এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > নিজেদের পৌরসভাকেই “ইউজলেস-অকর্মণ্য” বলে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জল্পনা বাড়ালেন ফিরহাদ হাকিম!

নিজেদের পৌরসভাকেই “ইউজলেস-অকর্মণ্য” বলে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জল্পনা বাড়ালেন ফিরহাদ হাকিম!


সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে অনেক আসনেই তৃণমূল প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। যেখানে দেখা গেছে, পৌরসভা ভিত্তিক ফলাফলে রাজ্যের প্রায় সিংহভাগ পৌরসভা এলাকাতেই হেরে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই পরিস্থিতিতে পুর এলাকায় দলের কাউন্সিলরদের ঔদ্ধত্য যে প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। তবে লোকসভায় এই খারাপ ফলাফলের পরই যে সমস্ত পৌরসভা শাসক দলের দখলে রয়েছে, সেই সমস্ত পৌরসভার কাউন্সিলরদের ভালো করে জনসাধারণের কাজ করার নির্দেশ দেয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

কেননা নতুন বছর পড়তে না পড়তেই পৌরসভা নির্বাচনের দামামা বেজে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে সেদিক থেকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি সেই পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল ভালো না করতে পারে, তাহলে তাদের কাছে যে তা প্রবল সমস্যার কারণ হবে, তা বুঝতে বাকি নেই কারোরই। তাই এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পৌরসভার পক্ষ থেকে বেশ কিছুদিন আগে থেকে আয়োজিত করা হয়েছিল “টক টু মেয়র” অনুষ্ঠান।

যেখানে সেই কলকাতা পৌরসভা এলাকার বাসিন্দারা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে ফোন করে তাদের সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে সেই সমস্যার সমাধানও হচ্ছে। তবে কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে এবার ফোন করে অভিযোগ জানাতে দেখা গেল রাজপুর-সোনারপুর পৌরসভা এলাকার বাসিন্দাদের। যা শুনে রীতিমতো তিতিবিরক্ত হতে দেখা গেল রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পৌরসভার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শুনে রাজ্যের পুরমন্ত্রী বলতে বাধ্য হন, “ইউজলেস পৌরসভা হচ্ছে সোনারপুর।” আর নিজেদের দলের পরিচালিত পৌরসভার বিরুদ্ধে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা তথা পুরমন্ত্রীর এই মন্তব্য এখন প্রবল জল্পনার সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক মহলে। জানা যায়, এদিন কলকাতা পুরভবনে টক টু মেয়র অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজপুর- সোনারপুর পৌরসভার নাগরিকেরা একের পর এক পুরমন্ত্রীর কাছে ফোন করে সেখানকার বেহাল অবস্থার কথা জানিয়েছেন।

পৌরসভার কাউন্সিলর এবং পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারা সাধারণ মানুষের সমস্যা মেটান না বলে বাসিন্দাদের তরফে জানানো হয় রাজ্যের পুরমন্ত্রীর কাছে। হরিনাভির এক যুবক বলেন, “চৌহাটিতে বেহাল রাস্তা মেরামত হচ্ছে না।” অন্যদিকে বোড়ালের এক মহিলা পুরমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানান যে, তার ফ্ল্যাটের এক ভাড়াটে ভাড়া না দেওয়ায় তিনি কাউন্সিলের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা পাননি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এছাড়াও নিকাশি ব্যবস্থার ড্রেনেজ সিস্টেম, বেআইনি বাড়ি নির্মাণ সহ একাধিক অভিযোগ সেই অনুষ্ঠানে পুরমন্ত্রীর কাছে করেন সেই সোনারপুর পৌরসভার বাসিন্দারা। আর এইসব শুনেই রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “রাজপুর-সোনারপুর পৌরসভা একেবারেই ইউজলেস। মানুষের কোনো কাজে লাগছে না।” আর নিজের দলের পৌরসভার বিরুদ্ধে পুরমন্ত্রীর এই মন্তব্য এখন প্রবল জল্পনার সৃষ্টি করেছে সর্বত্র।

অনেকে বলছেন, তাহলে কি এই পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলররা আগামী পৌরসভা নির্বাচনে টিকিট পাচ্ছেন না! তাদের ডানা ছাটতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস! আর তাই সাধারণ মানুষের ক্ষোভ থেকে সেই পৌরসভার কাউন্সিলরদের উপর ভরসা না-রেখে পুরমন্ত্রী এই ধরনের মন্তব্য করলেন! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী পৌরসভা নির্বাচন তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিধানসভা নির্বাচনের আগে অ্যাসিড টেস্ট। তাই সেদিক থেকে রাজ্যের প্রায় যে সমস্ত পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে স্বচ্ছ ব্যক্তিদের টিকিট দিতে চায় দল।

এদিন টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে যেভাবে পুরমন্ত্রীর কাছে রাজপুর-সোনারপুর পৌরসভা বাসিন্দারা লাগাতার সেখানকার অবস্থা নিয়ে অভিযোগ জানালেন, তাতে পুরমন্ত্রী যে সেই পৌরসভার বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষুব্ধ, তা তার বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার হয়ে গেল। আর তাই সেই পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর পুর নির্বাচনে টিকিট নাও পেতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে তৃণমূলের হেভিওয়েট শীর্ষ নেতা তথা পুরমন্ত্রীর এই পৌরসভার বিরুদ্ধে মন্তব্য এখন প্রবল চাপে ফেলে দিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষকে।

এদিন এই প্রসঙ্গে এই পৌরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস বলেন, “মন্ত্রী কোন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য করেছেন, সেই ব্যাপারে বিস্তারিত জানার পর প্রতিক্রিয়া দিতে পারব। তার আগে কোনো কথা বলতে পারি না। কারণ ওই অনুষ্ঠানের মধ্যে আমি ছিলাম না। এতটুকু বলতে পারি, রাজপুর-সোনারপুর পৌরসভা নাগরিকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সব কাজ করছে। পুরমন্ত্রী আমাদের পৌরসভাকে নানাভাবে সাহায্য করছেন। সেদিক থেকে তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”

তবে পৌরসভার পৌরপ্রধান শাক দিয়ে যতই মাছ ঢাকার চেষ্টা করুন না কেন, যেভাবে পুরমন্ত্রীর কাছে ফোন করে এই পৌরসভার নাগরিকেরা পৌরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন, তাতে রাজ্যের শাসক দল তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এই রাজপুর সোনারপুর পৌরসভা নিয়ে যে অত্যন্ত ক্ষিপ্ত, তা স্পষ্ট হয়ে গেল। সব মিলিয়ে এখন পুরমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রভাব আগামী পৌরসভা নির্বাচনে সেখানকার কাউন্সিলরদের টিকিট পাওয়ার ওপরে কতটা প্রভাব ফেলে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!