প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করতে তৃণমূল বিরোধিতাকে বড় হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি‌। বিগত 10 বছর ধরে চলা রাজ্যের তৃণমূল সরকার বিরুদ্ধে এবার প্রতিষ্ঠানবিরোধী হওয়া কাজ করছে। আর সেই হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি চেষ্টা করছে রাজ্যে পরিবর্তন আনার। কিন্তু শুধুমাত্র তৃণমূল বিরোধিতাকে হাতিয়ার করেই যে বিজেপি বাজিমাত করতে পারবে না, তা ভালোই উপলব্ধি করেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা‌।

আর তাই তৃণমূল বিরোধীতার পাশাপাশি এবার নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার দিকে নজর দিতে হচ্ছে তাদের। বুথের সংগঠনকে শক্তিশালী করেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করতে চাইছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর সেই কারণেই এবার কোচবিহার জেলায় সংগঠনকে যাতে ভাল মত সাজিয়ে তোলা যায়, তার জন্য পরিকল্পনা শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলায় বিজেপির রাজ্য থেকে শুরু করে কেন্দ্রের নেতারা আসতে শুরু করেছেন। তারা পরখ করে নিচ্ছেন সেই সমস্ত জেলায় সংগঠন কতটা চাঙ্গা হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতারা যদি জেলায় আসেন, তাহলে কোনো বিষয় নিয়ে যাতে তাদের সামনে ত্রুটি ধরা না পড়ে, তার জন্যই এখন থেকে বুথের সংগঠনের ওপর জোর দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির কোচবিহার জেলা নেতৃত্ব।

ইতিমধ্যেই প্রায় প্রতিদিন দলীয় কার্যালয়ে একের পর এক ম্যারাথন বৈঠক করতে দেখা যাচ্ছে জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতি রাভা রায়কে। প্রতিটি বুথের সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি। ভাগ করে দিচ্ছেন দায়িত্ব। অর্থাৎ কোনোমতেই তৃণমূল বিরোধী হাওয়া কাজে লাগানোর পাশাপাশি বুথের সংগঠন যাতে দুর্বল হয়ে না পড়ে, তার জন্য নজর রাখতে হচ্ছে জেলা বিজেপি নেতৃত্বকে।

একাংশ বলছেন, যে কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে জয়লাভের ক্ষেত্রে নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে বিজেপি যদি শুধুমাত্র তৃণমূল বিরোধীতার উপর ভর করে বসে থাকে, তাহলে তাদের পক্ষে জয়লাভ করা কতটা সম্ভব হবে, তা যথেষ্ট সংশয়ের বিষয়। তাই এই পরিস্থিতিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং রণনীতি প্রয়োগের পাশাপাশি নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার দিকে নজর দিতে হচ্ছে কোচবিহার জেলা বিজেপি নেতৃত্বকে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতি রাভা রায় বলেন, “আমরা বুথস্তর থেকে সংগঠনকে সাজানোর জন্য অনেক আগে থেকেই কাজ করছি। আমাদের কেন্দ্র এবং রাজ্যস্তরের নেতারা আসছেন। নতুন জেলা পর্যবেক্ষক দীপেনবাবু আসছেন। আগামীতে আরও নেতা-নেত্রী আসবেন।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর তারপর থেকেই ক্রমাগত এখানে তৃণমূলের সংগঠন প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের হৃতগৌরব পুনরুদ্ধার করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপি যদি শুধুমাত্র তৃণমূল বিরোধীতার ওপর ভর করে বসে থাকে, তাহলে তাদের সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই এই পরিস্থিতিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি নিজেদের সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি করার জন্য তৎপরতা অবলম্বন করতে দেখা গেল ভারতীয় জনতা পার্টিকে।

আর বিজেপি যেভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে শুরু করেছে, তাতে আগামী দিনে তারা যে এই কোচবিহার জেলার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র দখলে কার্যত আদাজল খেয়ে নামবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জেলার সংগঠনকে চাঙ্গা করার জন্য যে চেষ্টা করা হচ্ছে, তা কতটা সফলতা পায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।