এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এবার তৃণমূলের কথার প্রতিধ্বনি গেরুয়া বৈঠকে, কার্যত বহিরাগত তত্ত্বকেই হারের কারণ বলে ব্যাখ্যা

এবার তৃণমূলের কথার প্রতিধ্বনি গেরুয়া বৈঠকে, কার্যত বহিরাগত তত্ত্বকেই হারের কারণ বলে ব্যাখ্যা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গেরুয়া শিবিরে যে এই মুহূর্তে ভাঙনের চোরা স্রোত বইছে সেকথা এককথায় মেনে নিচ্ছেন রাজনীতির কারবারিরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর থেকে জায়গায় জায়গায় নিচুতলার কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। পাশাপাশি দলে প্রথম থেকেই আদি ও নব্য নেতাদের মধ্যে ক্রমান্বয়ে মতান্তর ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে আগামীকাল হেস্টিংসে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে আর সেই বৈঠকেই গেরুয়া শিবিরের এক একটি খুঁত এক একজন নেতা তুলে ধরেছেন। আর সেখানেই যেন তৃণমূলের দীর্ঘদিনের তত্ত্র প্রতিধ্বনি। অর্থাৎ বহিরাগত প্রসঙ্গ শোনা গেল। তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ভোটপ্রচারে বহিরাগত তত্ত্ব নিয়ে সরব হয়েছিল।

আর এবার গতকাল বৈঠকে গেরুয়া শিবিরের বহু নেতাই বহিরাগত তত্ত্ব  নিয়ে সরব হলেন। পাশাপাশি নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ না থাকা কার্যত তাঁদের পিছিয়ে দিয়েছে বলে মত রাজ্য বিজেপির অনেক নেতাদের। প্রথম থেকেই এবারের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা চালাতে গিয়ে রাজনৈতিক সমালোচকদের অনেকেই বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিজেপির কেউ নেই অথচ অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষে একজন হেভিওয়েট মুখ যা বিপদে ফেলতে পারে বিজেপিকে। কার্যত তাই হয়েছে। হারের পর একই কথা বিজেপি নেতাদের মুখেও গতকাল শোনা গেল। অনেকেই জানিয়েছেন, হিন্দিভাষী কেন্দ্রীয় নেতারা এ রাজ্যে এসে প্রচার চালিয়েছেন বটে, কিন্তু তাঁরা কোনোভাবেই মানুষের মধ্যে ছাপ ফেলতে পারেনি।

অন্যদিকে আদি বিজেপি নেতারা স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছেন, বহিরাগত নেতাদের আমদানি করা তত্ত্ব মেনে চলতে গিয়ে ভরাডুবি হয়েছে। প্রসঙ্গত, এদিন বৈঠকে ছিলেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সব্যসাচী দত্ত। তিনিও গেরুয়া শিবিরের নির্বাচনী স্ট্রাটেজির যথেষ্ট সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি তিনি স্পষ্টতই জানিয়েছেন, বহিরাগত নেতারা এ রাজ্যে এসে নির্বাচন পরিচালনার চেষ্টা চালিয়েছেন। ফলস্বরূপ কিছুই হলনা। একই সাথে অত্যধিক টাকা খরচ নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। একইসাথে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সাংসদদের বিধায়ক পদের লড়াইতে দেখা যায়। আর তাই নিয়েই এবার বিরোধিতার সুর স্পষ্ট অর্জুন সিং, লকেট চট্টোপাধ্যায় এর মতন সাংসদদের গলায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এ প্রসঙ্গে অর্জুন সিং স্পষ্টত ক্ষোভের সাথে প্রশ্ন তোলেন, একজন সাংসদকে প্রার্থী করার আগে কেন্দ্রীয় নেতারা কেন কোনো আলোচনা করবেন না? একইভাবে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভুল নিয়ে সরব হন। ব্যারাকপুরের সংসদ অর্জুন সিংও বহিরাগত তত্ত্ব নিয়ে মুখ খুলেছেন। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির অন্যতম নেতা সায়ন্তন বসু আবার জানিয়েছেন, তৃণমূল থেকে যারা বিজেপিতে এসেছেন এবং যাদেরকে বড় নেতা মানা হয়, বিগত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরাই বিরোধিতা করেছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক হিংসার প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবারের বৈঠকে সব্যসাচী দত্ত তাঁর নিজের পরিকল্পনা জানিয়েছিলেন।

তাঁর মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাপে রাখতে তাঁর কায়দাতেই জনমত তৈরী করতে হবে। এবং সেক্ষেত্রে ঘরছাড়া এবং রাজনৈতিক সন্ত্রাসের শিকার পরিবারের একাংশকে কলকাতা এনে গান্ধী মূর্তি পাদদেশে বসিয়ে প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। কিন্তু তাঁর প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। অন্যদিকে একইসাথে মঙ্গলবারের বৈঠকে উঠে এসেছে বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে হিন্দি ভাষা বড়সড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে একমাত্র স্মৃতি ইরানি ছাড়া কেউই বাংলা বলতে পারেননি। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বাংলা উচ্চারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে তীব্র কটাক্ষ শোনা গিয়েছে।

একইসাথে জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে রাজ্যের বিজেপি নেতাদের নির্দেশ করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে অন্যদিকে তিন সদস্যের একটি আইন-শৃঙ্খলা কমিটির তৈরি করা হয়েছে যারা রাজ্যের নেতাদের ওপর নজর রাখবে বলে জানা গিয়েছে সব মিলিয়ে গেরুয়া শিবিরের জট ছাড়ানোর যে প্রচেষ্টা ছিল, তা কতদূর সফল হলো তা নিয়ে কিন্তু থাকছে প্রশ্ন। আপাতত বিজেপি শিবির আগামী দিনে নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে, এখন সে দিকেই নজর সবার।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!