এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > বড়সড় সুখবর শোনালেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা, ইবোলার ড্রাগেই কি এবার করোনার রাহুমুক্তি?

বড়সড় সুখবর শোনালেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা, ইবোলার ড্রাগেই কি এবার করোনার রাহুমুক্তি?

চীন থেকে উৎপত্তি লাভ করা করোনা ভাইরাসের সিঁদুরে মেঘ বিশ্বের আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববাসী বর্তমানে আতঙ্ক রাজ্যে বাস করছে। তাদের রাতের ঘুম কার্যত কেড়ে নিয়েছে অজানা এই মারণ ভাইরাস। একের পর এক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। আক্রান্ত করছে লক্ষ লক্ষ মানুষকে। বিশ্বের সব দেশই কার্যত দিশেহারা – করোনার আক্রমণে। কেননা, এর কোনো সঠিক ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কৃত হয় নি। ফলে, বিভিন্ন রকমের ওষুধের ট্রায়ালের মাধ্যমে করোনা রোগীদের সরিয়ে তোলার চেষ্টায় আছে চিকিৎসক মহল।

আর গোটা বিশ্ব যখন ছাতক পাখির মত করোনার প্রতিষেধলের অপেক্ষায়, তখনই সামনে এল বড়সড় সুখবর। আমেরিকার চিকিৎসক মহল জানাচ্ছে, ইবোলার ড্রাগ রেমডেসিভিরের ওষুধের সুফল লক্ষ্য করা গেছে করোনা রোগীদের উপরে। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিজের ডিরেক্টর ও হোয়াইট হাউসের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ড. অ্যান্থনি ফৌসি জানিয়েছেন – ইবোলার ড্রাগ রেমডেসিভিরের ট্রায়াল ব্যর্থ নয়। করোনা রোগীদের উপরে এই ওষুধ ভালোভাবেই কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভিরের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালিয়েছে ওই ওষুধের নির্মাতা সংস্থা গিলেড সায়েন্সেস। আর তার সাপেক্ষেই, মানুষের শরীরে এই ওষুধের প্রভাব কী হচ্ছে সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ফাঁস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ফিনান্সিয়াল টাইমস। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২৩৭ জন রোগীর ১৫৮ জনকে ওষুধ খাইয়ে দেখা গেছে তাঁদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। যদিও এই রিপোর্টের সত্যতা সম্পর্কে কিছু জানাননি গিলেড সায়েন্সেস।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে, মার্কিন এপিডেমোলজিস্ট ফৌসি বলেছেন, রেমডেসিভির করোনা রোগীদের উপর ভালই কাজ করছে। তিনি জানান, আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়ার নানা জায়গায় ১,০৬৩ জন কোভিড পজিটিভ রোগীকে এই ওষুধ খাইয়ে দেখা গেছে তাঁদের সংক্রমণ মুক্ত হবার দিকে। এর পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস অনেকটাই নির্মূল করতে পারে ওই ওষুধে। অন্যদিকে, গিলেড সায়েন্সেস তাদের প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়েছে, সংক্রমণ যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলেই খুব দ্রুত কাজ করছে এই ওষুধ।

তবে সংক্রমণ গভীরে ছড়িয়ে গেলে সেক্ষেত্রে রেমডেসিভির কেমন কাজ করবে সেটা এখনও গবেষণার পর্যায়তেই রয়েছে। ওই সংস্থার মতে, করোনার সংক্রমণ শুরুতে ধরা পড়েছে এমন ৬২% রোগী রেমডেসিভির ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে গেছেন। ৩৯৭ জন রোগীর উপরে এই ওষুধের ট্রায়াল চলছে। পাঁচদিন ও দশ দিনের বিরতিতে ওষুধ খাইয়ে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে শুধু আমেরিকার সংস্থাই নয়, রেমডেসিভির ড্রাগের উপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ এমার্জেন্সি প্রোগ্রামের একজিকিউটিভ ডিরেক্টর মাইকেল রায়ান বলেছেন, ‘রেমডেসিভির নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। এই ওষুধ কতটা কার্যকরী তা এখনই সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। আরও অনেক অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধেরই ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে যার মধ্যে রেমডেসিভির একটি। এই ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল সার্বিকস্তরে খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ এদিকে গিলেড সায়েন্সেস জানিয়েছিল, রেমডেসিভির নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ আরএনএ ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরির ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে পারে এই অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ। তাই ইবোলার উপরে এই ওষুধ কার্যকরী হবে বলে মনে করা হয়েছিল।

ওই সংস্থা জানিয়েছে, কিন্তু আদতে দেখা যায় ইবোলা আক্রান্তদের উপরে এই ড্রাগ তেমনভাবে কাজ করেনি। অথচ পরবর্তীকালে সার্স ও মার্স রোগীদের উপর এই ওষুধ ভালভাবে কাজ করে। এর পাশাপাশি, ভারতেও এই ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। এপিডেমোলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজিজের প্রধান রমন আর গঙ্গাখেদকার বলেছিলেন, আক্রান্তদের চিকিত্‍সার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল রেমডেসিভির। তাতে দেখা গেছে, ৬৮ শতাংশ রোগীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর হয়েছে এই ওষুধে। ফলে সবমিলিয়ে করোনা চিকিৎসায় বড়সড় দিশা পাওয়া গেল বলে মনে করা হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!