এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর ষষ্ঠ বেতন কমিশনের প্রাপ্তি নিয়ে কি বলছেন সরকারি কর্মচারীরা?

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর ষষ্ঠ বেতন কমিশনের প্রাপ্তি নিয়ে কি বলছেন সরকারি কর্মচারীরা?

রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর পূর্ব ঘোষণা মত আজ ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সাংগঠনিক সমাবেশ থেকে আজ পে-কমিশন নিয়ে বড়সড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত পে-কমিশনের রিপোর্ট নবান্নে জমা না পড়লেও, আজ নেতাজি ইন্ডোরের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পরে গেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই সামনে এসেছে একাধিক নতুন তথ্য। আর তাই নিয়েই তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে। এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যে বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যেসব শীর্ষনেতা – আমরা তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করি। আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক – আজ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর কার কি বক্তব্য?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

মুখ্যমন্ত্রী যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে আজ কথা বললেন, তা চালু হওয়ার কথা ১ লা জানুয়ারী, ২০১৬ থেকে। কিন্তু তিনি বলেছেন ১ লা জানুয়ারী, ২০২০ থেকে চালু করার চেষ্টা করবেন। তাহলে এই ৪ বছরের এরিয়ারের কি হবে? আদালতের রায় তো স্পষ্টভাবেই এরিয়ার দেওয়ার কথা বলেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ৭ হাজার টাকা বেতন বাড়িয়ে ১৭,৯৯০ টাকা করা হল – সবটাই ভ্রান্ত ঘোষণা! যার ৭ হাজার টাকা বেতন ছিল, ১২৫% ডিএ নিয়ে তা ১৫,৭৫০ ছিল – অর্থাৎ বেতন বৃদ্ধি ২,২০০ টাকা মত। তাছাড়া নতুন স্কেলে যে ১২% ডিএ ঘোষণা হয়েছে – তা নিয়েও কোনো কথা নেই। কোর্টের রায় অনুযায়ী, বকেয়া ডিএ না দিয়ে কিছুতেই পে-কমিশন চালু করা যাবে না। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘দেখছি’! মানে কি উনি আবার একটা মামলার পথে হেঁটে, আবার কর্মচারী বঞ্চনা দীর্ঘায়িত করবেন? সব মিলিয়ে এই ঘোষণা ‘ললিপপ’ দেখিয়ে সরকারি কর্মীদের শান্ত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা মাত্র! আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের মাধ্যমে কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা ছিনিয়ে নেব।


– দেবাশীষ শীল, সরকারি কর্মচারী পরিষদ

আমরা গতকালই যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের সমাবেশে বলেছিলাম, আজকের এই বৈঠক কার্যত ফ্লপ-শোতে পরিণত হবে এবং সরকারি কর্মচারীদের কাছে এটা ‘আনলাকি থার্টিন’ হতে চলেছে। কোর্টের সুস্পষ্ট রায় থাকা সত্ত্বেও, মুখ্যমন্ত্রী ৪ বছরের এরিয়ার দিচ্ছেন না। কেউ জানল না হঠাৎ করে পে-কমিশন জমা পরে গেল! আমরা শেষ পে-কমিশন হাতে পেয়েছি ২০০৯ সালের নভেম্বর থেকে, সেক্ষত্রে ২০১৯-এর নভেম্বরের মধ্যে পরবর্তী পে-কমিশন অবশ্যই চালু হাও উচিত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বললেন উনি ১ লা জানুয়ারী থেকে ‘চেষ্টা’ করবেন, তাহলে কি আমরা তা এপ্রিলে গিয়ে হাতে পাব? ডিএ বা এরিয়ার নিয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশ নেই, গ্র্যাচুইটি সিলিং কেন্দ্রীয় কর্মীদের জন্য ২০ লক্ষ টাকা, আমাদের ১০ লাখ হল – তাহলে পেলাম কি আসলে? এই সরকার কিছুতেই কর্মচারীদের স্বার্থরক্ষা করার কথা ভাবে না, তাই শারোদৎসব মিটলেই সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া সরকারি কর্মচারীদের সামনে আর কোনো পথ খোলা রইল না!


– সুবীর সাহা, আইএনটিইউসি

সরকারি কর্মচারীদের স্বার্থরক্ষায় আমরা, বামপন্থীরা লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে যাচ্ছি। ডিএ, পে-কমিশন ও অনৈতিক বদলি নিয়ে আমরা কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। এছাড়াও, নবান্ন অভিযান, পে-কমিশন অভিযান সহ একাধিক ধারাবাহিক আন্দোলন করে গেছি। সেই আন্দোলনের চাপে শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে এই সরকার ষষ্ঠ পে-কমিশন ঘোষণা করেছে। কিন্তু, সেখানে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বকেয়া ডিএ বা এরিয়ার নিয়ে কোনো সদর্থক কথাই নেই! তাই আগামী দিনে, সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার ছিনিয়ে নিতে আমাদের সংগ্রাম-আন্দোলন জারি থাকবে। আমরা কর্মচারী স্বার্থে রাস্তাতেই থাকব।


– বিজয় শঙ্কর সিংহ, কো-অর্ডিনেশন কমিটি

যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব ঘোষিত সভার দিনে সকালে পে-কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়া হল, যে সুপারিশ কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের ‘টুকলির’ নামান্তর, অভিরূপ সরকারের মত একজন বিদগ্ধ অর্থনীতিবিদের যার জন্য চার বছরের প্রয়োজন হয় না – এই সব থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট যে, এই বেতন কমিশন গঠনই করা হয়েছিল কর্মচারী বঞ্চনাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য। এছাড়াও, মাঝে যে অভিযোগ উঠেছিল বেতন কমিশনের সুপারিশ আসলে তৈরী, কিন্তু সরকার ক্রমাগত সময় বাড়িয়ে যাচ্ছে – আজকের ঘোষণায়, তার কিছুটা হলেও সত্যতা পাওয়া গেল। কবে থেকে বেতন কমিশন লাগু হবে বা এরিয়ার দেবেন কি দেবেন না – তা নিয়ে কোনো স্পষ্ট দিশা নেই। আসলে চারিদিকে যেভাবে কর্মচারীরা বিক্ষুব্ধ, সেই চাপের মুখে পরে মুখ্যমন্ত্রী আজ পে-কমিশনের সুপারিশটা ঝুলি থেকে বের করলেন মাত্র। কিন্তু কিভাবে কি কার্যকর হবে – তা স্পষ্ট নয়। ফলে, সরকারি কর্মচারীরা জোট বেঁধে আন্দোলন না করলে বৃহত্তর বঞ্চনা অপেক্ষা করে আছে।


– বিপুল রায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন

মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন ৭ হাজার বেতন বেড়ে প্রায় ১৮ হাজার হল – এত একেবারেই ‘মানুষ খেপানো’ মিথ্যাচার! আদতে বাড়ছে ২,২০০ টাকার মত অথচ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন উনি বাড়াচ্ছেন প্রায় ১১ হাজার মত! সোনারপুরের মাঠে দাঁড়িয়ে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী বলেছিলেন বাম সরকার ২৭ মাস এরিয়ার দিল না – আর ওনার মুখ্যমন্ত্রীত্ত্বে যে ৪৮ মাসের এরিয়ার দেওয়া হচ্ছে না – তা দিয়ে কোন সরকারি কর্মচারীর কি সুরাহা হল? এইচআরএ, মেডিক্যাল বা হাউস রেন্ট নিয়ে কোনো ঘোষণা নেই – তাহলে সরকারি কর্মচারীদের হাতে ‘পেন্সিল’ ছাড়া রইল কি? মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকারি কর্মচারীরা জট দেবেন, উনি তত ভরিয়ে দেবেন। ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে ৩ মাসের মধ্যেই উনি বলেছিলেন ৯০% কাজ সমাপ্ত। তাহলে যে সরকারি কর্মচারীরা ৩ মাসের মধ্যে ৯০% কাজ করে দেন, তাঁদের বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাসে ৪ বছর সময় লাগে! তাঁদের ৩-৪ বছরের এরিয়ার বঞ্চনা করা হয় – তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর কথা ও কাজের মধ্যে কি সত্যিই কোনও মিল থাকছে কি?


– সঙ্কেত চক্রবর্তী, স্টিয়ারিং কমিটি

একনজরে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের যে দশটি ‘কি-ফ্যাক্টর’ আপনাকে জানতেই হবে –

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!