এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > সাংবাদিকতার জগতে নক্ষত্রপতন! সত্যের প্রতি আনুগত্য রেখে মাত্র ৫৮তেই নিভল কিংবদন্তীর জীবনদীপ

সাংবাদিকতার জগতে নক্ষত্রপতন! সত্যের প্রতি আনুগত্য রেখে মাত্র ৫৮তেই নিভল কিংবদন্তীর জীবনদীপ


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গতকাল সাংবাদিকতার জগতে ঘটে গেল এক বিরাট ইন্দ্রপতন। সত্যানুরাগী, নির্ভীক, কর্মনিষ্ঠ সংবাদদিক রোহিত বসুর জীবনদীপ মাত্র ৫৮ বছর বয়সে নির্বাপিত হলো। সত্যনিষ্ঠ, ন্যায়ের পথের পথিক, আদ্যন্ত নির্ভীক, নিরপেক্ষ হিসাবে পরিচিত রোহিতবাবু সাংবাদিকতার জগতে এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতির – এমন চুলচেরা, ক্ষুরধার বিশ্লেষণে তিনি সত্যি বিরল ছিলেন। নাম, যশ, অর্থ বা আপন রাজনৈতিক মতের প্রতি আনুগত্য – কোনোটাই তাঁর সাংবাদিকতার পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

তার সোজাসাপ্টা কলমে, সহজবোধ্য কথায়, শব্দের মারপ্যাঁচহীন ঝরঝরে গদ্যে লেখা সংবাদগুলি হয়ে উঠেছে যেন মহাকালের দলিল। নিজের রাজনৈতিক বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাবান, নিষ্ঠাবান থেকেও তিনি তা নিজের মনেই রেখেছেন, সাংবাদিকের কলমের কালি হতে দেন নি কোনোদিন। বর্তমান কালে গণতন্ত্রের চতুর্থস্তম্ভ রূপী সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা যেখানে বারবার অর্থ, নাম যশের কাছে নিজেকে বন্ধক দিয়েছে বা নিরপেক্ষতা ভুলে কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের পদলেহনে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে – সেই সময়ে রোহিত বাবুরমতো সাংবাদিক একেবারেই বিরল বলে দাবি করেন অনেকেই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

রোহিতবাবু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন দল, মত, অর্থ, খ্যাতি নয়, সাংবাদিকের চোখ যেন সত্যের দিকেই নিবদ্ধ থাকে। এমনি সত্য, ন্যায়ের কান্ডারি কাল দুপুরে নীরবে, নিভৃতে ইহলোক ত্যাগ করলেন। নয়-এর দশক থেকে তাঁর সাংবাদিকতায় পদচারণা আনন্দবাজার পত্রিকায়। মূলত রাজনৈতিক সাংবাদিকতা ছিল তাঁর বিষয় – পরে তিনি সেই পত্রিকার সংবাদ ব্যুরোর প্রধানরূপে মনোনীত হন। এরপর একে একে তিনি কাজ করেছেন খাস খবর, তারা নিউস-এর চ্যানেলে বা একদিন, কলমের মতো সংবাদপত্রে। গত দুবছর ধরে তিনি উত্তরবঙ্গ সংবাদের সহযোগী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

কর্মযোগী এই মানুষটি কলকাতার নিজ আবাস ছেড়ে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ সংবাদের আবাসনে একাই বাস করতেন। শোনা যায় দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড সুগারে ভুগছিলেন, সেই সঙ্গে ভুগছিলেন হৃদযন্ত্রের সমস্যায়। তবে সবকিছুই সোয়েছিলেন নীরবে। হঠাৎ বেশি অসুস্থ বোধ করে মঙ্গলবার ভোরবেলায় তিনি কলকাতার উদ্দেশ্যে গাড়িতে রওনা হন। সেদিন সন্ধ্যায় তিনি নিজের গৃহে পৌঁছেও যান। কিন্তু পরদিন বুধবারে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটে। তার পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে প্রস্তুত হন। কিন্তু পথেই তাঁর জীবনদীপ নির্বাপিত হয়।

রেখে যান স্ত্রী ও একমাত্র কন্যাকে। মৃত্যুর পর নিয়মাফিক টেস্ট রিপোর্টে তার করোনা ধরা পরে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার মৃত্যতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ছাত্র কাল থেকে রোহিতবাবু বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে সিপিএম-এর গোষ্ঠী রাজনীতির শিকার হয়ে রাজনীতি থেকে সরে আসেন। তিনি ছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের একজন মেধাবী ছাত্র। বাম রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেও বাম আদর্শের প্রতি তিনি চিরকালই আস্থাশীল ছিলেন। কিন্তু নিজের সাংবাদিকতাকে তিনি কখনোই রাজনীতির ময়দান হতে দেননি, আজকের যুগে যা অত্যন্ত বিরল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!