এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত খোদ শাসকদলের কর্মী, চরম অস্বস্তিতে শাসক দল

প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত খোদ শাসকদলের কর্মী, চরম অস্বস্তিতে শাসক দল

একটি প্রচলিত প্রবাদ হলো ‘বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা’। কথাটি আদ্যোপান্ত সত্যি প্রমাণিত হলো এবার পুরুলিয়া শহরে। তৃণমূল সরকার যেখানে কোনরকম টাকা পয়সা নেওয়া অর্থাৎ কাটমানি গ্রহণের ওপর প্রবল নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সেখানে এবার প্রতারণার অভিযোগ উঠে এল খোদ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সূত্রের খবর, চাকরি দেওয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী। তবে এই প্রতারণা করতে ঐ তৃণমূল কর্মীর সঙ্গী হয়ে ওঠেন আরও একজন। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই এবার বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও তীব্র কটাক্ষ করা শুরু হয়েছে শাসকদলকে।

সম্প্রতি পুরুলিয়া শহরে গ্রেপ্তার হয়েছেন এক তৃণমূল কর্মীসহ দু’জন। অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁরা প্রায় 50 লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া শহরে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করে দেশবন্ধু রোড থেকে উষারঞ্জন পতিতুণ্ড নামে এক ব্যক্তিকে। জানা যাচ্ছে, এই উষারঞ্জন পতিতুণ্ড এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। পুলিশ আরেক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে, যার নাম বেণীমাধব কুমার। সূত্রের খবর, এই অভিযুক্ত আরশা থানার জামবাদ গ্রামে বাস করেন। পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, এই বেণীমাধব কুমার নিজেকে সরকারি কর্মচারীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাঁদের সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রতিশ্রুতি রাখতে নিজে ঠিকাদার পেশার থাকার সূত্রে বেশ কিছু ব্যক্তিকে নির্মল বাংলা মিশনে কাজ দেয়। ফলে মানুষের বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি সে অর্জন করে।

প্রতারণার ঘটনাটি সামনে আসে যখন পুরুলিয়ার মফস্বল এলাকার বাসিন্দা সহদেব মাহাতো সহ 47 জনের কাছ থেকে ঊষারঞ্জন পতিতুণ্ড এবং বেনীমাধব প্রায় 50 লক্ষ টাকা আদায় করে। যথারীতি এত পরিমাণ টাকা নিয়েও তাঁরা সরকারি চাকরি জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহের তীর এই দুজনের দিকে এসে পরে এবং পরবর্তীতে সহদেব মাহাতো সহ অন্যান্যরা পুরুলিয়া সদর থানায় উক্ত দুজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ আসরে নেমে প্রথমেই জামবাদ গ্রাম থেকে বেনীমাধব কুমারকে গ্রেপ্তার করে। আর তাঁকে গ্রেপ্তার করে খবর পাওয়া যায়, উষারঞ্জনের। তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পুলিশি সূত্রে জানা গেছে, উষারঞ্জন এর বাড়ি খানা তল্লাশি চালিয়ে প্রায় 9 লাখ 91 হাজার টাকা হাতে হাতে মিলেছে। ধৃতদের পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর তাঁদের আদালতে তোলা হয়। আদালতের নির্দেশে তাঁদের তিনদিন পুলিশি হেফাজত হয়েছে বলে জানা গেছে। অবশ্য তৃণমূল নেতৃত্ব এই দুই প্রতারক এর সঙ্গে দলের যোগাযোগ থাকার কথা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা কমিটির নেতা হলধর মাহাত জানিয়েছেন, ‘ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই।’ তবে তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব এই প্রতারকদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক অস্বীকার করলেও এলাকার জনগণ কিন্তু অন্য কথা বলছে।

এই প্রতারণার ঘটনা সামনে আসতেই যেভাবে তৃণমূলের দলীয় অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, ঠিক সেভাবেই বিরোধী শিবিরেও শুরু হয়েছে শাসকদলের তীব্র সমালোচনা। অন্যদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, তৃণমূল নেতৃত্ব বারংবার নিজেদের ছবি জনমানসে পরিষ্কার রাখার কথা বললেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে যে তাঁর কথা মানা হচ্ছেনা তা এদিনের ঘটনা থেকে স্পষ্ট। তবে পুরসভার নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনা যে দলকে আরো বিপাকে ফেলবে, সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ না রাখাই ভালো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আপাতত এই প্রতারণার ঘটনা সামনে আসার ফলে শাসকদল যে চরম অস্বস্তির মুখে পড়ল সে কথা অনস্বীকার্য বলেই মনে করা হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!