এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সরকারি প্রকল্পের বাড়িতে চওড়া হচ্ছে ফাটল! তীব্র উত্তেজনা অনুব্রত-গড়ে

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সরকারি প্রকল্পের বাড়িতে চওড়া হচ্ছে ফাটল! তীব্র উত্তেজনা অনুব্রত-গড়ে


হাউসিং ফর অল যোজনার মাধ্যমে পৌরসভায় অবস্থিত প্রত্যেকটি নাগরিকদেরকে বসবাসযোগ্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। আর এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্ব রয়েছে পৌরসভার হাতে। পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে ঠিকাদারি সংস্থার প্রত্যেকে উপভোক্তাদের গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে দায়বদ্ধ। কিন্তু এই দায়বদ্ধতা কতটা তারা পালন করছে, সেদিকে প্রশ্নবাণ তুলে গুসকরায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে উপভোক্তাদের মনে। অভিযোগ, সেখানে বেশ কিছু হাউসিং পর অলের বাড়িতে রীতিমত ফাটল দেখা দিয়েছে।

যা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়ে গেছে গুসকরা পৌরসভার ভাবমূর্তি। এই নিয়ে রীতিমত দোষারোপের মুখে পড়তে হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকেও। এদিন এই বিষয়ে গুসকরা পৌরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক আকলিমা খাতুন বলেন, “প্রকল্পের উপভোক্তাদের সরকারি অর্থে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা। কিন্তু পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের দেখভালের দায়িত্বের কথা অস্বীকার করা যায় না। এই নিয়ে তাদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা করা হয়েছে।” কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে যে সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারদের উপরে এই প্রকল্পের বাড়িগুলোর প্ল্যানিং এর দায়িত্ব বর্তায়, তাদের কাছ থেকে কোনো রকম সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলে খবর।

 

যদিও গোটা ব্যাপারে রাজ্যের পুরো উন্নয়ন সংস্থা ও প্রশাসন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, পুজোর ছুটি শেষ হলেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পৌরসভার কাছ থেকে লিখিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হবে। অপরদিকে মিউনিসিপ্যালিটি থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, গত আর্থিক বছরে এখানে 998 টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই অনেক উপভোক্তারা অভিযোগ করেছেন, ছাদের নিচে ফাটল দেখা দিয়েছে। অভিযোগকারী উপভোক্তাদের মতে, খাতায়-কলমে তাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে কয়েকজন ঠিকাদার বলপূর্বক তাদের কাছ থেকে পাসবই ছিনিয়ে নিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে। আর তারপরেই নিম্নমানের কাজের মধ্যে দিয়ে এই ধরনের বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এদিন এই নিয়ে পৌরসভাকে কয়েকবার জানানো সত্ত্বেও পৌরসভা কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে দাবি করেছে অভিযোগকারী উপভোক্তাদের।

এদিন অভিযোগকারীদের মধ্যে সুশীলা পূর্বপাড়ার নরেশ নরেশ সাউ, ধারাপাড়া এলাকার আমালউদ্দিন শেখরা নির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করেন, “যে সমস্ত বাড়ি তৈরি হয়েছে, সেগুলোকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে না নতুন বাড়ি। কাজ সম্পূর্ণ না হতেই সেই বাড়িগুলোতে রীতিমতো ফাটল দেখা দিয়েছে।” আর পৌরসভার এই ধরনের কাছে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিরোধী দলের নেতারাও।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই বিষয়ে সিপিএমের গুসকরা শহরের অন্যতম নেতা মনোজ সাউ অভিযোগ করেন, “তৃণমূল উপভোক্তাদেরকে ঘর তৈরি করতে দিচ্ছে না। ঠিকাদাররা গায়ের জোরে ঘর তৈরি করে টাকা আদায় করছে। আর তার ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। এই বিষয়ে বিজেপির তরফ থেকে প্রাক্তন পৌরপ্রধান চঞ্চল গড়াই বলেন, “কাটমানি দুর্নীতিতে ঢেকে গিয়েছে পুরসভা। এসব তারই প্রতিফলন।” অন্যদিকে পৌরসভার পূর্ত দপ্তরের দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বেশ কয়েকজন হাউজ হোল্ডারদের তরফ থেকে থেকে এই ধরনের অভিযোগ সামনে এসেছে। পৌরসভাকে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নিতে বলছি।”

এদিকে সমগ্র বিষয় নিয়ে মন্তব্য প্রকাশ করতে গিয়ে পৌরসভার বিদায়ী পৌরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায় বলেন, “পুরসভার দেখভালের অভাবে উপভোক্তাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে।” কিন্তু যে যাই বলুক না কেন, এই ধরনের দুর্নীতির চিত্র সামনে আশাতে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে প্রশাসনকে। যা আগামী দিনে শাসক দলের পক্ষে ভালো সংকেত নয় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

যদিও দায়িত্বে থাকা নির্বাহি আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, সমস্যায় পড়া হাউস হোল্ডারদের জলছাদ তৈরি করে দেওয়ার কথা প্রশাসনের তরফ থেকে ভাবা হচ্ছে। কিন্তু যদি অভিযোগকারীদের এই ধরনের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এত বড় দূর্নীতি হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও প্রশাসন কেন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে! রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এখন নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে পৌর প্রশাসন কি কর্মসূচি গ্রহণ করে! সেদিকেই নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!