এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মহাত্মা গান্ধীতে ভরসা রেখেই রাজ্যজুড়ে গেরুয়া ঝড়ের পরিকল্পনায় বিজেপি, কটাক্ষ শাসকদলের

মহাত্মা গান্ধীতে ভরসা রেখেই রাজ্যজুড়ে গেরুয়া ঝড়ের পরিকল্পনায় বিজেপি, কটাক্ষ শাসকদলের


জাতির জনক হিসেবে পরিচিত মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর এবছর দেড়শ তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে সারা দেশজুড়ে। বিজেপি গান্ধীবাদী দল না হলেও জাতির জনকের জন্ম সার্ধশতবর্ষ পালন করে সারা দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি নিতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। যার ব্যতিক্রম নয় এই রাজ্যও।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে গান্ধীজিকে শিখন্ডী করে রাজ্যের বিভিন্ন সংসদীয় ক্ষেত্রে দলীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে পদাধিকারী, কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পদযাত্রা করতে উদ্যোগী গেরুয়া শিবির। জানা গেছে, রাজ্যের 42 টি লোকসভা কেন্দ্রে আগামী 15 থেকে 26 অক্টোবর জাতির জনকের নামকে সামনে রেখে গান্ধী সংকল্প যাত্রার আয়োজন করা হয়েছে বিজেপির তরফে। তবে এবার এই কর্মসূচি নিয়ে কিছুটা সাবধানী গেরুয়া শিবির। কেননা এর আগে রাজ্যজুড়ে রথযাত্রা পরিকল্পনা করলেও আদালতের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত তা কাটছাঁট করে সংক্ষিপ্ত আকারে পালন করতে হয় মুরলীধর লিনের কর্তাদের।

তাই এবার কিছুটা অরাজনৈতিক মোড়কে জাতির জনকের জন্মদিনকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে পদযাত্রা করে একদিকে যেমন নিজেদের রাজনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটাতে চাইছে গেরুয়া শিবির, ঠিক তেমনই শাসক দল যাতে না বাধা দিতে পারে, তার পরিকল্পনাও করছে তারা বলে দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তবে বিজেপি গান্ধীজিকে নিয়ে এই কর্মসূচি করলেও তা নিয়ে পাল্টা তাদের কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিধানসভার কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তার দাবি, “বিজেপির এই সমস্ত কর্মসূচি হচ্ছে ভণ্ডামো। কয়লাকে যতই পরিস্কার করা হোক, তা কখনো সাদা হয় না। সেরকমই বিজেপির অতীত–বর্তমান কখনই গান্ধীর আদর্শ ভাবনার সমার্থক হবে না। বাংলায় তৃণমূলের প্রতি সাধারণ মানুষের জনবিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি সস্তা রাজনীতিতে নেমেছে। এতে ওরা বিশেষ লাভ করতে পারবে না।”

তবে আব্দুল মান্নান এই ব্যাপারে বিজেপিকে কটাক্ষ করলেও তাতে গুরুত্ব দেননি বিজেপি নেতারা। রবিবার দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে তাদের কর্মসূচির কথা জানিয়ে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তিনি বলেন, “গান্ধীজীর সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে প্রত্যেক লোকসভা কেন্দ্র থেকে একটি করে পদযাত্রা বেরোবে। যেখানে সুসজ্জিত ট্যাবলোতে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ভারতীয় জনতা পার্টির পতাকা থাকবে, জাতীয় সংগীত বাজবে।” কিন্তু যদি তৃণমূলের তরফে এই গান্ধীজীকে নিয়ে বিজেপির এই পদযাত্রাকে বাধাপ্রাপ্ত করা হয়! তাহলে বিজেপি নেতারা কি করবেন! এদিন এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমাদের ধারণা রাজ্য সরকার আমাদের এই কর্মসূচিতে বাধা দেবে না। কারণ এর সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর নাম জড়িয়ে রয়েছে। যে প্রান্ত দিয়ে আমাদের এই সংকল্প পদযাত্রা যাবে, স্থানীয় প্রশাসনকে তা জানানো হবে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গে গান্ধীজিকে নিয়ে তাদের এই কর্মসূচির কথা জানিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করলেন। একদিকে অতীতের মতো ভুল না করে ঠিক যেমনটা তারা রথযাত্রা করেছিলেন ঠিক তেমনটা না করে, গান্ধীজিকে নিয়ে কর্মসূচির আলাদা নাম দিলেন, আবার তেমনই শাসকদল যদি এটাতে বাধা দিতে আসে তাহলে তাদের প্রতি গান্ধীজীর শ্রদ্ধা নেই বলেও শাসকের বিরুদ্ধে প্রচার করতে পারবে বিজেপি।

ফলে দুই দিক থেকেই সুবিধা করে নিজেদের দলের জন্য এবার রাস্তায় নামতে চলেছে গেরুয়া শিবির বলে মত বিশ্লেষকদের। তবে বিজেপি তাদের এই কর্মসূচির কথা জানালে তা নিয়ে পাল্টা তাদের খোচা দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “মহাত্মা গান্ধীর ছবি স্পর্শ করার অধিকার বিজেপি নেতাদের নেই।

কেননা ওই দলের এক সদস্য জাতির জনককে হত্যা করেছিলেন। তাই আগামী 15 থেকে 26 অক্টোবর রাজ্যজুড়ে বিজেপি যেন লজ্জা দিবস পালন করে।” সব মিলিয়ে এবার মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে তার সার্ধশতবর্ষে কে সবথেকে বেশি গান্ধীপ্রেমী, তা প্রমান করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতির সমস্ত রাজনৈতিক দল বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!