সরকারি কর্মীদের একমাসের বেতন কি ‘সংগঠিত লুঠ’? আদালতের পর্যবেক্ষণে হুলুস্থুলু! জাতীয় September 21, 2018 কেরলের ভয়াভয় বন্যাপরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথমে ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছিলেন। বিদেশি রাষ্ট্রের তরফ থেকেও কেরলকে আর্থিক সহায়তার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিলে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে সেটি বাতিল হয়ে যাওয়ায় চাপে পড়ে যান কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বিরোধীদের অভিযোগ এমনটাই। সরকারি এবং বেসরকারি ভাবে বিপর্যয়গ্রস্থ কেরলের স্বাভাবিকতা ফেরাতে জড়ো হয়েছে এখনো অব্দি দু হাজার কোটি টাকা। এখনো আরো টাকার প্রয়োজন। কোথা থেকে জোগাড় হবে এতোগুলো টাকা? উদ্বেগে ছিল কেরল সরকার। তাই আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে নয়া কৌশল নিতে দেখা গেল বিজয়নকে। বাম জোটের প্রশাসনের তরফ থেকে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীর উদ্দেশ্যে একটি ফরমান জারি হল। পাঁচ লাখ কর্মী এবং পেনশনভোগীদের উদ্দেশ্যে জারি হওয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,তাঁদের একমাসের বেতন ও পেনশনের টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে জমা করতে হবে। রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা সবাই যদি এ আদেশ মেনে নেন তবে সরকারের কোষাগারে জমা পড়বে ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। চলতি মাসেই সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের একমাসের বেতন না পেনশন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে জমা করবেন-এই আশাতেই মার্কিন সফরে যাওয়ার আগেই অর্থদপ্তরকে তাঁর নির্দেশটি জানিয়ে যান। গত সপ্তাহের গোড়ার দিকে এই নির্দেশিকা প্রকাশ করে কেরলের অর্থ দপ্তর। তাতে আরো বলা হয়, যারা এ নির্দেশিকা মানতে চাইবেন না তারা তাদের আপত্তির কথা জানিয়ে আগাম লিখিত আবেদন পত্র বিভাগীয় কর্তাদের কাছে জমা করতে হবে। আদেশনামা প্রকাশ্যে আসতেই অসন্তোষের বাঁধ ভেঙে পড়ে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা। রীতিমতো রেগে আগুন তাঁরা। সিপিএমের সমর্থক কর্মচারীরাই এই আদেশ মেনে নিচ্ছেন না আর বিরোধীরা তো ক্ষোভে ফুঁসছেন। এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ইতিমধ্যেই তাঁরা সরকার নিয়ন্ত্রিত ত্রিবাঙ্কুর দেবশ্যম বোর্ডের কর্মচারী সংগঠনের তরফ থেকে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা চলাকালীন হাইকোর্টের বিচারপতিরা তাঁদের পর্যবেক্ষণে এই নির্দেশকে ‘সংগঠিত লুট’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন। যুক্তি, যদি সরকারি কর্মচারীরা স্বেচ্ছায় তাঁদের এক মাসের বেতন বা পেনশনের টাকা সরকারি কোষাগারে তুলে দিলেন তাহলে ব্যাপারটা অন্য ছিল। কিন্তু এখানে বিষয়টি অন্য। সরকারি কর্মচারীদের আপত্তিকে মান্যতা দিয়ে রাজ্যসরকারের মূল আদেশটি সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছেন বলেই জানানো হল। এদিকে বিরোধীরাও একইভাবে গর্জে উঠেছেন সরকারের এই আদেশনামার বিরুদ্ধে। এটাকেই ইস্যু করে বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা থেকে শুরু করে অন্যান্য বিরোধী নেতারা আক্রমণ শানিয়েছে সিপিএম জোট সরকারের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে জানিয়েছে,বিধ্বংসী বন্যায় সরকারি কর্মচারীদেরও বেহাল দশা। এমতাবস্থায় সরকারের এরকম নির্দেশ এককথায় অন্যায়। একমাসের বেতন বা পেনশন কেটে নিলে তাঁরা ভয়ংকর অসুবিধায় পড়বেন। এভাবে জোর করে টাকা কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করা আইনসম্মত নয়। এসব বলে বিরোধীরা এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে অন্যদিকে,এই ইস্যুকে কারণে অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনই তোলেননি। তবে বিষয়টিকে ‘স্পর্শকাতর ‘ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন দলের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য। নির্দেশটিতে সংশোধন আনার চেষ্টা চলছে বলেও জানালেন তিনি। উল্লেখ্য,চিকিৎসার কারণবশত আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এই সপ্তাহেই তাঁর দেশে ফেরার কথা। আগামী সোমবার এই ইস্যু নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে মন্ত্রীসভার বৈঠকে। এমনটাই জানা যাচ্ছে রাজ্য সিপিএম সূত্রের খবরে। আপাতত উদ্বেগে দিন কাটছে কেরলের সরকারী কর্মচারীদের। নজর রয়েছে মন্ত্রীসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তের দিকে। আপনার মতামত জানান -