এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এলাকায় পুরোহিতদের ‘প্রভাবের’ জন্যই কি ভাতার ব্যবস্থা? উঠছে প্রশ্ন, বাড়ছে শাসকদলের অস্বস্তি

এলাকায় পুরোহিতদের ‘প্রভাবের’ জন্যই কি ভাতার ব্যবস্থা? উঠছে প্রশ্ন, বাড়ছে শাসকদলের অস্বস্তি


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের জন্য মাসে হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার পরেই নানা মহলে ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। এতদিন বিরোধীদের তরফ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ইমামদের ভাতা দেওয়া হলেও, কেন ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে না, তার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছিল প্রশ্ন।

কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বিরোধীদের বক্তব্যকে কার্যত খণ্ডন করে দিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর এই প্রকল্পটি পরিচালনা করবে। কিন্তু এই প্রকল্পের প্রস্তাবে যা বলা হয়েছে, তা নিয়ে এবার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপকভাবে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে।

কিন্তু কি এমন বলা হয়েছে সেই প্রস্তাবে? জানা গেছে, সরকারি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পুরোহিতরা যে এলাকায় যজমানি করেন, সেখানে তাদের যথেষ্ট প্রভাব থাকে। তাই তাদের নানা সরকারি উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে ব্যবহার করা হবে। আর সেই কারণেই তাদের এই ভাতা দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হয়েছে। ফলত সরকারি প্রস্তাবে পুরোহিতের ভাতা দেওয়ার কারণ হিসেবে সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রচারের জন্য পুরোহিতদের কাজে লাগানোর কথা উঠে আসায় নানা মহলে নানা কথা শোনা যাচ্ছে।

একাংশ বলছেন, এইভাবে শর্ত দিয়ে পুরোহিতের ভাতা দেওয়ার ব্যাপারটি সমাজে গ্রহণযোগ্য হবে না। এর ফলে আদতে বিপাকে পড়বে সরকার। যদিও বা এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, “ইমামদের ভাতা দেওয়ার সময় পালস পোলিও প্রচারে তাদের কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছিল। সরকার তো ইমাম বা পুরোহিতের ভাতা দিতে পারে না। তাই সামাজিক দিকটি দেখিয়ে প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে।”

একাংশ বলছেন, এতদিন পুরোহিতের ভাতা না দেওয়া নিয়ে রাজ্যের বিরোধীরা সরকারকে প্রশ্ন করতে শুরু করেছিল। যার ফলে সেই প্রশ্নকে দমিয়ে দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল পুরোহিত ভাতা। কিন্তু এবার সেই পুরোহিতের ভাতা দেওয়ার জন্য যে সরকারের যে প্রস্তাব সামনে আসল, তা দেখে অনেকেরই চক্ষুচড়কগাছ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। সামাজিক দিকে সরকারের উন্নয়ন নিয়ে প্রচার করার কারণেই পুরোহিতদের এই ভাতা দেওয়া হচ্ছে বলে যে প্রস্তাব সামনে এসেছে, তা নিয়ে বিরোধীরা নতুন করে সরকারকে চেপে ধরতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই এই ভাতা পাওয়ার জন্য একটি সরকারি ফর্মে পুরোহিতদের আবেদন করতে হবে বলে জানানো হয়েছে‌। যেখানে পেনশন বা অন্যান্য সামাজিক প্রকল্পের সঙ্গে তারা যুক্ত কিনা, তাও সরকারকে জানাতে হবে বলে খবর। এছাড়াও সেই সমস্ত পুরোহিতদের যদি বাড়ি না থাকে, তাহলে তাদের বাড়ি তৈরীর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য করা হবে। তবে এক্ষেত্রে দুটি শর্ত রয়েছে। প্রথমত, সেই পুরোহিতদের নিজস্ব জমি থাকতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, তার কোনোরূপ পাকা বাড়ি থাকা চলবে না। আর তাহলেই সরকারের পক্ষ থেকে তাদের আবেদনের ভিত্তিতে তাদের বাড়ি প্রদান করা হবে।

তবে এত পর্যন্ত সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকলেও এবার সরকারি প্রস্তাব নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, তাহলে কি সরকারপক্ষ শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়েই পুরোহিতদের দিয়ে উন্নয়নের কাজ পরিচালনা করবার জন্য তাদের এই ভাতা দেওয়ার বন্দোবস্ত করল? তাহলে কি সরকারের আসল উদ্দেশ্য নিজেদের শ্রীবৃদ্ধি! সরকারপক্ষ প্রস্তাবে যা লিখেছে, তা যদি বিরোধীরা অন্য ভাবে প্রচার করে মানুষের মনে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়, তাহলে এই পুরোহিত ভাতা দেওয়া নিয়েও ব্যাপক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!