এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বীরভূম এখন বোমা তৈরীর কারখানা, হয় গরু পাচার! শ্রীনিকেতনে রাজ্যপালের মন্তব্যে রাজ্যজুড়ে ঝড়!

বীরভূম এখন বোমা তৈরীর কারখানা, হয় গরু পাচার! শ্রীনিকেতনে রাজ্যপালের মন্তব্যে রাজ্যজুড়ে ঝড়!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলা বেশ কিছুদিন ধরেই হিংসার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে এই জেলাটি পর্যবসিত হয়েছে বোম তৈরির কারখানায়। এরকমই বেশ কিছু অভিযোগ এতদিন ধরে শোনা যেত রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে। এবার বীরভূম জেলা সম্পর্কে এ ধরনের অভিযোগ উঠে এলো খোদ রাজ্যপাল জাগদীপ ধনখড় এর কাছ থেকে। গতকাল বুধবার বীরভূমের শ্রীনিকেতনের হলকর্ষণ উৎসবে আমন্ত্রিত হয়ে রাজ্যপাল সেখানে উপস্থিত ছিলেন । আর এখানেই তিনি বীরভূম সম্পর্কে তাঁর এই বিশেষ মন্তব্যটি করেছেন। প্রসঙ্গত রাজ্যপাল এর পূর্বেও অনেকবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন।

রাজ্যপালের অনেক বক্তব্য মন্তব্য নিয়ে বার বার ঝড় উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির অঙ্গনে। আর এবারও রাজ্যপালের এই মন্তব্য ব্যাপক শোরগোল তুলে দিল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। প্রসঙ্গত রাজ্যপাল এদিন নাম তা করেও তাঁর বক্তব্যব বানে বিঁধলেন রাজ্যের শাসক দল ও সেইসঙ্গে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে। এমনটাই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। গতকাল বুধবার শ্রীনিকেতনে হলকর্ষণ উৎসবে এসে রাজ্যপাল বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনে এক বিশেষ সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘বীরভূম বলতেই এখন কানে আসে বোমার কারখানা, মাফিয়া রাজ। এটা বীরভূমের পরিচয় হতে পারে না। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রকে আক্রমণ করার সামগ্রী তৈরি হচ্ছে শান্তিনিকেতনের ২০-৩০ কিলোমিটারের মধ্যেই! গরুপাচারে বীরভূমের ভূমিকাও সকলেই জানেন। সাংস্কৃতিক ভাবে সমৃদ্ধ বীরভূমের আজ এ কোন দশা!’’

রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পর এই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ রাজ্যপালের এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন ‘‘এক জন রাজ্যপালের কাছে আমরা একটি রাজনৈতিক দলের মুখপাত্রের মতো ভাষণ বা বিবৃতি এর আগে শুনিনি। উনি যে কথাগুলো বলেছেন, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। রাজভবনে রাজার মাথা থেকে গ্রামের মানুষের কথা এ ভাবে ভাবা যায় না বা বলা যায় না।’’ এরসঙ্গেই রাজ্যপালের মন্তব্যের প্রতি অভিযোগের সুরে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, ‘‘রাজ্যপাল কি শুধু এ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা দেখতে পান, উত্তরপ্রদেশ বা গুজরাতের কথা ওঁর নজরে পড়ে না?’’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, গতকাল ভোর পাঁচটায় শ্রীনিকেতনে শুরু হয় একটি বিশেষ উৎসব। শ্রীনিকেতনর পাকুড়তলা থেকে “বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো।…” গানের মাধ্যমে শুরু হয় বৈতালিক অনুষ্ঠান। উক্ত যে অনুষ্ঠানটি বাড়ির সামনে এসে সমাপ্ত হয়। অন্যান্য বছরগুলিতে এই অনুষ্ঠানটি পালিত হয়ে থাকে বাংলার ২৩ শে শ্রাবণ তারিখে। অর্থাৎ, কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসের ঠিক পরদিন। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কথা মনে রেখেই অনুষ্ঠানে দিনক্ষণ তথা অনুষ্ঠানের চরিত্রগত বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে।গতকাল সকাল ৮ টা ৪০ মিনিটে শান্তিনিকেতনের হেলিপ্যাডে রাজ্যপাল হেলিকপ্টারকে নামতে দেখা গেছে। তারপর সেখান থেকে সস্ত্রীক রাজ্যপাল পৌঁছান শ্রীনিকেতন মেলার মাঠে। সেখানে রাজ্যপালকে সম্মান জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, বিশ্বভারতীর কর্মসচিব আশা মুখোপাধ্যায় প্রমুখরা।

প্রত্যেকেই উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ে সন্মান জানান রাজ্যপালকে। এরপর শ্রীনিকেতনের মেলার মাঠে রাজ্যপালকে সঙ্গে নিয়ে উদ্বোধন করা হয় হলকর্ষণ উৎসবের। এই উৎসবে বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীদের প্রতি “ফিরে চল মাটির গান” পরিবেশনা করা হয়, এরপরেই বেদ মন্ত্র পাঠ ও আরো দুটি গান পরিবেশিত হয়। এরপর অনুষ্ঠানে প্রতীকী হলকর্ষণ ও বীজ রোপন করেন রাজ্যপাল ও সেইসঙ্গে উপাচার্য সহ উপস্থিত সমস্ত অভ্যাগতরা। তবে এবছরের করোনা সংক্রমনেরকথা মাথায় রেখেই অনুষ্ঠানের জনসমাগম হ্রাস করতে এবার এই অনুষ্ঠানে অতিথি সংখ্যা ছিল খুবই অল্প ও অনুষ্ঠানে কোন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল না। এ কারণেই এই অনুষ্ঠানের বিশেষ শোভাযাত্রার অনুষ্ঠান ও নৃত্যানুষ্ঠানও বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় কৃষকদের অন্যান্য বছরের মতো এ বছর এই অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ।

প্রসঙ্গত অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে অনুষ্ঠানের দুদিন আগে করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল। করোনা সংক্রামিত নয় নিশ্চিত জেনেই তাঁদের অনুষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। একে তো এবছরের করোনা সংক্রমণ কারণে অনুষ্ঠান ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত। তার উপরে গতকালের প্রবল বৃষ্টি অনুষ্ঠানের যথেষ্ট বিঘ্ন ঘটিয়েছিল। প্রসঙ্গত উক্ত অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল রবীন্দ্রভবনে একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের সমকালীন শান্তিনিকেতনের বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবি এই প্রদর্শনীতে স্থান লাভ করেছে। তবে এবারের হলকর্ষণ অনুষ্ঠানে একটি মজার ঘটনা হঠাৎ করে ঘটে গেল। অনুষ্ঠানে হলকর্ষণের জন্য বিশেষ ভাবে সাজানো একটি বলদ হঠাৎ লাঙ্গলের দড়ি খুলে দৌড়াতে শুরু করে।

সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত কর্মী, আধিকারিক, নিরাপত্তাকর্মীরা সকলেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন বলদটিকে বাগে আনতে। সকলেই তার পেছনে ছোটেন, ৫ মিনিট দৌড়দৌড়ির পর তাকে বাগে আনা সম্ভব হয়। প্রসঙ্গত রাজ্যপালের বীরভূমে আসবার ঠিক আগের রাতে শ্রীনিকেতন ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়ালে দেওয়াল লিখনের ঘনঘটা পরে যায়। যার মূল আক্রমণের বিষয় ছিলেন রাজ্যপাল ও বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। ইউনিভার্সিটির ফি বৃদ্ধির কারণে উপাচার্যের বিরোধিতা যেখানে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি পর্যন্ত করা হয়। তবে, বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষর বিষয়টি নজরে আসর সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বভারতীর দেওয়াল থেকে মুছে দেয়া হয় সমস্ত দেয়াল লিখন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!