প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   ভুয়ো, প্রতারণা, এই সমস্ত কিছু নিয়েই এখন সরগরম গোটা রাজ্য। কিছুদিন আগেই কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিনের ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। গ্রেপ্তার হয়েছেন মূল পান্ডা দেবাঞ্জন দেব। আর তারপর থেকেই হেভিওয়েট পরিচয় ভাঙ্গিয়ে কিভাবে দেবাঞ্জন দেব এই ভুয়ো ভ্যাকসিনের কাণ্ড ঘটালেন, তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। বাড়তি সর্তকতা অবলম্বন করেছে প্রশাসন। কিন্তু তার মাঝেই আবার ভুয়ো সিআইডির পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। যেখানে চাকরি দেওয়ার নাম করে বেশ কিছু টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্বাভাবিক ভাবেই দেবাঞ্জন দেবের ভ্যাকসিনের ঘটনার পর এক মহিলার সিআইডি পরিচয় দিয়ে প্রতারণা নিঃসন্দেহে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করল গোটা রাজ্যজুড়ে।

জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর এলাকায় সিআইডির বড় আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে এক মহিলা বহু মানুষকে প্রতারণা করেছেন। মূলত, সমাজকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিজের দাপট দেখাতেন রাধারানী বিশ্বাস নামে সেই মহিলা। মুনমুন খাতুন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার নাম করে 10 লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি গৌরব চট্টোপাধ্যায় নামে আরও এক ব্যক্তিকে স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে 5 লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন রাধারানী দেবী। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে গোটা বিষয়টি পরিস্কার হতে শুরু করে। উচ্চপদস্থ সিআইডি আধিকারিকের পরিচয় দিলেও, তার সমস্তটাই যে ভুয়ো, ধীরে ধীরে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। আর এরপরই সেই রাধারানী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ইতিমধ্যেই এই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকা জুড়ে। কিছুদিন আগেই কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে রাজ্য। আর তারপর থেকেই নানা মহলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার সিআইডির পরিচয় দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে যেভাবে এক মহিলার কুকীর্তি সামনে এলো, তাতে চক্ষু চড়কগাছ একাংশের। এদিন এই প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের দলের বড় বড় নেতার সঙ্গে রাধারানী বিশ্বাসের পরিচয় রয়েছে। প্রচুর মানুষকে উনি সাহায্য করেছেন। উনি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। তবে উনি একটা বিশাল নতুন বাড়ি করছেন। আমার কাছে খবর রয়েছে, ইতিমধ্যেই উনি 17 জনকে প্রতারণা করেছেন।”

স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যের পর চাঞ্চল্য আরও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। দেবাঞ্জন দেবের ঘটনা ঘটার পর তার সঙ্গে অনেক তৃণমূল নেতার ছবি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছিল। যাকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। এবার এই ভুয়ো সিআইডি আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে মহিলার প্রতারণার পর যদি একইভাবে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার খবর সামনে আসে, তাহলে শাসকদল আরও চাপের মুখে পড়ে যাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা‌। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তদন্তে ঠিক কি উঠে আসে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।