এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সামনে বড় সুযোগ এনে দিচ্ছে সরকার, প্রস্ততি তুঙ্গে পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া রাজ্য February 28, 2020 নামজাদা কর্পোরেট সংস্থার যেভাবে অনলাইন মার্কেট এর মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে, ঠিক সেভাবেই এবার পাল্লা দিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য বিপণন করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে বহু মানুষ নিজেরাই শিল্প সামগ্রী তৈরি করে সেই শিল্প সামগ্রী এবার বিপণনের হাত ধরে সারা বিশ্বের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। তবে এক্ষেত্রে গভমেন্টের ই মার্কেট এর মাধ্যমেই এই হস্তশিল্পসামগ্রী বিক্রি হবে বলে জানা গেছে। মোটের ওপর বলা যায়, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হস্তশিল্প এভাবে বিক্রির ফলে যথেষ্ট ভাবে উপকৃত হবে গোষ্ঠীগুলি। তবে উল্লেখ্য ব্যক্তিগতভাবেও এখানে দ্রব্য বিক্রয় করা যাব। সরকারের তরফ থেকে এবার গভরমেন্টের ই মার্কেটের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উৎপাদিত শিল্পকর্ম অনলাইনে বিক্রি করার পরিকল্পনা চলছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী 27 মার্চ দিল্লিতে এই গভরমেন্ট ই মার্কেটের উদ্বোধন হবে। যে শিল্পকর্মগুলি এইখানে স্থান পাবে সেগুলি হল- হ্যান্ডিক্রাফট, হ্যান্ডলুম, টেক্সটাইলস, গ্রোসারি ও প্যান্ট্রি, অফিস সামগ্রী এবং পার্সোনাল কেয়ার এন্ড হাইজিন। সূত্রের খবর, এই পাঁচটি ক্যাটাগরিতে এরাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও স্থান পেতে চলেছে। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি জেলা থেকে কমপক্ষে যাতে দশটি করে প্রোডাক্ট মার্কেটে পৌঁছায় সে চেষ্টা করা হবে। এর মধ্যে পাঁচটি প্রডাক্ট হতে হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করা এবং বাকি পাঁচটি প্রডাক্ট হতে হবে দলগতভাবে তৈরি করা। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ই মার্কেটে পৌঁছানোর দ্রব্যসামগ্রী ঝাড়াই-বাছাই করার কাজ শুরু হয়েছে। অবশ্য এ প্রসঙ্গে ডিআরডিসি বাঁকুড়া জেলা আধিকারিক পার্থপ্রতিম সাধুখাঁ জানিয়েছেন, ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি হস্তশিল্প সামগ্রী অনলাইনে বিক্রির জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে উদ্যোগ হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত এনিয়ে বিস্তারিত নির্দেশ পাইনি।’ বর্তমানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি বিভিন্ন শিল্প সামগ্রী বিভিন্ন মেলায় বিক্রি হয়। তবে আগামী দিনে ই-মার্কেট চালু হলে এইসব স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি হস্তশিল্প সামগ্রী অনলাইনে বিক্রি হবে এবং ঘরে বসেই তা কেনা যাবে। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া জেলায় এখনো পর্যন্ত মোট 37 হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে যাদের মধ্যে যুক্ত আছে চার লক্ষ কুড়ি হাজার মহিলা সদস্য। তাঁদের মধ্যে অনেকেই মনোনিবেশ করেছে চাষবাস এবং পশু পালনের উপর। তবে বেশ কিছু গোষ্ঠী হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে। বাঁকুড়ায় পোড়ামাটির গয়না, টেরাকোটা, শালপাতা, বাঁশ ও বেতের দ্বারা তৈরি শিল্পকর্ম দেখা যায়। বেশিরভাগ সময় এইসব গোষ্ঠীর সদস্যরা সরকারি খরচে বিভিন্ন মেলায় যান জিনিস বিক্রি করতে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কিন্তু শীত ছাড়া বাকি সময় তাঁরা বাড়িতেই থাকেন। সে সময় কাজ করার কোনো সুযোগ থাকে না। অর্থাৎ পয়সা ইনকামের রাস্তাও বন্ধ। অন্যদিকে বাকি সময় তাঁদের মেলা না থাকার দরুণ অনেক ক্ষেত্রেই কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। তাই এবার নতুন উদ্যোগের ফলে অনলাইনে যাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির শিল্পকর্ম বিক্রি হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অনলাইনে হস্তশিল্প বিক্রির মধ্য দিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও যাতে নিজেদের শিল্পকর্ম নিয়ে হাজির হতে পারেন সেদিকে নজর দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে সারাদেশেই হাতের মুঠোয় পৃথিবী। প্রায় সমস্ত জিনিস অনলাইনের মাধ্যমেই এখন বাড়ি চলে আসে। যে কারণে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর শিল্পকর্মগুলি বিক্রি করার জন্য সরকার এবার নিজস্ব প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অনলাইনে যাতে ঘরে বসেই এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর শিল্পকর্মগুলি হাতে পাওয়া যায় তার জন্যই গভরমেন্টের ই মার্কেট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে অনলাইনে বিক্রির সুযোগ পেয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি যারপরনাই খুশি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিষ্ণুপুরের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা জানিয়েছেন, ‘আমরা মাটির গয়না তৈরি করি। তা স্থানীয় বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করি। সরকারি খরচে বাইরেও বিভিন্ন মেলায় স্টল বসানোর সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়। সেখানে যাই। তবে বর্তমানে অনলাইনে সবধরনের জিনিস কেনাটাকায় মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। কিন্তু, আমাদের পক্ষে কোনও সুযোগ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে সেই ব্যবস্থা করলে আমরা খুব উপকৃত হব।’ সোনামুখীর একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য রীনা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘অনলাইনে বিক্রি করার সুযোগ পেলে খুবই সুবিধা হবে।’ আপাতত সরকারের তৈরি অনলাইন বাজারে শিল্পকর্ম বিক্রি হওয়ার সুযোগ পেয়ে স্বভাবতই নিজেদের খুশি ব্যক্ত করেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। অন্যদিকে, প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলারা যারা নিখুঁত শিল্পকর্ম সৃষ্টি করেন তাঁরাও নিজেদের শিল্পকর্মকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারবেন জেনে যথেষ্টই খুশি প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে সরকারি উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন হস্তশিল্প বিশারদরা। তাঁদের মতে, সরকার এবার এমন একটি সুযোগ দিতে চলেছেন, যার ফলে গরিব সাধারণ মানুষগুলি, যাদের একমাত্র সম্বল তাঁদের শিল্পকর্ম- সেগুলি এবার উপযুক্ত স্থানে উপযুক্ত মূল্যে বিক্রি হবে। যার ফলে যথেষ্ট সুবিধা পাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। আপনার মতামত জানান -