এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > গ্রেপ্তার গরুপাচার কাণ্ডের কিংপিন! ঘুম উড়বে একাধিক হেভিওয়েট নেতার? ‘হিটলিস্টে’ কাদের নাম?

গ্রেপ্তার গরুপাচার কাণ্ডের কিংপিন! ঘুম উড়বে একাধিক হেভিওয়েট নেতার? ‘হিটলিস্টে’ কাদের নাম?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – মালদহ মুর্শিদাবাদ থেকে বাংলাদেশে এমনকি দুবাইতেও কারবার চলছিল রমরমিয়ে। লেগেছিল শিল্পপতির তকমা। মুর্শিদাবাদ ছেড়ে একেবারে কলকাতার বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, সেখানেই অফিস। ঠিক যেন কোন সিনেমার মতো। একেবারে নিম্নবৃত্ত থেকে সমাজের উচ্চ স্তরে উঠে আসার গল্প।

বস্তুত, কথা হচ্ছে গরু পাচারের কিংপিন এনামুল হককে নিয়ে। যিনি শিল্পপতি সমাজসেবী এই তকমার আড়ালে যে দেশের পাচারকার্যের সঙ্গে ভালোমতোই যুক্ত, সে কথা জানা গিয়েছিল বহুদিন আগেই। সেইসঙ্গে কলকাতার অফিসে কয়েক মাস আগেই ইডি অফিসারদের হানায় সামনে উঠে এসেছিল তাঁর কালোবাজারির অনেক গল্প।

বস্তুত সমাজসেবীর আড়াল থেকেই এই ব্যবসার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল সে এবং বিভিন্ন প্রভাবশালীদের সঙ্গে সেভাবেই তার যোগাযোগ তৈরি হয়। আর তাদের সামনে রেখেই তিনি মূলত এই ব্যবসা চালাতেন বলেও জানা গেছে। সেই সঙ্গে তার আড়ালে চলত বস্ত্র দান, রক্তদান শিবিরের মত নানা কার্যক্রিয়া। এলাকাবাসীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাও দিতেন তিনি। এছাড়া রাইসমিল, ডালমিল প্রভৃতি কারখানার মাধ্যমেই তার কালো টাকাকে সাদা করে নিতে দেরি হতো না তার।

কিন্তু সম্প্রতি সেই এনামুল হক গ্রেপ্তার হওয়াতেই বেশ কিছু প্রভাবশালীরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বলেই মনে করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সেই প্রভাবশালীদের মধ্যে যে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও রয়েছেন, সে কথা আলাদা করে বলতে হয়না। এনামুলের সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানে তাদের ভালোমতোই দেখা যেত। তাই তাঁর গ্রেফতারে তাঁদের ভবিষ্যতও ধন্দে রয়েছে।

লালগোলার কুলগাছি গ্রামে তার আদি বাড়ি বলে জানা যায়। ছোট থেকেই ডানপিটে ছেলে হিসেবে তিনি এলাকায় পরিচিত ছিলেন। সেই সঙ্গে অল্পবয়সেই তার জুয়ায় আসক্তি হয়। আর সেই জুয়ার হাত ধরেই সে হেরোইন, গাঁজা পাচারের পেশায় নাম লেখায়। আর লালগোলা থেকেই সে সেসব বাংলাদেশে পাচার করত।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, প্রথমে ছোট আকারে ব্যবসা চালু করলেও পরে কলকাতা, বর্ধমান সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গাঁজা সাপ্লাই করত সে। ২০১৪ সালে বর্ধমানে তার গাঁজা ভর্তি একটি গাড়ি ধরা পড়ার পরই প্রথম সে পুলিশের নজরে আসে। কিন্তু বসিরহাটের এক প্রভাবশালীর আশ্রয়ে সে রেয়াত পেয়ে যায়। তার কাছ থেকেই সে গোরু পাচারের কৌশল শিখেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর আবারও লালগোলায় ফিরে আসে এনামুল।

তারপর ধীরে ধীরে মালদহ থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্ত কব্জা করে এনামুল। জানা যায়, ব্যবসা বড় হতেই বিভিন্ন রাজ্য থেকে এনামুলের লোকজন গোরু এনে বাংলাদেশে পাচার করত। এর মাধ্যমেই প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগাযোগও বাড়তে থাকে তার। বিভিন্ন রাজ্যে তার নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে যায় সেটা।

ফলে বাংলাদেশে পাচারের জন্য হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ থেকে গোরু আনতেও তার সুবিধা হত। আর এর মধ্যেই সে বিপুল টাকার মালিক হয়ে ওঠে। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, তার দলবল দিনের বেলাতেও জঙ্গিপুর ও লালগোলা শহরের উপর দিয়ে হাজার হাজার গোরু নিয়ে যেত। কিন্তু অনেক সময় গোরুবোঝাই ট্রাকের সামনে পুলিসের গাড়ি থাকলেও পুলিসের তরফে কোনও বাধা দেওয়া হত না।

আর প্রভাবশালীদের হাত করেই সে যে সীমান্তের এই কালো কারবার চালাত, সেটা করো আজানা নয়। আর তাই সে নিজেকে সমাজসেবী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে। তারপর থেকেই রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তার সখ্যতা বাড়তে থাকে। গ্রেপ্তার হওয়ার দু’মাস আগে পর্যন্ত তাকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে, সে ব্যবসা করে এবং আইন মেনে প্রতি বছর ট্যাক্স দেয়, এমন দাবি করতে দেখা যায় তাকে। কিন্তু সিবিআই ইতিমধ্যে এনামুলের যে দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে, তাতে একাধিক প্রভাবশালীর নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে শেষ পর্যন্ত কি হয় এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!