করোনার জেরে এবার পাল্টেই যেতে চলেছে শিক্ষাবর্ষ? UGC থেকে শিক্ষামন্ত্রীর কথায় বাড়ল জল্পনা কলকাতা জাতীয় রাজ্য April 26, 2020 রাজ্যে যে মুহূর্তে করোনা হানা দিয়েছিল, ঠিক তখনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমগ্র স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এবং সেই ঘোষণা এখনো কার্যকর রয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী 10 জুন সমস্ত স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়গুলি খোলার কথা। উল্লেখ্য, এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও যখন শেষের দিকে, তখন পরীক্ষা বাকি থাকতেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত সেমিস্টার বাদ দিয়ে বাকি প্রত্যেকটি সেমিস্টার একধাপ করে এগিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেখানেও তৈরি হয়েছে নানান সমস্যা। অন্যদিকে ইউজিসির 7 সদস্যের কমিটি ইতিমধ্যে প্রস্তাব রেখেছেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাবর্ষ যদি জুলাইয়ের বদলে সেপ্টেম্বরে করা হয়, তাহলে জুলাই এর মধ্যেই পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া যাবে। আবার অনলাইনে কিভাবে পড়াশোনা চলছে তা নিয়েও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল ইউজিসির পক্ষ থেকে। সেই কমিটি আবার সুপারিশ করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ে নিতে পারে, নাহলে করোনা পরিস্থিতি মিটলে স্কুল, কলেজ খুললে তারপরে খাতায়-কলমে পরীক্ষা দিতে হবে। অন্যদিকে ইউজিসির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলিতে জানানো হয়েছে তাঁরা পঠন পাঠন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং জানিয়ে দেবেন পরবর্তীতে কি হতে চলেছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন,”ইউজিসিকে চিঠি দেওয়ার পরে আমি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক না-করতে বলেছিলাম। সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার কথা আমরা জানিয়েছিলাম। কিন্তু সব পরীক্ষা নিতে হলে খুবই অসুবিধা হবে।” অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী যদি চতুর্থ সেমিস্টার বাদ দিয়ে অন্যান্য সেমিস্টারগুলি একধাপ এগিয়ে যায়, তাহলে কি দুটো সেমিস্টারের পরীক্ষা একসাথে হবে? এই নিয়ে শুরু হয়েছে শিক্ষা মহলে তীব্র বিতর্ক। ইতিমধ্যে শিক্ষক সংগঠনগুলি জানিয়ে দিয়েছে, একসঙ্গে দুটি সেমিস্টারের পরীক্ষা কখনোই নেওয়া যাবে না। কারণ সেটি বাস্তবসম্মত নয়। অন্যদিকে ইউজিসি নিযুক্ত যে কমিটি রয়েছে, তাঁরাও জানিয়ে দিয়েছে চলতি সেমিস্টারের পরীক্ষা অবশ্যই নিয়ে নেওয়া উচিত। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - জানা গিয়েছে, কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ইউজিসি আগামী দিনের শিক্ষা সংক্রান্ত চূড়ান্ত গাইডলাইন তৈরি করবে এবং সেগুলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পাঠানো হবে। অবশ্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষা যেহেতু যুগ্ম তালিকাভুক্ত তাই কমিটির রিপোর্ট সমস্ত রাজ্যের কাছে পাঠাতে হবে সকলের মতামত নিয়ে ইউজিসিকে একাডেমিক ক্যালেন্ডার এবং পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এদিকে দুটি সেমিস্টারের পরীক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যেই কলেজ শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে, যদি এরকম হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা প্রবল চাপের মুখে পড়বে। এদিন কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ সরকার জানিয়েছেন, ”ইউজিসির সুপারিশের সঙ্গে আমাদের চিঠির বয়ানে পুরোপুরি মিল রয়েছে। পরীক্ষা নিতেই হবে।” অন্যদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় দুটি সেমিস্টারের পরীক্ষা একসাথে হওয়ার বিরুদ্ধে জানিয়েছেন, ”আমরা যে দাবি করেছিলাম ইউজিসি-র সুপারিশেও তাই রয়েছে। পরীক্ষা শেষ করে নতুন সিমেস্টার চালুর কথা বলা হয়েছে সেখানে।” সেখানে অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি পার্থিব বসু এ প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ”ইউজিসি-র পরামর্শে চলতি সিমেস্টারগুলির পরীক্ষা সম্পূর্ণ করেই পরের সিমেস্টারের ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়েছে।” আপাতত আশা করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলি তাদের বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এবং আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে শিক্ষক নেতাদের মতে, এই মুহূর্তে ভারতবর্ষের অনলাইন প্রযুক্তি যে পরিস্থিতিতে আছে সেখানে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া কোন মতেই সম্ভব নয়। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, যেভাবে করোনা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে দেশের প্রতিটি স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা তাঁদের পঠন পাঠন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে, তাতে সবথেকে সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়াদের দল। কারণ উচ্চমাধ্যমিক থেকে শুরু করে আইসিএসসি, সিবিএসসি সমস্ত পরীক্ষা এই মুহূর্তে বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত কি হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে আগামী দিনের করোনা পরিস্থিতি কি থাকবে তার ওপর নির্ভর করে। আপাতত আগামী দিনের করোনা পরিস্থিতি রাজ্যসহ গোটা দেশে কি রকম থাকে, তার দিকেই এখন সজাগ নজর ওয়াকিবহাল মহলের। আপনার মতামত জানান -