এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দল কার্যত নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেও অপারগ

এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দল কার্যত নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেও অপারগ

দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন ফলাফল প্রকাশে দেখা গেল দিল্লি থেকে কংগ্রেস এবার পুরোপুরি ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র আসন না পাওয়াই নয়, এবার দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধীর দলের অবস্থা এতটাই খারাপ যে প্রদত্ত ভোটের 5 শতাংশ আসনও তাঁদের ভাগে পড়েনি। উপরন্তু কংগ্রেসের এবারের নির্বাচনে এতটাই খারাপ পারফরম্যান্স যে তাঁদের 67 জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, শনিবার ভোটদান শুরু হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস 1 থেকে 2 শতাংশ ভোট পাবে। সে সময় অরবিন্দ কেজরিওয়াল যে খুব একটা ভুল বলেননি, তা আজকের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর পরিষ্কার বোঝা গেছে।

দিল্লি বিধানসভায় মোট আসন সংখ্যা 70 টি। তার মধ্যে 67 টি আসনেই কংগ্রেস একেবারে পেছনের সারিতে চলে গেছে। বলা যেতে পারে, এবারের রাজনৈতিক যুদ্ধে রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। অন্যদিকে, 2014 সালের পর দেশজুড়ে যে মোদী-ঢেউ আছড়ে পড়েছিল, সেই ঢেউতেও বোধহয় এবার ভাটার টান। কারণ গত দু’বছরে দেখা যাচ্ছে, ভারতবর্ষের সাতটি রাজ্যে বিজেপির হার হয়েছে। তবে দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন নিয়ে প্রথম থেকেই পদ্ম শিবির আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সময়ের সাথে সাথেই সেই আত্মবিশ্বাসের গড় ভেঙে পড়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে কোন রকমে দিল্লিতে মুখ রক্ষা করে বিজেপি।

এর আগে 1998 সাল থেকে 2013 সাল পর্যন্ত দিল্লিতে একনাগাড়ে জেতে কংগ্রেস। সেসময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন কংগ্রেসের বর্ষিয়ান নেত্রী শীলা দীক্ষিত। প্রসঙ্গত শীলা দীক্ষিতের নেতৃত্বে ভোট হয়েছিল দুবার। সেসময় অবশ্য আসন সংখ্যার নিরিখে হার হলেও অস্তিত্ব সংকটের মতন পরিস্থিতি কংগ্রেসের সামনে আসেনি। তবে দিল্লি যেখানে কংগ্রেসের গড় বলে সুপরিচিত ছিল, সেখানে এবার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস শিবির কোনোভাবেই দিল্লিবাসীর মনে দাগ কাটতে পারেনি। অন্যদিকে পদ্ম শিবির এবারে জোরদার প্রচার চালিয়েছিল দিল্লিতে। আপ এবং কংগ্রেসকে একই আসনে বসিয়ে তাঁরা একের পর এক আক্রমণ করে গেছে।

তবে আপ দলের অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রথম থেকে কোনরকম রাজনৈতিক বিতর্কে প্রবেশ করেননি। তিনি মূলত জোর দিয়েছিলেন রাজ্যের উন্নয়নে। ভোটের প্রচার করতে গিয়ে তিনি তার 5 বছরের সরকারের দিল্লিবাসীর জন্য করা কাজের খতিয়ান তুলে ধরেছিলেন। যার ফলস্বরুপ কেজরিওয়ালকে দিল্লিবাসী মন খুলে ভোট দিয়েছেন, আম আদমি পার্টির প্রার্থীদের জন্য তাঁরা সমর্থন উজাড় করে দিয়েছেন। ফলস্বরূপ, দিল্লির মসনদে আবারও বসতে চলেছেন আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লি নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ নির্বাচন প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জামানত বাজেয়াপ্ত তখনই হয়, যখন কোন প্রার্থী সেই কেন্দ্রের মোট ভোটের ছয় ভাগের এক ভাগ ভোটও পেতে সমর্থন হননা। প্রতিটি ভোটের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে কিছু টাকা ডিপোজিট হিসেবে রাখতে হয় বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে ডিপোজিট রাখার অর্থের পরিমাণ থাকে 10,000। সেই অনুযায়ী এবারের বিধানসভা ভোটের আগে প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে 10000 টাকা জমা রেখেছিলেন। যথারীতি যেসব প্রার্থীরা নির্বাচনী কেন্দ্রের মোট ভোটের ছয় ভাগের এক ভাগও পাননি, তাদের জমা রাখা টাকা কমিশন আর ফেরত দেবে না। অর্থাৎ বলা যায়, তাঁদের জামানত জব্দ হল। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে 70 টি আসনের মধ্যে 67 টি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

দিল্লিতে মাত্র তিনটি আসনে কোন রকমে জামানত জব্দ করা আটকেছে কংগ্রেস প্রার্থীরা। সেই তিনটি আসন হল গান্ধীনগর, বদলি ও কস্তুরবানগর। অন্যদিকে দিল্লিতে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর পি চিদাম্বরম টুইট করে জানিয়েছেন, ‘আপ জিতল, ধোঁকাবাজির পরাজয় হল। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে দিল্লিতে বাস করেন। বিভেদ, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতিকে হারিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। দিল্লির জনতাকে কুর্নিশ। দিল্লির এই রায় ২০২১ ও ২০২২-এর ভোটের আগে অন্য রাজ্যগুলির কাছেও একটি শিক্ষা।’ অন্যদিকে, বাংলা থেকে লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এদিন। অধীর চৌধুরী দিল্লি বিধানসভায় আপের জয় প্রসঙ্গে বলেছেন,’উন্নয়নের এজেন্ডারই জয় হল। অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে শুভেচ্ছা। কংগ্রেসের কাছে এই ভোটে কোনও ইস্যুই ছিল না।’

প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে এবারের নির্বাচনী প্রচারে কোনো চমক দেখাতে পারেনি শতাব্দীপ্রাচীন দল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কংগ্রেসের পারিবারিক ঐতিহ্যকে সামনে এনে ভোটের প্রচার কিংবা বিজেপির সমালোচনায় আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ, কোনোটিই দিল্লির বাসিন্দাদের মনে বিন্দুমাত্র রেখাপাত করেনি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবারের দিল্লির নির্বাচনী লড়াই মূলত আপ এবং বিজেপির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সেখানে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি কংগ্রেসসহ অন্যন্য দলগুলি। ভোটের রেজাল্টেই সে কথা স্পষ্ট। 70 টি আসনের মধ্যে আপ 57 টি আসনে এবং বিজেপি 13 টি আসনে এগিয়ে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!