গুরুত্ব পাচ্ছেন না পুরনো কর্মীরা, ফালাকাটায় বিজেপি প্রার্থী নিয়ে শোরগোল তুঙ্গে! উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য February 2, 2020 দলকে জেতাতে গেলে একতার প্রয়োজন। একতা না থাকলে যে দলের ভয়াবহ ফলাফল হতে পারে, তা গত লোকসভা নির্বাচনেই বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের হারের ফলেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শাসকদলের এহেন তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলা দখলের দিকে এগিয়ে যাওয়া ভারতীয় জনতা পার্টি নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দলেই মশগুল রয়েছে বলে দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। সামনেই ফালাকাটা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তৃণমূলের বিধায়ক অনিল অধিকারী প্রয়াত হওয়ার কারণেই এই কেন্দ্রের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর উত্তরবঙ্গের এই হেভিওয়েট কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভালো ফলাফল করার মধ্যে দিয়ে শাসক-বিরোধী দুই রাজনৈতিক দল আগামী দিনে একে অপরকে টেক্কা দিতে। কিন্তু বিজেপি তৃণমূলকে পর্যুদস্ত করে, এই কেন্দ্র দখলের ব্যাপারে নানা পরিকল্পনা করলেও, যেভাবে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে বিজেপির অন্দরে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তাতে রীতিমত অস্বস্তিতে ভারতীয় জনতা পার্টি। জানা গেছে, ফালাকাটা বিধানসভায় দলের অত্যন্ত পুরনো মুখ বলে পরিচিত হেমন্ত রায়কে প্রার্থী করার দাবিতে আজ বৈঠকে বসছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। সূত্রের খবর, রবিবার আলিপুরদুয়ারের পলাশবাড়ি, ফালাকাটার খাড়াকদম এবং জটেশ্বর বাজারে বিজেপির পুরনো নেতাকর্মীরা বৈঠক করবে। যে বৈঠকে ফালাকাটা বিধানসভায় দলের প্রার্থী হিসেবে হেমন্ত রায়কে প্রার্থী করবার জন্য তারা লিখিত প্রস্তাব নেবে। আর তারপরেই তা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে খবর। আর বিজেপির পুরনো নেতাকর্মীদের এহেন বৈঠক যে বিজেপি জেলা নেতৃত্বকে চরম পরিমাণে ভাবাতে শুরু করেছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় সকলেই। কেননা বিজেপির মত সাংগঠনিক দলে প্রার্থী ঠিক করে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেদিক থেকে দলের পুরোনো নেতাকর্মীরা বসে প্রার্থী হিসেবে হেমন্তবাবুর স্বপক্ষে লিখে রাজ্য নেতৃত্বর কাছে পাঠানোয় দলে গোষ্ঠী কোন্দল আরও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - যা আগামী বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির কাছে বড় এফেক্ট হিসেবে দেখা দেবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। কিন্তু বিজেপিতে কেন এই ধরনের কাজ চলছে! যেখানে বিজেপি শৃঙ্খলাপরায়ন দল বলে নিজেদের দাবী করে, সেখানে দলের প্রার্থী কে হবে, তা নিয়ে নেতাকর্মীদের দাবি কি দলকে বিপাকে ফেলবে না! এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “লোকসভা ভোটে আলিপুরদুয়ারে দল সাড়ে সাত লক্ষ ভোটে জিতেছিল। যারা হেমন্তবাবুকে প্রার্থী করতে চাইছে, তারা দলের কোনো পদে নেই। আমরা এসবকে পাত্তা দিচ্ছি না। প্রার্থী কে হবে, তা দলই ঠিক করবে।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে দলের জাতীয় পরিষদের সদস্য গুণধর দাস বলেন, “পুরোনোদের এই প্রস্তাব এবং বৈঠকের খবর আমার জানা নেই। এসব না হওয়াই বাঞ্ছনীয় ছিল। কাউকে প্রার্থী করবার জন্য দলের কর্মীরা প্রস্তাব দিতেই পারেন। তবে উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী কে হবেন, তা দলই ঠিক করবে।” কিন্তু তাকে প্রার্থী করার ব্যাপারে যেভাবে একাংশ উদগ্রীব হয়ে রয়েছে এবং তার নামে লিখিত প্রস্তাব পাঠাচ্ছে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে, এতে তাঁর মনোভাব কি! এদিন এই প্রসঙ্গে সেই হেমন্ত রায় বলেন, “দলের পুরোনো কর্মীরা উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে আমাকে জোর করছেন। রবিবার বৈঠক করে তারা আমাকে প্রার্থী করার দাবিতে প্রস্তাব নিয়ে সেই প্রস্তাব দলের কাছে পাঠাচ্ছে। কিন্তু প্রার্থী হব কিনা, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি।” তবে হেমন্তবাবু যে কথাই বলুন না কেন, দলের কর্মীদের ইচ্ছা এবং গোটা ঘটনা সম্পর্কে যে তিনি অবহিত, তা তার কথার মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার হয়ে গেল। তাই একাংশ মনে করছেন যে, হেমন্তবাবুর কলকাঠিতেই তাকে প্রার্থী করার জন্য তার অনুগামীরা উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন। আর তাই তারা এহেন লিখিত প্রস্তাব পাঠাতে উদ্যত হয়েছেন। তবে এই পরিস্থিতিতে এখন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ফালাকাটা বিধানসভা উপনির্বাচনে কাকে প্রার্থী করে এবং সেই প্রার্থী বিজেপি নেতা কর্মীদের কতটা মনঃপুত হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -