রাজভবনকে ‘আইনি প্যাঁচে’ ফেলতেই কি শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা? নজিরবিহীন ঘটনায় রাজ্যজুড়ে ঝড়! কলকাতা বর্ধমান রাজ্য June 3, 2020 এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে তীব্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ল রাজ্য বনাম রাজ্যপাল। যা পৌঁছে গেল আইনি যুদ্ধে। বস্তুত, সম্প্রতি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য পদে গৌতম চন্দ্রকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। আর শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা না করেই কিভাবে রাজ্যপাল একতরফাভাবে এই নিয়োগ করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে রাজ্য সরকার। পরবর্তীতে সাংবাদিক বৈঠক করে কোনোভাবেই রাজ্যপালের এই নিয়ম মানা হবে না বলে জানিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরেই তীব্র বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে শিক্ষামন্ত্রী মুখে একথা বললেও, বাস্তবে এই ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেয় শিক্ষা দপ্তর, তার দিকে নজর রেখেছিলশিক্ষা মহল। সম্প্রতি উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যপালের নিয়োগ করা গৌতম চন্দ্রকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে নিজেদের মনোনীত আশীষ কুমার পানিগ্রাহী উপাচার্য পদে বসিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। আর এর ফলে এই বিষয় নিয়ে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সম্পর্ক করুন জায়গায় গিয়ে পৌঁছাবে বলেই আশঙ্কা করেছিল বিশেষজ্ঞরা। অবশেষে সেই আশঙ্কাতেই এবার সীলমোহর করতে চলেছে। সূত্রের খবর, এদিন রাজ্যপালের করা নিয়োগকে সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, “সহ-উপাচার্যের পদ 21 ফেব্রুয়ারি থেকে শূন্যপদ রয়েছে।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সেই নির্দেশিকায় আরও লেখা আছে, “বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য পদ পূরণ করা জরুরি ছিল। কিন্তু সহ-উপাচার্যের পদে নিয়োগের জন্য উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের প্রস্তাবে সম্মতি দেননি রাজ্যপাল। রাজ্যপাল উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের পাঠানো প্রস্তাবে সম্মতি না দিয়ে নিজের পছন্দমত দুজনের নাম প্রস্তাব করেন উপাচার্য নিয়োগের আইনকে না দেখেই। তার পরেও গৌতম চন্দ্রকে সহ উপাচার্য পদে নিয়োগ করেন। ” সেখানে আরও লেখা আছে, “কিন্তু এই সহ উপাচার্য নিয়োগ করতে গেলে উপাচার্য নিয়োগের আইন মোতাবেক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে নিয়োগ করতে হয়। কিন্তু তা মানেননি রাজ্যপাল।” শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের 58 নম্বর ধারা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কারণের কথা উল্লেখ করে উচ্চশিক্ষা দপ্তর “রাজ্যপাল যা করেছেন, তা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি” বলেই এবার নিজেদের নির্দেশিকা জারির মধ্য দিয়ে পরোক্ষে বোঝাতে চাইল রাজ্যের শিক্ষা দফতর বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অনেকে বলছেন, এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে রাজভবনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। তবে রাজ্যপাল একজন আইন বিশেষজ্ঞও বটে। ফলে তিনি এই ধরনের কাজ করবেন, অথচ আইনকে না দেখে, এমনটা হতে পারে না। সেদিক থেকে সরকারের পক্ষ থেকে আইনকে তুলে ধরে এই ধরনের কথা বলা হলেও, এবার রাজভবনের পক্ষ থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর পাল্টা কোনো মন্তব্য করে সরকারের অস্বস্তিকে বাড়িয়ে দেবেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেননা এতদিন রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের নানা বিষয়ে মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু কোনদিন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য পদে রাজ্যপালের পক্ষ থেকে নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে তা খারিজ করে দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা নিয়োগ সত্যিই নজিরবিহীন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, রাজ্য বনাম রাজ্যপালের তিক্ততার মাঝে হঠাৎ করেই “আইন” নামক শব্দটি চলে আসায় শেষ পর্যন্ত এই ব্যাপারে কার জয় হয়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -