এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অনাস্থা প্রস্তাব দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে! অস্বস্তিতে তৃণমূল

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অনাস্থা প্রস্তাব দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে! অস্বস্তিতে তৃণমূল


রাজ্যের সর্বত্র গত লোকসভা ভোটের পর থেকেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার বার্তা দিয়েছেন, দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে নিয়ে প্রত্যেকে যেন মানুষের জন্য কাজ করতে পথে নামেন। একসাথে কাজ করাই মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথা যে হাওয়ায় উড়ে যায়, সে কথা প্রমাণ করলো নন্দীগ্রাম 2 ব্লকের আমদাবাদ 2 গ্রাম পঞ্চায়েত। রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির জেরে লকডাউন চলছে সর্বত্র। তার মধ্যেই রাজনৈতিক বিবাদ জিইয়ে রেখে এবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসলো তৃণমূলেরই একটি গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এর বিরুদ্ধে।

এই ঘটনায় যথারীতি চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অন্যদিকে দলের অন্দরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে কি তীব্র আকার ধারণ করেছে তা বোঝা যায় এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। দলীয় নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়াই তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের অপসারণ চেয়ে অনাস্থা প্রস্তাব এনে হাজির করল অন্যান্য দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যরা। সূত্রের খবর, আমদাবাদ 2 গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে সদ্য তৃণমূলের টিকিটে জিতে আসা সাতজন পঞ্চায়েত সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন।

এমনিতেই বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জেরে শাসকদল পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যস্ত। সেই অবস্থায় নন্দীগ্রামে দলের অন্দরে এমন ঘটনা ঘটায় মনে করা হচ্ছে, তৃণমূল নেতৃত্ব যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান সবিতা বারিকের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল সভাপতি শেখ রওশন আলীর বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল বিবাদ। লকডাউনের মধ্যেই সেই বিবাদ চরম আকার ধারণ করে। এর ফলে গত দুই সপ্তাহের বেশি ধরে পঞ্চায়েত প্রধান নিজের পঞ্চায়েত অফিসে যাচ্ছেন না।

এর ফলে সাধারণ এলাকাবাসীরা পরিষেবা পেতে যথেষ্টই অসুবিধার মুখাপেক্ষী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য খবর, কয়েকদিন আগেই পঞ্চায়েত অফিসে কর্মীদের আটকে রেখে তালা লাগিয়ে রেখে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। এরপর পঞ্চায়েত অফিস খুললেও পঞ্চায়েত প্রধানকে অনুপস্থিত দেখা যাইয়। আমদাবাদ 2 পঞ্চায়েতের সমস্ত আসনই তৃণমূলের দখলে। 2018 সালের সেপ্টেম্বর মাসে সর্বসম্মতিক্রমে পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হন সবিতা বারিক।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু বর্তমান প্রধানের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে দলের 7 পঞ্চায়েত সদস্য চিঠি লিখে অনাস্থা প্রস্তাব রেখেছেন স্থানীয় বিডিওর কাছে বলে জানা গেছে।  একইসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অন্যান্য বিষয়েও লিখিত অভিযোগ এনেছেন বেশ কয়েকজন সুপারভাইজার। আর এই সব ঘটনার মধ্য দিয়েই নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে মোটেই সুখকর নয়, তা ক্রমশঃ স্পষ্ট। উল্লেখ্য, সদ্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোষ্ঠীদ্বন্দ রুখতে সতর্ক করে দিয়েছেন এই বলে যে, আড়াই বছরের আগে কোনভাবেই অনাস্থা আনা যাবে না।

কিন্তু তার পরেও দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশের অবমাননা করে অনাস্থা আনা হয়েছে। এই নিয়ে দলের অন্দরেই জল্পনা তুঙ্গে। পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর নেতা শেখ রওশন আলী জানান, “দুই সপ্তাহ ধরে প্রধান অফিসে আসছেন না। বিষয়টি বিধানসভা নেতৃত্বকে জানিয়ে আলোচনার জন্য একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও আলোচনা হয়নি। সাধারণ মানুষেরও সমস্যা হচ্ছে। তাই প্রধানকে সরাতে অনাস্থা এনেছেন দলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা।”

এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিডিও জানিয়েছেন, ‘‘প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চিঠি পেয়েছি।” অন্যদিকে পঞ্চায়েত প্রধান সবিতা বারিক জানান, ‘‘কী কারণে দু’সপ্তাহ ধরে অফিসে যাচ্ছি না তা দলীয় বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।’’ তবে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির তৃণমূলের চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল জানান, ‘‘নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা না করে আমদাবাদ পঞ্চায়েতে কয়েকজন সদস্য অনাস্থা এনেছেন। এটা দলবিরোধী কাজ। বিষয়টি দলের জেলা সভাপতিকে জানাব।’’

অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই যেভাবে নন্দীগ্রামের মতন অঞ্চলে যেভাবে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে তা নিয়ে রীতিমতো তীব্র সমালোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে এবং শাসক দলের অন্দরেও। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সবাইকে দলীয় নির্দেশ দিয়েছেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আটকাতে, তখন সেই নির্দেশের অবমাননা করা হল কিভাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় তৃণমূল নেত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি বিচার করে নেত্রী এবার কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, সে দিকেই লক্ষ্য রাখবে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!