এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সরকারি কর্মীদের বেতন নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সরকারি কর্মীরা

সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সরকারি কর্মীদের বেতন নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সরকারি কর্মীরা

গতকালই খবরে প্রকাশিত এবার থেকে সমস্ত দপ্তরের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। রাজ্য সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কিছু ভালো তো দেখছেনই না, উপরন্তু সামগ্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে রীতিমত ভীত ও আতঙ্কিত তাঁরা। কিন্তু কেন এই আশঙ্কা? এই প্রসঙ্গে আমরা সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করি। দেবাশিসবাবু একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন, সমস্ত দপ্তরের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে দেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার তা হলে রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের কাছে যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। কারন রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কগুলির পরিকাঠামো বা বিশ্বাসযোগ্যতা কখনই রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কের মত নয়, যতদূর জানি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক ছাড়া বাকী সমবায় ব্যাঙ্কগুলি শুধুমাত্র ‘বোর্ড-অফ-ডিরেক্টরস’ দ্বারা পরিচালিত হয় – রাজ্য সরকারের তাতে কতটুকু নিয়ন্ত্রন আছে তা নিয়ে সন্দহের অবকাশ আছে।

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

রাজ্য সরকারের এই পরিকল্পনায় রীতিমত ক্ষিপ্ত দেবাশিসবাবু আরো জানান, রাজ্য সরকার তার সমবায় দপ্তরের মাধ্যমে শুধুমাত্র সমবায় ব্যাঙ্কগুলির অডিট করায়। সমবায় ব্যাঙ্কগুলি মূলত জেলাভিত্তিক হওয়ার দরুন তাদের যাবতীয় কর্মকান্ড নির্দিষ্ট জেলাতেই সীমাবদ্ধ আর প্রতিটি জেলাতে একটি প্রধান শাখা সহ একটি বা দুটি শাখাই থাকে। প্রতি জেলায় বসবাসকারী রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা বেতন তোলার সুযোগ কেবলমাত্র ওই ব্যাঙ্কের দুই বা তিনটি নির্দিষ্ট শাখা থেকেই পাবেন, ফলে মাসের প্রথম সপ্তাহে এই দুই বা তিনটে ব্যাঙ্কে কী পরিমান লাইন পড়বে এখন থেকেই তা বোঝা যাচ্ছে। অনেক কর্মচারীরা ফলে ভিড়ের চাপে নির্দিষ্ট দিনে হয়ত বেতনই তুলতে পারবেন না। আর সমবায় ব্যাঙ্কের এটিএম গুলি তো জেলা সদরেও দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়। তাছাড়া আজকের এই ডিজিটাল পেমেন্ট-এর যুগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির এটিএম-কাম-ডেবিট কার্ড-এর বিরাট একটা ভূমিকা আছে, এছাড়াও আছে নেট-ব্যাঙ্কিংয়ের মস্ত সুবিধা। কিন্তু সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে এটিএম কার্ড থাকলেও তা কেবল টাকা তোলার ক্ষেত্রেই ব্যাবহার করা যায়, ডেবিট কার্ড হিসাবে নয় আর নেট ব্যাঙ্কিং-এর কোনো সুবিধা সমবায় ব্যাঙ্কে নেই। রাজ্য সরকার যেখানে ই-গভর্ন্যান্স-এর অন্তর্গত এইচআরএমএস চালু করেছে অর্থ্যাৎ চাইছে সম্পূর্ন ডিজিটালাইজেশন, সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে বাদ দিয়ে সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বেতন প্রদান সরকারের পশ্চাদপসরণ ছাড়া আর কীই বা বলা যেতে পারে। এতে রাজ্য সরকারের কি সুবিধা হবে জানি না – কিন্তু সাধারণ সরকারি কর্মচারীদের জন্য অশেষ দুর্ভোগ যন্ত্রনা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এতদিন ডিএ-বকেয়া বেতন না দিয়ে এত যন্ত্রনা দিয়েছে, আর এবার নিজের মাস-মাইনেটাও নির্দিষ্ট দিনে না তুলতে দেবার ব্যবস্থা পাকা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। আসলে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারি কর্মচারীদের আর রাজ্য-সরকার মানুষের মধ্যেই গণ্য করেন না, তা আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ‘ঘেউ ঘেউ’ মন্ত্যব্যে ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। তাই যাদের কাজের মাধ্যমে রাজ্যের সরকারি দপ্তরগুলি চলছে তাঁদের জীবন আরো বেশি দুর্বিষহ করে দেওয়ার পরিকল্পনা পাকা করা হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!