এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের মুখের হাসি চওড়া করে তাদের জন্য কর্ম সংস্থানই এখন লক্ষ্য সুব্রতর

ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের মুখের হাসি চওড়া করে তাদের জন্য কর্ম সংস্থানই এখন লক্ষ্য সুব্রতর


দীর্ঘদিন যাবৎ লকডাউন চলার ফলে সব থেকে বেশি অসুবিধার মুখে পড়তে হয় দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের। বিভিন্ন রাজ্যে যাঁরা কাজের খোঁজে গিয়েছিলেন, তাঁরা পড়েন সবথেকে বেশি সমস্যায়। কারণ লকডাউনের কারণে হয়ে যায় কাজ বন্ধ। হাতের জমে থাকা টাকা ক্রমশ শেষের দিকে পৌঁছাতে থাকে। একটা সময় এমন আসে, যখন পেটের খাবার যোগানো দায় হয়ে ওঠে। সেই সময় থেকেই দেখা যায়, বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথ ধরেন।

দীর্ঘ মাইল অতিক্রম করার ফলে রাস্তাতেই কেউ কেউ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বলে খবর। তবে বাংলায় পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরত আসার পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই পরিযায়ী শ্রমিকদের 100 দিনের কাজে নিযুক্ত হওয়ার কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথার রেশ ধরেই মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনিক বৈঠকের রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও একই কথা বলেন। তাঁর কথা অনুযায়ী শ্রমিকদের এই মুহূর্তে রাস্তা তৈরি, বাঁধ নির্মাণ, বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি তৈরীর কাজে নিযুক্ত করতে হবে।

তিনি এদিন জানান, বাংলার প্রতিটি পঞ্চায়েতের এই মুহূর্তে পরিকল্পনা হবে একটাই- রাজ্যের ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগানো। অন্যদিকে এদিন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রথমে ঘাটাল মহকুমা এলাকায় যান এবং সেখানে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে দাসপুর 1 ও 2, চন্দ্রকোণা 1 ও 2, ঘাটাল ব্লক এবং মহুকুমা প্রশাসনের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পঞ্চায়েত স্তরের কাজের খতিয়ান নেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের কাছ থেকে।

এদিন তিনি আমফানের ক্ষয়ক্ষতির হিসাবো নেন বলে জানা গেছে। এরপর তিনি দ্বিতীয় দফার বৈঠক করেন মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক ভবনে।  সেখানে উপস্থিত ছিলেন সদর মহকুমার ছটি ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, খড়্গপুর মহকুমার পিংলা, ডেবরা, সবং, খড়্গপুর-১ ও ২এর বিডিও এবং সভাপতিরা। এই বৈঠকে পরিযায়ী শ্রমিকদের 100 দিনের কাজের প্রকল্পে নিযুক্ত করা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, 100 দিনের কাজে এই জেলা এগিয়ে আছে বলে খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শ্রম দিবসের নিরিখে রাজ্যের চন্দ্রকোণা 1 ও 2 ব্লক প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে আছে বলে এ দিন দাবি করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। অন‍্যদিকে এদিন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ‍্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জবকার্ড দেওয়ার ব‍্যাপারে খোঁজ নেন বলে জানা গেছে। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরে বৈঠকের পর মন্ত্রী দাবি করেন, মুর্শিদাবাদের পর মেদিনীপুর জেলাতেই সবথেকে বেশি পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে এসেছেন। আপাতত পঞ্চায়েত দপ্তরের লক্ষ্য, এই শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থা করা।

মন্ত্রী এদিন আরো জানান, দক্ষিণ 24 পরগনা জেলায় বাঁধ ভেঙে গেছে। সেখানে স্থানীয় লোকজনরাই 100 দিনের কাজের প্রকল্পে যুক্ত হয়ে বাঁধ তৈরি করছেন। মন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মারাত্মক অবস্থা সৃষ্টি করলেও কেন্দ্রের কাছ থেকে সেই পরিমান সাহায্য পাওয়া যায়নি। মেদিনীপুরের বৈঠকের পর মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় দাঁতনে ভট্টর কলেজে বৈঠক করেন বলে জানা গেছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি, মোহনপুর, দাঁতন-১ ও ২এর বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির জনপ্রতিনিধিরা।

সূত্রের খবর, মেদিনীপুরের বৈঠকে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, রাজ্যসভার সদস্য মানস ভুঁইয়া, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা, সহকারী সভাধিপতি অজিত মাইতি, জেলাশাসক রশ্মি কমল, পুলিস সুপার দীনেশ কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। একে তো করোনা পরিস্থিতি দিনিদিন আতংক বাড়াচ্ছে রাজ্যে, এরপর ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে বেসামাল হয়ে পড়েছেন রাজ্যের সবাই। এই পরিস্থিতিতে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে দুবেলা নিজেদের খাবার যোগাতে পারেন সেদিকেই এই মুহূর্তে নজর প্রশাসনের বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে ঘরে ফেরা শ্রমিকদের রাজ্যে কাজের ব্যবস্থা করলে তাহলে তাঁদের আর অন্য রাজ্যে ছুটতে হবে না পেটের দায়ে। আপাতত বিশেষজ্ঞদের কথার ওপরে নজর রেখে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে তাঁদের পেটের তাগিদ মেটানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েই এই পরিযায়ী শ্রমিকদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। তাই প্রতিটি রাজ্যের কাছেই এইমুহুর্তে সবথেকে বেশী মাথাব্যথা ঘরে ফেরা শ্রমিকদের ভবিষ্যত।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!