এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ঘন্টা দুয়েই উল্লাস থেকে বিষাদ! হাইকোর্ট নিশ্চিত করল দিনের শেষে জেলের ভাতই খেতে হবে ৪ নেতাকে

ঘন্টা দুয়েই উল্লাস থেকে বিষাদ! হাইকোর্ট নিশ্চিত করল দিনের শেষে জেলের ভাতই খেতে হবে ৪ নেতাকে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল নাটকীয় টানাপোড়েন। বাড়ি থেকে হেভিওয়েট মন্ত্রীদের নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে গ্রেফতার, বাইরে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ আর ভেতরে গোটা ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি। সব মিলিয়ে সোমবার দিনভর খবরের শিরোনামে ছিল সিবিআইয়ের কলকাতার দপ্তর নিজাম প্যালেস। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সত্যের জয় হবে।

ব্যাঙ্কশাল আদালতে যখন মামলা শুরু হয়, তখন তৃণমূলের মধ্যে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। আর প্রত্যাশামতই বিকেল এবং সন্ধ্যা নাগাদ যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজাম প্যালেস ত্যাগ করেন, তখন এক প্রকার স্পষ্ট হয়ে যায়, হয়ত বা তৃণমূল শেষ হাসি হাসতে চলেছে। এমনকি সন্ধ্যে নাগাদ খবর আসে, ব্যাঙ্কশাল আদালতের পক্ষ থেকে জামিন দেওয়া হয়েছে রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।

এদিকে এই খবর সামনে আসার সাথে সাথেই রীতিমতো উচ্ছ্বাসে, আনন্দে ফেটে পড়ে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। কলকাতার সিবিআই দপ্তরের সামনে “আয় বিজেপি দেখে যা, মমতার ক্ষমতা” বলে শ্লোগান উঠতে শুরু করে। অনেকে দাবি করেন, এক মাসের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটো জয়। প্রথমবার জয় বিজেপির বিরুদ্ধে। দ্বিতীয়বারের জয় বিজেপি পরিচালিত তোতাপাখির বিরুদ্ধে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই জয় বিষাদে পরিণত হয়।

ব্যাঙ্কশাল আদালতের জামিনের রায়কে কার্যত স্থগিতাদেশ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, বুধবার পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। অর্থাৎ সারাদিনের বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এমনকি স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি সত্ত্বেও রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী এবং বিধায়কদের জেলের ভাত খাওয়ানো থেকে আটকানো গেল না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সদ্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তারপরেই তার মন্ত্রিসভার দুই সদস্যকে নারদা কান্ডের জন্য যে এইভাবে সোমবার গ্রেপ্তার করা হবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু সোমবার বাড়ি থেকে ফিরহাদ হাকিমকে গ্রেফতার করার পরেই রীতিমত টালমাটাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিধায়ককে গ্রেপ্তার করতে হলে তাকেও গ্রেপ্তার করতে হবে বলে জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিবিআই দপ্তরে প্রবেশ করতে না করতেই “বাংলার বাঘিনী” বলে তাকে আখ্যা দিতে শুরু করেন তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা। লকডাউনকে না মেনে জেলায় জেলায় দুই মন্ত্রী এবং এক বিধায়ককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামতে দেখা যায় শাসক দলের নেতাকর্মীদের। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই দপ্তর উপস্থিত হয়েছেন, তখন হয়ত বা শেষ মুহূর্তে তিনি কোনো ম্যাজিক দেখালেও দেখাতে পারেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সত্যিই কি তার পক্ষে মামলায় জয়লাভ করে তিন সৈনিক এবং এক প্রাক্তন সৈনিককে ছাড়িয়ে আনা সম্ভব হবে? অনেকেই এই ব্যাপারে আশা করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রথমে জামিন পেলেও, হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে সেই জামিনে স্থগিতাদেশ পাওয়ার কারণে বুধবার পর্যন্ত শ্রীঘরেই থাকতে হবে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথমে যখন জামিনের খবর এসেছিল, তখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে উচ্ছ্বাস তীব্র আকার ধারণ করে। অনেকেই বলতে শুরু করে, বিজেপি এবং রাজ্যপাল যতই চেষ্টা করুন, আদালতের রায়কে কালিমালিপ্ত’ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আদালত সঠিক রায় দিয়েছে বলে দাবি করতে শুরু করেন ঘাসফুল শিবিরের একাংশ। কিন্তু যেই হাইকোর্টের রায়ের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, সেই জামিনের স্থগিতাদেশ দেওয়া হল, তখনই “বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে” বলে অনেক তৃণমূল নেতা-কর্মী সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হতে শুরু করেন।

অর্থাৎ তাদের কাছে যে কোনোভাবেই এই ব্যাপারটি মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তা তৃণমূল নেতাকর্মীদের স্বভাব, আচার-আচরণ এবং বার্তার মধ্যে দিয়েই পরিষ্কার হয়ে যায়। কিছুক্ষণের জন্য আনন্দ উৎসব শুরু হলেও, জামিনের স্থগিতাদেশ হয়েছে, সেই খবর শুনতে পেয়েই আবার বিক্ষোভে ফেটে পড়তে শুরু করে ঘাসফুল শিবিরের নেতা-কর্মীরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!