এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবে তৃণমূল, সংবিধান চোষে ফেলছে ঘাসফুল শিবির

এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবে তৃণমূল, সংবিধান চোষে ফেলছে ঘাসফুল শিবির


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের আমলে যতটা অস্বস্তির কারণ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল, তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূলের কাছে তার থেকে বেশি অনেক অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। আইন-শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে নারদাকান্ডে রাজ্যের মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার, এমনকি কেন্দ্রের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে রিপোর্ট পাঠানো, সবদিক থেকেই তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসা তৃণমূল সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার।

প্রতিমুহূর্তে সরকারের সঙ্গে তার দ্বৈরথ তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে এখন রাজ্যপালের অপসারণের জন্য কার্যত উঠেপড়ে লেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যেনতেন প্রকারেণ রাজ্যপাল কোনো একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছে, এই বিষয়টি বোঝাতে তৎপরতা গ্রহণ করেছে তারা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে শাসক দল। তবে সত্যিই কি রাজ্যপালের অপসারণ করা সম্ভব তৃণমূলের পক্ষে?

তা নিয়ে লাখ টাকার প্রশ্ন থাকলেও, সংবিধানের নানা দিক এবং খুটিনাটি বিষয় এখন থেকেই রপ্ত করতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতারা। কোন বিষয়কে হাতিয়ার করে রাজ্যপাল হিসেবে জাগদীপ ধনকারকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরানো যায়, তা নিয়ে চেষ্টার কমতি নেই তৃণমূল নেতা নেত্রীদের। জানা গেছে, ইতিমধ্যেই তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। যে বিষয়কে হাতিয়ার করে রাজ্যপালকে সরানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে তারা।

বস্তুত, রাজ্যপালকে অপসারণ করতে গেলে তার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব আনতে হয়। যাকে সাবস্টেনটিভ বলে অভিহিত করেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই রাজ্যসভা এবং লোকসভার বিভিন্ন রুল বুক খতিয়ে দেখে তার নজরে এসেছে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের। আর এই বিষয়টি নিয়েই এখন চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে ঘাসফুল শিবির।

অন্যদিকে বিকল্প পন্থা হিসেবে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মূলত সংসদের উচ্চকক্ষ বা নিম্নকক্ষে এই প্রস্তাব আনা যায়। তবে তা নিয়ে আদৌ আলোচনা হবে কিনা, অধ্যক্ষের উপর নির্ভর করছে। সেদিক থেকে এই বিষয় নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা রয়েছে বলেই মনে করছেন একাংশ।

তাহলে রাজ্যপালকে সরানোর ব্যাপারে তারা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা কি বাস্তবে ফলপ্রসূ হবে? এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “আমি রাজ্যপাল বলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আমাকে যা খুশি করার অধিকার দেয়নি। আমি সবকিছুর ঊর্ধ্বে, ব্যাপারটা এমন নয়। আইন ও সংবিধান সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তাই আইন ও সংবিধান মেনে চলতে সাংবিধানিক পক্ষগুলো দায়বদ্ধ। এর অন্যথা হলে গণতান্ত্রিকভাবে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হবে। সমালোচনা হবে। তাই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক পদক্ষেপ নেওয়াই যায়।”

তবে একাংশ বলছেন, সংবিধান ঘেঁটেঘুঁটেও তৃণমূল কার্যত হাঁপিয়ে উঠেছে। রাজ্যপাল নিয়োগ করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রে যখন যে দল থাকে, তখন তারা তাদের পছন্দমত ব্যক্তিকে বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনকরের মেয়াদ রয়েছে 2024 সাল পর্যন্ত। কিন্তু এখন যেভাবে জাগদীপ ধনকার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, তাতে তৃণমূলের বিড়ম্বনা ক্রমশ বাড়ছে।

তাই এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি তৃণমূলের বিড়ম্বনা কমিয়ে দিয়ে শাসকদলের এই আপত্তি এবং সংবিধানের এই বিষয়গুলোকে গ্রাহ্য করে জাগদীপ ধনকারের অপসারণ আদৌ কতটা মেনে নেবেন, তা নিয়ে একটা সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

পাশাপাশি এই ব্যাপারে সংবিধানে যে নিয়মই থাকুক না কেন, তার জন্য সংসদের উচ্চকক্ষ বা নিম্নকক্ষের সায় লাগবে। সেক্ষেত্রে লোকসভা ও রাজ্যসভার অধ্যক্ষ তৃণমূলের পক্ষ থেকে আনা রাজ্যপালের অপসারণে সায় দেবেন না বলেই মনে করছেন একাংশ। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!