এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > ফারাক্কা সেতু দুর্ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত, বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে প্রশ্ন

ফারাক্কা সেতু দুর্ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত, বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে প্রশ্ন


সেতু দুর্ঘটনা যেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পিছু আর ছাড়তেই চাইছেনা। মাত্র দেড় বছরের মাথাতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ফারাক্কার নির্মীয়মাণ ব্রিজ। ফারাক্কা ব্রিজ ভেঙে প্রাণ গেল দুজনের। 2019 সালের পয়লা জানুয়ারি ফারাক্কার এই সেতুটি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। সূত্রের খবর, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এই কাজটি শুরু হয়। রবিবার সন্ধ্যায় নির্মীয়মান এই ব্রিজের 1 ও 2 নম্বর পিলারের মধ্যে গার্ডার বসানোর কাজ চলছিল। সেসময় বিপত্তি ঘটে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে 12 নম্বর পিলারের মাঝের অংশটি। আর এই দুর্ঘটনার কারণ নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

সূত্রের খবর, এখনো পর্যন্ত ফারাক্কা সেতু দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন হলেন প্রজেক্ট ম্যানেজার শ্রীনিবাস এবং অন্যজন হলেন ট্রেনি ইঞ্জিনিয়ার শচীন প্রতাপ। এছাড়াও আরও গুরুতর আহত হয়েছেন 5 জন, যাঁরা মালদা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। ইতিমধ্যে, ফারাক্কা সেতু দুর্ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কার গাফিলতিতে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলো। অন্যদিকে জানা গেছে, টেন্ডারের মাধ্যমে ফারাক্কা সেতু রেল মেরামতের দায়িত্ব পেয়েছিল আর কেইসি নামে একটি সংস্থা। সেই সংস্থার স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার পার্থপ্রতিম বিশ্বাস জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় নিহতরা ও আহতরা কোনরকম সুরক্ষা বিধি না মেনেই ফারাক্কা ব্রিজে কাজ করছিলেন। এই বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করতেই খোঁজখবর চালাতে শুরু করেছে তদন্তকারী দল।

সূত্রের খবর, ফারাক্কা সেতুর গার্ডার ভেঙে যাওয়ার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিকট শব্দে সেতুটি ভেঙে পড়ার পরেই স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসে এবং তাঁরাই উদ্ধারে প্রথম হাত লাগায়। অন্যদিকে, পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরাও খুব তাড়াতাড়ি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান। উদ্ধার করার পর আহতদের নিকটবর্তী মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আপদকালীন পরিস্থিতিতে ভর্তি করা হয়। তখনই চিকিৎসকরা প্রজেক্ট ম্যানেজার শ্রীনিবাসন ও ট্রেনিং ইঞ্জিনিয়ার শচীন প্রতাপের দিকে ইঙ্গিত করে জানান, তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর তারপরেই তাঁদের মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, এই দুজনেরই বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন ঘটনাস্থলে যান লোকসভার কংগ্রেসের দল নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই বলে, দুর্ঘটনার দিনটি যদি রবিবার না হয়ে অন্য দিন হতো, তাহলে হতাহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি হত। অন্যদিকে, এদিন মালদার উত্তরের সংসদ খগেন মুর্মু ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এবং তিনি সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন ঘটনার তদন্ত হবে এবং ঘটনার পিছনে কে বা কারা আছে চিহ্নিত করে তাঁদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সেতু তৈরিতে পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকলেও থাকতে পারে।

সোমবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান মালদার বৈষ্ণবনগর বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন সরকার ও ফারাক্কার বিধায়ক মইনুল হক। তদন্তের স্বার্থে অবশ্য কোনো রাজনৈতিক নেতাই বিশেষ কিছু বলেননি বলেই জানা গেছে। তবে কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী এদিন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানানো হয়েছে ফারাক্কা জলাধারের পাশাপাশি আরেকটি নতুন ব্রিজ তৈরি করার ব্যাপারে। এছাড়াও যে লকগেটগুলো খারাপ হয়ে গেছে তা দ্রুত মেরামতের দাবিও করা হয়েছে। কিন্তু এখনও এই দু’টি দাবির কোনোটিই মেটানো হয়নি।

ইতিমধ্যে, বিভিন্ন মহল থেকে এই দুর্ঘটনা নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। দুর্ঘটনার নেপথ্যে প্রকৃত কারণ জানতে ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ইতিমধ্যে দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি উঠেছে। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠে এই মুহূর্তে পুরো ব্যাপারটি তদন্তের অধীন। পুরো পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!