এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি – ভুল বোঝাচ্ছে বিরোধীরা!

পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি – ভুল বোঝাচ্ছে বিরোধীরা!


রাজ্য সরকারের ঘাড় থেকে যেন শিক্ষক আন্দোলনের ভূত নামছে না। কয়েকদিন আগেই প্রাথমিক শিক্ষকদের যোগ্যতা ভিত্তিক বেতনের দাবিতে অনশন আন্দোলনে জেরবার হয়েছে রাজ্য সরকার। অবশেষে তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে হয়েছে। আবার এই আন্দোলন মিটতে না মিটতেই রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলনে অস্বস্তির মুখে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার আন্দোলনকারী পার্শ্ব শিক্ষকদেরকে লাঠির মুখে আন্দোলন ছেড়ে উঠে যেতে হল।

কিন্তু রোববার দিন ফের কল্যাণী থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে যায় ওই পার্শ্বশিক্ষকেরা। অবশ্য রোববার দিন সন্ধ্যা 7 টার সময় পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আপাতত ধরনা বিক্ষোভ স্থগিত রেখেছেন পশ্চিমবঙ্গ পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ। এদিন মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগিরথ ঘোষাল বলেন, “কাল কোনো পার্শ্ব শিক্ষক স্কুলে কাজ করবে না। তারপরে দুদিন স্কুলে যাবেন। কালো ব্যাচ করে তিনদিন পরে কলকাতায় ফের অবস্থান বিক্ষোভ হবে।”

ভগীরথবাবুর অভিযোগ, পুলিশ যখন পার্শ্বশিক্ষকদের অনশন মঞ্চে লাঠি চালায়, সেই সময় শিক্ষকেরা জাতীয় পতাকার নিয়ে জাতীয় সংগীত গাইছিলেন। জাতীয় পতাকা হাত থেকে কেড়ে নিয়ে তাদেরকে লাঠিপেটা করে‌ পুলিশ। আর তার জন্য থানার সামনে রবিবার ধরনা দিতে দেখা যায় কয়েক হাজার শিক্ষককে।

শনিবারের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সেই ভগীরথবাবু। উল্লেখ্য, গত শনিবার আন্দোলনকারী শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ করার পরে 5 জন শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই 5 জন শিক্ষকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি রাখা হয় আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে। এই বিষয়ে রানাঘাট জেলা পুলিশ সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হবে। সেখানে যা উঠে আসবে সেই অনুসারে পদক্ষেপ করা হবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে এই আলোচনার জন্য কল্যাণীর মহকুমা শাসক ধীমান বারুই দুপুরবেলা থানায় যেতে গেলে আন্দোলনকারীরা তাকে বাধা দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে এদিন পার্শ্বশিক্ষকদের সংগঠনের তরফ থেকে সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষক সংগঠনের পক্ষে কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ মিত্র, তরুণ কান্তি নস্কররা জানানড় জেলাস্তরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হবে। অন্যদিকে রাজ্য পার্শ্ব শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক অভিজিৎ ভৌমিক বলেন, শনিবারের ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে‌। 5 সেপ্টেম্বর আমরা ধর্মতলায় মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী কুশপুতুল পোড়াব।

তবে এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও কম হয়নি। রাজ্য বামফ্রন্টের পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষক এসএসকে, এমএসকে, শিক্ষক, শিক্ষাবন্ধু, এএনএম নার্স, পার্শ্বশিক্ষক – সরকার কি এদের শুধু মারতেই শিখেছে! দাবি মানার কোনো দায় কি সরকারের নেই!” উল্লেখ্য, এদিন কল্যানীতে গিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে দেখাও করেন সুজনবাবু। এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “রাতের অন্ধকারে রাষ্ট্রশক্তির যে ঘৃণ্য আক্রমণ নেমে এল, তা সভ্যতার কলঙ্কিত অধ্যায়।”

অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, “আপনি বরং বিধানসভা থেকে একটা আইন পাস করুন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষ ক্ষোভ জানাতে পারবে না। কেউ কোনো দাবি নিয়ে আন্দোলনও করতে পারবে না।”

এদিকে এই ব্যাপারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূল সরকার সব শিক্ষকদের সঙ্গে এই আচরণ করছে। পার্শ্ব শিক্ষকদের আন্দোলনের পাশে আমরা আছি। তবে শিক্ষক, শিক্ষা কর্মী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলনে যেভাবে জেরবার হয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার, তা রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে শাসক দলের কপালে। এখন এই সমস্ত আন্দোলনকে পাশ কাটিয়ে সরকার কি করে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখে! সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!