এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > গতি হারাচ্ছে সরকারি প্রকল্পের কাজ! বিধানসভার আগে উদ্বিগ্ন মমতা ‘করোনার অজুহাত’ শুনতে নারাজ

গতি হারাচ্ছে সরকারি প্রকল্পের কাজ! বিধানসভার আগে উদ্বিগ্ন মমতা ‘করোনার অজুহাত’ শুনতে নারাজ


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে সম্প্রতি অনিয়ন্ত্রিত করোনা সংক্রমণ ও করোনার কারণে লকডাউন জারি থাকায় রাজ্যের সরকারি প্রকল্পগুলির গতি অনেকটাই শ্লথ হয়ে পড়েছে।বহু প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। এ সম্পর্কে নানা অভিযোগ জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তার ফলে রাজ্যের বেশ কিছু মন্ত্রী, আমলা, ডিজির উপরে ক্ষুব্ধ হলেন মুখ্যমন্ত্রী। সকলকে পরিষ্কার ভাবে তিনি জানালেন, এই মুহূর্তে করোনা রাজ্য থেকে বিদায় নেবার নয়, কিন্তু করোনার অজুহাতে সরকারি কাজে অবহেলা করা চলবে না।

সরকারি প্রকল্পগুলি সময়মাফিক শেষ করতে হবে। আর যে সমস্ত প্রকল্পে ইতিমধ্যেই বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে, সেই প্রকল্পগুলি আগামী ৩০ সে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলতে হবে । কারণ এরপরেই আসতে চলেছে পুজো, আর তার কয়েক মাস বাদেই আছে ভোট। তাই গুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে কখনোই নিশ্চেষ্ট ভাবে বসে থাকা সমীচীন নয়। গতকাল মঙ্গলবার নবান্ন থেকে বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকের এমন নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ” নির্বাচন আসবে যাবে, সরকার থাকবে। আপনারাও থাকবেন। উন্নয়ন থেমে থাকবে না।”

গতকাল পূর্ব, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তিনি এই সমস্ত জেলার জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর ও পঞ্চায়েত দপ্তরকে একসঙ্গে কর্ম সমাধান করার নির্দেশ দিলেন তিনি । এ প্রসঙ্গে তিনি জানান চাষের জমিতে জল জমতে শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই যা দ্রুত সমাধান করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সম্প্রতি বেশকিছু মানুষ ১০০ দিনের কাজের উপযুক্ত পারিশ্রমিক পান নি। এ বিষয়ে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ” করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের প্রাপ্য বাকি রাখা ঠিক নয়। কাদের পারিশ্রমিক বকেয়া রয়েছে, তার তালিকা তৈরি করে সাতদিনের মধ্যে সেই টাকা মিটিয়ে দিতে হবে।”অন্যদিকে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প গুলির অর্থ পুজোর আগে মিটিয়ে দেবার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানালেন যে, সম্প্রতি রাজ্যে লকডাউন এর কারণে কোনো মেয়ের যদি বিয়ে বাতিল হয়ে যায়, তবে তার রূপশ্রীর অর্থের আবেদন পুনর্নবীকরণ করে দিতে হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জেলাগুলির সড়ক ব্যবস্থা বিষয়েও খোঁজ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের ওপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ তিনি । জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের তিরস্কার করে তিনি বললেন, ” লজ্জা করে না শুনতে? কাজের অগ্রগতি এত কম কেন? রাস্তা নিয়ে তাঁর ক্ষোভ থেকে রেহাই পাননি রাজ্যের ডিজিও। বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও ছোট রাস্তা দিয়ে বড় ও ভারী গাড়ি চলাচল কেন চলছে? রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্রর কাছেও জবাবদিহি চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ” দেখবেন ওভারলোডিং যেন না হয়। যদি ফের এমন ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এরসঙ্গেই রাস্তা নির্মাণ সামগ্রী জমা করে ফুটপাত দখল বন্ধ করবার কড়া আদেশ দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার করোনা সংক্রমণ নিয়েও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। এই দুই জেলাতে এতটা করোনা সংক্রমনের কারণ কি? মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসন কর্তারা জানান, মূলত রাজ্য থেকে আসা রোগীদের কারণেই এই দুটি জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ” অন্য রাজ্য থেকে রোগীরা এলে তাঁদের চিকিৎসা করুন। কিন্তু ঠিকানা আলাদা করে লিখে রাখুন।”

করোনার সামান্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের তিনি তিনদিন পর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে। আবার পূর্ব বর্ধমান জেলার খন্ডঘোস থানায় পুলিশ কর্মীদের করোনা সংক্রমণ রোধে তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল রাজ্যের শ্রমদপ্তরের উদ্যেশে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপযুক্তভাবে কাজ হচ্ছে কিনা? সেই সঙ্গে কর্মীরা উপযুক্ত বেতন পাচ্ছেন কিনা?

এ ব্যাপারে পর্যালোচনা করতে আধিকারিকদের ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে সারপ্রাইজ ভিজিট করবার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি করোনা সংক্রমনের সরকারি কর্মীদের আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত বীমার মেয়াদ বৃদ্ধি করবেন বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার আশা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ” সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সংক্রমণ কমে যাবে বলে আমি আশাবাদী। বিশেষজ্ঞরাও তাই বলছেন।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!