এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > এত বছর পর হাওয়ালা কেলেঙ্কারি রাজনৈতিক জগতে প্রাসঙ্গিক মমতা ব্যানার্জ্জীর হাত ধরে, বিতর্ক চড়ছে ক্রমশ

এত বছর পর হাওয়ালা কেলেঙ্কারি রাজনৈতিক জগতে প্রাসঙ্গিক মমতা ব্যানার্জ্জীর হাত ধরে, বিতর্ক চড়ছে ক্রমশ


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে সবথেকে বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের বিরুদ্ধে হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ। গতকাল থেকেই শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর এই প্রসঙ্গে। রাজ্যপাল যথারীতি দাবি করেছেন তিনি হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে মোটেই জড়িত ছিলেননা। পাল্টা দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। প্রসঙ্গত নব্বইয়ের দশকে এই হাওয়ালা জৈন কেলেঙ্কারি জাতীয় রাজনীতিতে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল। চার্জশিটে শাসক দল কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিরোধী দল বিজেপির হেভিওয়েট নেতাদের নাম পাওয়া গিয়েছিল।

এমনকি তৎকালীন লোকসভার বিরোধী দলনেতা লালকৃষ্ণ আদবাণী পর্যন্ত পদত্যাগ করে জানিয়েছিলেন, তদন্তে তিনি নির্দোষ প্রমানিত না হলে লোকসভায় আর আসবেননা। দীর্ঘ সময় পার হয়ে আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে বাংলার রাজনীতিতে হাওয়ালা জৈন কেলেঙ্কারি। মূলত কোন প্রমাণ না রেখে টাকা লেনদেনের বিষয়টিকেই বলা হয় হাওয়ালা চক্র। অর্থাৎ সরকারকে ফাঁকি দিয়ে বিশাল টাকা এদিক ওদিক করা হয় হাওয়ালার মাধ্যমে। প্রসঙ্গত, এই হাওয়ালা লেনদেন শুধুমাত্র পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ যেকোনো রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব, আমলা বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ঘুষ দেওয়ার জন্য টাকার লেনদেন হয় এই হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে।

এই একই পদ্ধতিতে জঙ্গিরাও যে অর্থ সংগ্রহ করে, সে তথ্যও প্রকাশ্যে এসেছে। নয়ের দশকের শুরুতে একজনকে গ্রেপ্তার করার পরেই হাওলা কেলেঙ্কারির কথা সামনে এসেছিল। 1991 সালের 25 শে মার্চ দিল্লিতে গ্রেপ্তার হয় কাশ্মীরের জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের অপারেটর আশফাক হোসেন লোন। সে জেরার মুখে স্বীকার করে তাঁদের জঙ্গি সংগঠন হাওয়ালা চ্যানেলের মারফত টাকা পেয়ে থাকে। এবং এই চ্যানেলটি চালায় সুরেন্দ্রকুমার জৈন নামক এক ব্যবসায়ী এবং তাঁর পরিবারের বেশ কয়েকজন। এর পরেই তদন্তে নামে সিবিআই। সুরেন্দ্র জৈন ও তাঁর আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুদের বাড়ি খানাতল্লাশি করতে শুরু করে সিবিআই। আর তারপর একের পর এক তথ্য সামনে আসতে থাকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সিবিআইয়ের হাতে সেই সময় দুটি নোটবুক এবং দুটি ডায়েরি এসেছিল। যে নোটবুক ও ডাইরিতে জৈন ভাইয়েরা হাওয়ালা চ্যানেলে কাদের টাকা পাঠানো হয়েছে, তাঁদের নাম লিখে রাখত। আর সেখানেই সিবিআই তদন্ত থমকে যায়। গোয়েন্দা সংস্থার যে অফিসাররা এই তদন্ত চালাচ্ছিল, তাঁদেরকে অজানা কারণে বদলি করে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ তুঙ্গে ওঠে নিশ্চিতভাবে এই কেলেঙ্কারিতে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের নাম আছে বলে। কিন্তু সিবিআই তদন্ত বন্ধ হয়ে গেলেও হাওয়ালা নিয়ে খোঁজখবর চালাচ্ছিলেন বেশকিছু সাংবাদিক। তাঁদের মধ্যে থেকে একজন হলেন বিনীত নারায়ণ। তিনি জনস্বার্থের মামলা করেন শীর্ষ আদালতে।

যেখানে তিনি দাবি করেন, এই কেলেঙ্কারিতে বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং আমলারা যুক্ত রয়েছেন। এবং শোনা যাচ্ছিল যারা এই হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন লালকৃষ্ণ আদবাণি, বিদ্যাচরণ শুক্লা, দেবীলাল, শরদ যাদব, বলরাম জাখর এবং মদনলাল খুরানা। সেসময় লালকৃষ্ণ আদবাণির এবং মদনলাল খুরানার ভাবমূর্তি ছিল আকাশছোঁয়া। স্বাভাবিকভাবেই এই দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁদের নাম জড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয় তাঁদের। তবে সেসময় জগদীপ ধনকরের নাম শোনা যায়নি। যদিও তিনি সেসময় কোন বিখ্যাত ব্যক্তি যে ছিলেননা তাও সত্যি।

বরাবরের মতন আমাদের দেশে যা হয়, যেকোনো দুর্নীতি কান্ডে যদি কোন হেভিওয়েট ব্যক্তি জড়িত থাকে তাহলে পরবর্তীতে সেই দুর্নীতি কান্ড চাপা পড়ে যায়। হাওয়ালার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন দীর্ঘদিন পরে সেই হাওয়ালা কেলেঙ্কারি। 1997 সালের সুপ্রিম কোর্ট প্রমাণের অভাবে অনেককেই মুক্তি দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকে মারা গেছেন, অনেকে বয়সের ভারে বৃদ্ধ। এই অবস্থায় রাজনৈতিকভাবে হাওয়ালা কেলেঙ্কারির কথা সামনে আসায় রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা অন্যমাত্রা তো পেলই, পাশাপাশি এই মামলায় যুক্তদের নতুন করে অস্বস্তি শুরু বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!