশা করলেই। সেই কাজটাও প্রশান্ত কিশোর করছেন তাঁর টিম নামিয়ে। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে যেভাবে তিনি দলকে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন, সেভাবেই নিচু স্তরের নেতা-কর্মীরাও চান যে তাঁদের থেকে তিনি তথ্য নিন।’

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নীচুতলার কর্মীদের মনোভাব পৌঁছানোর পরে দলীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রশান্ত কিশোরকে এবার সামনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে প্রশান্তকে সামনে এগিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। দলীয় বৈঠকে প্রশান্ত সকলের সঙ্গে কথা বলছেন। প্রয়োজনীয় তথ্য নিচ্ছেন। দরকারমতো পরামর্শ দিচ্ছেন।’ সদ্যসমাপ্ত কয়েকটি বৈঠকে গিয়ে পিকেও এই ধরনের কথাই বলেছেন।

তবে তৃণমূল নেতৃত্বের কথায় ‘তাতে বেশ লাভই হচ্ছে। সকলে বাড়তি আগ্রহ নিয়ে প্রশান্তর সঙ্গে কথা বলতে চাইছে। তাঁকে তথ্য দিতে চাইছে। সরাসরি দলকে কোনও গোপন তথ্য দিতে অনেকেরই অনেক সময় সমস্যা থাকে। অনেকে সংশয়েও থাকেন। সেক্ষেত্রে অনেক জায়গায় বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে পি কে—কে সেই কথা বলার ক্ষেত্রে।’ তবে এ প্রসঙ্গে দলের এক রাজ্য নেতা জানিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর ফ্রন্ট ফুটে আসার ফলে দলেরই লাভ হয়েছে। কারণ সামনে পুরভোট এবং তার পরের বছর বিধানসভা ভোট। কোনভাবে যদি নিচু স্তরের কর্মীদের সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বের কোনরকম দূরত্ব তৈরি হয়, তাহলে এই পথে সহজেই তা মিটবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রশান্ত কিশোরের ম্যাজিক কাজ করেছে। সে কারণে তৃণমূল নেতৃত্ব এবার রাজনৈতিক ময়দানে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য কোমর বেঁধে নেমেছে। আপাতত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা নজর রাখবেন, কিভাবে রাজ্যের শাসক দল সাবধানী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে প্রশান্ত কিশোরের কথা অনুযায়ী নির্বাচনে জয়লাভ করেন। সামনের পুরভোট এবং বিধানসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোর তার ম্যাজিক দেখাতে পারেন কিনা সে দিকেই নজর রাখবে এবার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকগণ।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!