এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এবার রাজ্যপালকে অসম্মান ইস্যুতে তৃণমূলের চাপ বাড়িয়ে মাঠে নামলেন হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা

এবার রাজ্যপালকে অসম্মান ইস্যুতে তৃণমূলের চাপ বাড়িয়ে মাঠে নামলেন হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল ও রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। শাসকদলের বহু কাজের প্রতিবাদ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র নিগ্রহের ঘটনায় রাজ্যপাল চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন শাসক দলের প্রতি। এর আগেও বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এর উপর হয়ে যাওয়া হামলার ঘটনায় এ রাজ্যে প্রশাসকের ভূমিকা নিয়ে রাজ্যপাল প্রশ্ন তুলেছিলেন।

এবার নতুন করে রাজ্যের শাসক দল ও রাজ্যপাল এর মধ্যে আবার বিরোধ লাগলো। রাজ্যপাল অভিযোগ জানিয়েছেন, দুর্গাপূজার কার্নিভালে ডেকে তাঁকে রীতিমত অপমান করা হয়েছে প্রকাশ্যে। এই ঘটনায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।

রাজ্যপালের পক্ষে প্রথম থেকেই বিজেপি দাঁড়িয়েছিল। এবার বিজেপির পাশে কার্নিভাল ইস্যুতে প্রদেশ কংগ্রেসও এসে দাঁড়ালো। সভাপতি সোমেন মিত্র একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানান, ‘দূর্গা পূজা কার্নিভালে রাজ্যপাল অপমানিত হয়েছেন বলে সেই কথা আজ সংবাদ মাধ্যমে তিনি নিজেই বলেছেন।’

প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপাল একটি সম্মানীয় পদ অলংকৃত করেন। ব্যক্তি হিসেবে তাঁর কাজ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে কিন্তু তাঁর আসনের অসম্মান সংবিধানকেই অসম্মানিত করা। রাজ্যপাল যদি অপমানিত হয়ে থাকেন, তবে এটি অত্যন্ত দুঃখের এবং লজ্জার ঘটনা।’ ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কার্নিভালে ডেকে ‘সেন্সর’ ও ‘ব্ল্যাক আউট’ এর অভিযোগে রাজ্যপাল তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে, শাসক মহল থেকে রাজ্যপালের তরফ থেকে ওঠা অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। শাসক দলের দাবি, রাজ্যপালকে সম্মান দিতে তাঁরা পৃথক মঞ্চ করেছিলেন তাঁর বসার জন্য। সেখানে অন্যান্য বিদেশী নাগরিকরাও আসন গ্রহণ করেছিলেন। গত 11 ই অক্টোবর রেড রোডে দুর্গাপূজা উপলক্ষে কার্নিভালের আয়োজন করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। সেখানে দেখা গিয়েছিল মূলমঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সরকারি আমলা থেকে শুরু করে টেলি জগতের বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা মঞ্চে রয়েছেন। কিন্তু রাজ্যপালের জন্য আলাদা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই ঘটনায় রাজ্যপাল মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের প্রথম নাগরিককে যেভাবে আলাদা করে বসিয়ে কোণঠাসা করা হলো তা দুঃখজনক শুধু নয়, লজ্জাজনকও বটে। তাঁর কথায়, আমাকে এমন জায়গায় বসতে দেওয়া হয়েছিল যে কার্নিভালের অনুষ্ঠানই আমি দেখতে পাইনি। সামনে কুড়ি বাইশ জন লোক ব্লক করে বসেছিলেন। আমাকে অনেকবার আসন বদলাতে হয় ভালো করে অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য। তাঁর প্রশ্ন, এটা কি সৌজন্য?’

রাজ্যপালের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিধানসভার মুখ্য সচেতক তাপস রায় জানান, ‘ছিঃ ছিঃ ছিঃ! রাজ্যপাল যদি একথা বলে থাকেন তাহলে খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ওনাকে সম্মান দিতেই পৃথক মঞ্চ গড়ে তাঁকে উৎসর্গ করা হয়েছিল। আমি জানিনা উনি কি চাইছেন! কেন এরকম বলছেন!’

রাজ্যপালের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথম থেকেই রাজ্যপালের পাশে থেকেছে রাজ্য বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন, ‘রাজ্যপাল ঠিক কথাই বলেছেন। অপাংক্তেয় রেখে অপমান করা হয়েছে। উনি যাতে লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকেন সে কারণেই আলাদা জায়গায় বসানো হয়েছিল তাঁকে। সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে এটা অপমানজনক। সেটাই উনি বলেছেন। উনি সত‍্য কথাই বলেছেন। আর তাই হয়তো সরকারের কাছে উনি অস্বস্তিকর।’

এই ঘটনায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রাজ্যপাল হলেন আমাদের রাজ্যের মহানাগরিক। তাই তাঁকে অপমান করা মানে রাজ্যবাসীকে অপমান করা। যদি সত্যিই শাসক শিবির এটা করেন, তাহলে পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে তাঁরা অনেকটাই নিচে নেমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে বিরোধীদলের দাবি, শাসক শিবির ইচ্ছাকৃতভাবে এই অপমান করেছেন রাজ্যপালকে, যা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে মুখ খোলাতেই রাজ্যপালের সাথে এই দুর্ব্যবহার করলো শাসকদল। রাজ্যবাসীর সামনে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত শাসক শিবিরের পক্ষ থেকে অনুশোচনা মূলক কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে সম্পূর্ণ ঘটনার দিকে নজর আছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!