পুজোতেও ছুটি নেই, তার ওপরে কাজ করতে হবে বিনা পারিশ্রমিকে! ক্ষোভে ফুটছেন কর্মীরা কলকাতা রাজ্য October 1, 2019 বাঙালির মন ও প্রাণের সঙ্গে মিশে আছে দুর্গাপুজো। যে যেখানেই থাকুন না কেন, পুজোর দিনে নিজের বাড়িতে এসে ছুটি কাটাতে মন চায় প্রত্যেকেরই। কিন্তু নতুন জামা পড়ে যখন রাজ্যের প্রায় প্রত্যেকেই নিজের কর্মস্থল থেকে ছুটি পেয়ে পুজোর আনন্দে ভাসবে, ঠিক তখনই ছুটির দিনেও বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে হবে আরামবাগ পৌরসভার কর্মীদের। সূত্রের খবর, সোমবার এই ব্যাপারে আরামবাগ পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। আর পুজোর সময় ছুটি না পেয়ে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করার নির্দেশ পেয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফুসতে শুরু করেছে সেই আরামবাগ পৌরসভার কর্মচারীরা। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত! সূত্রের খবর, আরামবাগ পৌরসভার বিদ্যুৎ, পানীয় জল সরবরাহ এবং সাফাই বিভাগ মিলিয়ে প্রায় 180 জন কর্মী রয়েছেন। জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের 25 তারিখে পৌরসভার পক্ষ থেকে এই তিন দপ্তরের প্রধানদের উদ্দেশ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে লেখা হয়, “পুজোর ছুটির দিনগুলিতে আপনারা অধীনস্থ কর্মচারীদের শিফটিং ডিউটির মাধ্যমে কাজ করাবেন। পুরসভার আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার দরুন ওভারটাইম কাজ করার জন্য কোনো রকম বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না।” আর এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই আরামবাগে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়। ছুটির দিনগুলিতে একেই কাজ, তার ওপর বিনা পারিশ্রমিকে তাদের কাজ করানোয় রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেন ওই তিন বিভাগের কর্মচারীরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের পিন্টু দুলে নামে এক কর্মী বলেন, “পৌরসভা বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন অর্থ বরাদ্দ করে। অথচ ছুটির দিনগুলিতে আমাদের দিয়ে কাজ করতে চাইছে। তার বিনিময়ে কোনো পারিশ্রমিক দিতে চাইছে না। এটা কখনই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। পৌরবাসীর জনজীবন যাতে বিপর্যস্ত না হয়, তাই ছুটির সময় আমরা কাজে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। অতীতে পৌরসভার অন্যান্য বিভাগ বন্ধ থাকলেও এই তিন বিভাগের কর্মীরা একযোগে পরিষেবা স্বাভাবিক রেখেছে। কিন্তু এবছর হঠাৎ করে এমন নির্দেশিকা জারি করায় আমরা হতাশ।” এদিন এই প্রসঙ্গে আরামবাগ পৌরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী হাসান চৌধুরী বলেন, “পুজোর সময় যখন অন্যান্য দপ্তর বন্ধ থাকবে, তখন জরুরি সেবার নামে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কিন্তু তার জন্য কোনো পারিশ্রমিক পাব না, এটা মেনে নেওয়া যায় না।তাই এর প্রতিবাদে আমরা আজ বিক্ষোভ দেখিয়েছি। সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমরা ছুটির দিনে কাজ করতে রাজি, কিন্তু তার জন্য আমাদের পারিশ্রমিক দিতে হবে।” সত্যিই তো তাই। যদি জরুরী পরিষেবা চালু রাখতে হয় এবং সেক্ষেত্রে যদি পৌরসভার এই কর্মীদের প্রতিনিয়ত অফিস করতে হয় ছুটির দিনেও, তাহলে কেন তাদের পৌরসভা মানবিকতার খাতিরে বাড়তি পারিশ্রমিক দেবে না! এদিন এই প্রসঙ্গে আরামবাগ পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী 14 দিনের ছুটি ঘোষণা করেছেন। কিন্তু পৌরসভায় জরুরি বিভাগের কর্মীদের এক টানা 14 দিন ছুটি দেওয়া সম্ভব না। এতে জরুরী পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। সেই কারণে ছুটির দিনগুলিতে কর্মীদের শিফটিং ডিউটির মাধ্যমে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। পুজোর ছুটিগুলি কর্মীরা পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন মত নিতে পারবেন।” কিন্তু পৌরসভার চেয়ারম্যানের এই কথাতেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। পুজোর ছুটি তো পুজো দেখার জন্য। তাহলে পরবর্তীতে এই সমস্ত কর্মীদের ছুটি দিয়ে কি হবে! তাই সেদিক থেকে পুজোর ছুটি না দিলেও কেন তাদের বেতন দেওয়া হবে না! সেই ব্যাপারে নিজেদের প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে সেই কর্মচারীরা। এখন পুজোর সময় এই সমস্ত বিভাগের কর্মচারীদের দিয়ে আরামবাগ পৌরসভা কাজ করিয়ে নিলেও তাদের পারিশ্রমিক বাবদ কিছু দেয় কিনা! এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -