দীর্ঘ 13 বছর পর অবশেষে ফের রাজপথে ধরনায় দেখা গেল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্যের ক্ষমতা দখলের আগে দীর্ঘ বাম আমলে বিরোধী নেত্রী থাকার সময় সিঙ্গুরের কৃষকদের জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে বামেদের বিরুদ্ধে 2006 সালের ডিসেম্বর মাসে এই মেট্রো চ্যানেলে বসেই টানা 26 দিন অনশন অবস্থান করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পরেই রাজ্যে এসেছে পরিবর্তন।

এখন তিনি মুখ্যমন্ত্রী। আর তাই এবারে 2019 সালে লোকসভা নির্বাচনের দোরগোড়ায় এসে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ফের গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেই মেট্রো চ্যানেলেই অবস্থানে বসলেন বাংলার অগ্নিকন্যা। জানা যায়, গতকাল কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। আর তারপরই কেন্দ্রের তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিরোধীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে মোদীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে রাজপথে ধরনায় অবতীর্ণ হন মমতা।

সূত্রের খবর, রাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “কেন্দ্রের মোদী-শাহ জুটি সিবিআইয়ের মত এজেন্সিকে ব্যবহার করে বাংলায় অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী পাগল হয়ে গিয়েছে। আর তাই সংবিধানকে হত্যা করতে বিজেপির বিরুদ্ধে আমি ধরনা কর্মসূচিতে যাচ্ছি। এই ধরনা আসলে সত্যাগ্রহ। যতক্ষণ না অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।” আর যেমন বলা তেমনই কাজ। রাতেই খোলা আকাশের নিচে দীর্ঘদিনের সহকর্মী তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সাথে নিয়ে মেট্রো চ্যানেলের সামনে অবস্থানে বসে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিকে প্রিয় দলনেত্রী অবস্থানে বসার সাথে সাথেই সেখানে হাজির হয় প্রচুর তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা। ফোনে তৃণমূল নেত্রীর পাশে থাকার আশ্বাস দেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, বহুজন সমাজবাদী পার্টির মায়াবতী, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা, টিডিপির চন্দ্রবাবু নাইডু, বিহারের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব সহ অন্যান্যরা।

এদিকে কলকাতায় যখন ধরনা চলছে, ঠিক তখনই সারা রাজ্য জুড়ে ট্রেন অবরোধ করতে শুরু করেছেন তৃনমূলের কর্মীসমর্থকরা। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনায় কি রাজ্যে কোন প্রভাব পড়বে? এ দিন এই প্রসঙ্গে আশঙ্কার শোনা যায় তৃণমূল নেত্রীর গলায়।

রাত সওয়া দশটা নাগাদ তিনি বলেন তিনি বলেন, “রাজ্যে বিজেপি রাষ্ট্রপতি শাসনের ফন্দি করার চেষ্টা করছে। ক্ষমতায় ফিরবে না জেনেই মোদি-শাহ জুটি এসব করছেন।” সব মিলিয়ে এখন ঠিক কি হয় তা দেখবার জন্য নজর রাখতেই হবে কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ধরনা মঞ্চের দিকে।