এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > একুশে জুলাইয়ের আগেই ভাঙ্গা হল শহীদ-বেদী, শহীদ পরিবারের ক্ষোভে ব্যাপক চাপে তৃণমূল!

একুশে জুলাইয়ের আগেই ভাঙ্গা হল শহীদ-বেদী, শহীদ পরিবারের ক্ষোভে ব্যাপক চাপে তৃণমূল!

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  প্রতিবছর ঘটা করে জুলাই মাসের 21 তারিখে শহীদদের প্রতি সম্মান জানায় তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে ধর্মতলায় রীতিমতো জাঁকজমক করে শহীদ অনুষ্ঠান করা হয়। কিন্তু দল ক্ষমতায় আসার পর শহীদদের সেই মঞ্চ থেকে সম্মান জানানো তো দূরের কথা, বরঞ্চ সেই মঞ্চ আনন্দ-উৎসবের হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে কটাক্ষ করতে দেখা যায় সমালোচক মহলকে। তবে গতবছর তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই একুশে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশ পালন করা সম্ভব হয়নি।

কারণ করোনা ভাইরাস। এবারেও তা হবে কিনা, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। তবে তার মাঝেই গত 1985 সালে জুলাই মাসের 2 তারিখে পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রামের বেলাড়ি এলাকায় তৎকালীন শাসকদল সিপিএমের দুষ্কৃতীদের আক্রমণে তিন কংগ্রেস কর্মী নিহত হন। যেখানে কমলাকান্ত কেশ, অশোক কেশ এবং অসীম কেশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। আর তারপর থেকেই এই দিনটিকে স্মরণ করে কংগ্রেসী ঘরানার মানুষজন।

পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অঞ্চল তৃনমূল কার্যালয়ের সামনে একটি শহীদ বেদী গঠন করে জুলাই মাসের 2 তারিখে প্রতিবছর শহীদদের প্রতি সম্মান জানানো হয়। এবারও সেই উদ্যোগ নিয়েছিল ঘাসফুল শিবির। কিন্তু শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর আগের দিন কার্যত তৃণমূলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে সেই শহীদ বেদী ভেঙে দিতে দেখা গেল তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি গোটা ঘটনায় তৃণমূলের চাপ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, যে পরিবারের সদস্যদের জন্য সেই শহীদ বেদী করা হয়েছিল, সেই পরিবারের অন্যতম সদস্য তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য অনন্ত কেশ এদিন সেই শহীদ বেদী ভেঙে দেন। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে প্রতিবছর এই দিনটিকে বেছে নিয়ে শহীদদের সম্মান জানানো হলেও, কেন তার পরিবারের বাবা এবং দাদাদের সম্মান জানাতে বাধা দিলেন অনন্তবাবু! তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিও বটে। সেক্ষেত্রে এভাবে শহীদ বেদী ভেঙে দিয়ে তিনি ঠিক কি প্রমাণ করতে চাইলেন?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একাংশ বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর বিগত দিনে যারা দলকে ক্ষমতায় আনতে প্রাণপাত করেছিলেন, তাদেরকে দল মনে রাখেনি। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সেই দিন আসার সময় শহীদদের প্রতি মালা দিয়ে দায় সারে শাসকদল। তাই সারা বছর যারা শহীদদের মনে রাখে না, তাদের প্রতি অভিমান বশত শহীদ দিবসের দিনে কার্যত এই ধরনের উদ্যোগ নিতে দেখা গেল সেই শহীদ পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য অনন্ত কেশকে বলেই দাবি একাংশের।

কেন হঠাৎ এই রকম ঘটনা ঘটালেন তিনি? এদিনের এই প্রসঙ্গে অনন্ত কেশ বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস আমার নিহত বাবা-দাদার প্রতি মর্যাদা দেয়নি। আমার পরিবারের প্রতি অবিচার করেছে। তাই শহীদ-বেদী ভেঙে দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে বর্তমান শাসকদল। অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু কথা রাখেনি। আমাদের পরিবারের দিকে ফিরেও তাকায়নি।” স্বাভাবিক ভাবেই শহীদ পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা দলের প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি এই ধরনের মন্তব্য করার কারণে এখন যথেষ্ট চাপের মুখে পড়ে গিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

এদিন এই প্রসঙ্গে অনন্তবাবুর করা অভিযোগ কার্যত ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফাল্গুনী গোস্বামী। এদিন তিনি বলেন, “আজকের এই ঘটনার নিন্দা করছি। দলের পক্ষ থেকে অনন্তবাবুকে পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। দল কেশ পরিবারের সদস্যদের যথার্থ সম্মান দিয়েছে। উনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” একইভাবে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে তিনি খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু। তবে তৃণমূলের বাৎসরিক কর্মসূচি একুশে জুলাই যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, ঠিক তখনই বিল্বগ্রামের এই ধরনের ঘটনা এবং শহীদ পরিবারের এক সদস্যের পক্ষ থেকে শহীদ বেদী ভেঙে দেওয়ার যে দৃশ্য সামনে এল, তাতে বিরোধীরা বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!