এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > শেষ দফার ভোট সুষ্ঠুভাবে করতে একসঙ্গে তিন কড়া পদক্ষেপ কমিশনের, উত্তাল রাজ্য

শেষ দফার ভোট সুষ্ঠুভাবে করতে একসঙ্গে তিন কড়া পদক্ষেপ কমিশনের, উত্তাল রাজ্য

অনেকে বলেন, “শেষ ভালো যার সব ভালো তার।” কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার পক্ষে সেই শেষের সময়টা খুব একটা ভালো নাও হতে পারে। এবার সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন। প্রথমত, 24 ঘন্টা প্রচারের সময় কমিয়ে দেওয়া, দ্বিতীয়ত, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য্যকে অপসারণ করা এবং তৃতীয়ত, রাজ্যের এডিজি সিআইডির পদ থেকে রাজীব কুমারকে সরিয়ে নেওয়া – আর নির্বাচন কমিশনে এহেন সিদ্ধান্তই এবার তীব্র আলোড়ন ফেলে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। কিন্তু কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন?

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর রোড শোকে ঘিরে কলকাতার রাজপথ যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে যেভাবে রণক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়েছিল তৃণমূল বনাম বিজেপির মধ্যে, তাতে সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচনের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছিল।

এমনকি বুধবার সকাল থেকেই এই ব্যাপারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙ্গা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে সরব হয়ে কমিশনের কাছে নালিশও জানিয়েছে। আর রাজ্যের এহেন করুণ পরিস্থিতি দেখে বুধবার সকাল সাড়ে 11 টায় এই ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাবের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করে গোটা বিষয়টি জানতে চান দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনিল আরোরা।

যে ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। আর ভিডিও কনফারেন্স শেষ করে সকলের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে সন্ধ্যাবেলা সাংবাদিক বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গে প্রচারের সময় 24 ঘন্টা কমিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে 324 ধারা প্রয়োগের কথা জানান দেশের নির্বাচন কমিশন। আর এই 324 ধারা প্রয়োগের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, “ভারতীয় সংবিধানের 324 ধারা অবাধ, নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি এবং নির্বাচন কমিশনের উপর রয়েছে। এমনকি এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের রায় রয়েছে। কোথাও ভোট প্রক্রিয়ায় বা আইন-শৃংখলার অবনতি হলে যেকোনোও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ভোটকে ঘিরে হাঙ্গামা ও হিংসার ঘটনা ঘটছে বলে খবর এসেছে। পর্যবেক্ষকদের রিপোর্টেও সেকথা স্পষ্ট। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সমস্ত প্রার্থীদের ঠিকভাবে সহযোগিতা করছে না। মানুষের মনে আতঙ্ক রয়েছে। তাই শেষ দফার নির্বাচনে প্রচারের সময় কমিয়ে বৃহস্পতিবার রাত 10 টা পর্যন্ত তা করা হল।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বস্তুত, আগামী উনিশে মে শেষ দফার নির্বাচনে শুক্রবার পর্যন্ত প্রচারের সময় ছিল। কিন্তু তা আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে বৃহস্পতিবার রাত 10 টা পর্যন্ত করে দিল কমিশন। অন্যদিকে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য্যকে সরিয়ে দেওয়ায় রাজ্যের শাসক দল অনেকটাই অস্বস্তিতে পড়ল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

জানা গেছে, এক সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন এই অত্রি ভট্টাচার্য্য। কমিশনের বক্তব্য, তার চিঠির যে ভাষা তা ঠিকমত ছিল না। এদিকে অত্রি ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ায় বর্তমানে মুখ্যসচিব মলয় দে স্বরাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এডিজি সিআইডি রাজীব কুমারকেও সরিয়ে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কমিশনের এহেন সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন হলেও রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ অফিসার বলে পরিচিত এই দুইজনকে সরিয়ে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পক্ষে সওয়াল করে পথ চলতে সচেষ্ট হল কমিশন।

পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারের সময়সীমা 24 ঘন্টা কমিয়ে দেওয়ার পেছনে রাজ্যের যে আইনশৃঙ্খলা অবনতির কথা কমিশনের গলায় শোনা যাচ্ছে সেই ব্যাপারেও এবার রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকায় উঠতে শুরু করল নানা প্রশ্ন। সব মিলিয়ে সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে করবার জন্য নজিরবিহীন কড়া পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!