এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তৃণমূল কর্মীকে পার্টি অফিসেই গুলি করে খুন! জনরোষে হৃদরোগে আক্রান্ত সভাপতি!

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তৃণমূল কর্মীকে পার্টি অফিসেই গুলি করে খুন! জনরোষে হৃদরোগে আক্রান্ত সভাপতি!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সদ্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছিল। যেখানে কিছুদিন আগেই বিজেপি থেকে আসা বিপ্লব মিত্রকে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান করা হয়। অন্যদিকে প্রাক্তন জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষকে জেলায় নিয়ে এসে সংগঠন দেখার নির্দেশ দেয় রাজ্য নেতৃত্ব। তবে একদিকে জেলার বর্তমান সভাপতি গৌতম দাস, অন্যদিকে জেলার চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্র এবং প্রাক্তন সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ একসাথে কাজ করবেন বলে সকল তৃণমূল কর্মীরা আশা করেছিলেন।

কিন্তু সদ্য নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের সাথে সাথেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করল। যেখানে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে গুলি করে খুন করা হল এক তৃণমূল কর্মীকে। পাশাপাশি সেই ঘটনায় এলাকাবাসীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে জনতার রোষ থেকে বাঁচতে রীতিমতো পালিয়ে যেতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তথা গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কালিপদ সরকারের।

স্বভাবতই নির্বাচনের আগে যখন শাসক-বিরোধী তরজা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে, তখন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দুই নেতা কর্মীর মৃত্যু রীতিমত আলোড়ন ফেলে দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে।জানা গেছে, মৃত তৃণমূল কর্মী সঞ্জিত সরকারের বাড়ি গঙ্গারামপুরে সুকদেবপুর এলাকায়। তিনি বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গৌতম দাসের অনুগামী বলেই পরিচিত। অন্যদিকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃত কালিপদ সরকার আবার প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা বর্তমান চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্রের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে জেলা সভাপতি ঘনিষ্ঠ সঞ্জিত সরকার পার্টি অফিসে বেশ কয়েকজনকে নিয়ে ক্যারাম খেলছিলেন। আর সেই সময় হঠাৎ করেই কয়েকজন সেই পার্টি অফিসে উপস্থিত হয়ে সঞ্জিতবাবুকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তার ডান কানের নিচে গুলি করে দেয়। সাথে সাথেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আর সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ঠ নেতা কালিপদ সরকারকে পেয়ে রীতিমত বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যার পরে স্থানীয়দের বিক্ষোভে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।

পরবর্তীতে তাকে গঙ্গারামপুর মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। স্বাভাবিকভাবেই এক তৃণমূল কর্মীর শরীরে গুলি লাগা এবং আরেক তৃণমূল নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। নির্বাচনের আগেই যদি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে এই রকম সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু হয়, তাহলে নির্বাচন আসলে পরিস্থিতি যে আরও ঘোরালো হয়ে উঠবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ।

কেন এই ঘটনা ঘটল? কেন দুই তৃণমূল কর্মীকে হারাতে হল? এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দাস বলেন, “গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগের সঙ্গে আমি একমত নই। সঞ্জিত সরকার প্রথম সারির একজন তৃণমূল কর্মী ছিলেন। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে দল করতেন। ওই ঘটনার পর একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ঘটনার পর ওই এলাকা থেকে কাদের বেরিয়ে যেতে দেখা দিয়েছে, সেটা সকলেই দেখেছেন। গঙ্গারামপুরের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। আমি খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম।ইতিমধ্যেই পুলিশ তদন্তে নেমেছে। আমরা দলগতভাবে সব দিক খতিয়ে দেখছি। ওই কর্মী রাজনৈতিক কারণে খুন হলেন কিনা, সেটাও দেখা হচ্ছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এই ব্যাপারে বিবৃতি দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সদ্য চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিপ্লব মিত্র। তিনি বলেন, “কালিপদ আমাদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস করেছে। হঠাৎ করে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এর সঙ্গে অন্য কোনো ঘটনার যোগ নেই। শুনেছি শুকদেবপুরে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে দলীয় ভাবে খোজ নেব।” তবে জেলা সভাপতি বা চেয়ারম্যান যে কথাই বলুন না কেন, দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের কারণেই যে একজন কর্মী এবং এক নেতাকে হারাতে হল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ। অনেকে বলছেন, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা শান্তিপ্রিয় জেলা।

এতদিন এইখানে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের কারণে খুন বা হামলার ঘটনা সেভাবে সামনের সারিতে উঠে আসেনি। কিন্তু 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষের বদলে যেভাবে শাসক বনাম শাসকের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাণ হারাতে শুরু করেছেন একের পর এক তৃণমূল নেতা-কর্মী, তাতে চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে জেলার শান্তিপ্রিয় মানুষদের মধ্যে। তাই এইরকম ঘটনা বন্ধ করতে অবিলম্বে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন সকলে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, জেলার পরিবেশকে শান্ত রাখতে তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার জন্য কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!