এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > গুরুদেব সহায় – ( লাভ স্টোরি ) – কলমে-অপরাজিতা -পর্ব- ৬

গুরুদেব সহায় – ( লাভ স্টোরি ) – কলমে-অপরাজিতা -পর্ব- ৬


অনিমা – দাড়াও মেয়েটার বাড়িতে ফোন করে আচ্ছা করে ঝাড়বো। নচ্ছার বেহায়া মানুষ সব।

মঞ্জু- হ্যাঁ, ঠিক বলেছো।কিন্তু ফোন নম্বর নেই বললে যে।

অনিমা – তোমার দাদা একটা খাতায় কাকে দেখতে গেছি ,না গেছি, তাদের ডিটেলস লিখে রাখে সেখান থেকে খুঁজে বের করতে হবে। যদিও সে অনেক হ্যাপা। সব খুঁজতে হবে।

মঞ্জু – হোক, আমিও খুঁজছি। কিন্তু এই সুযোগ হাতছাড়া করো না , দাদা কিছুতে তোমাকে ফোন করতে দেবে না। আচ্ছা করে কথা শোনাও। ঝেড়ে কাপড় পরিয়ে দাও। আমাদের সোনার টুকরো ছেলেকে হাত করবে এত বড় সাহস।

শুরু হলো খাতা খোজ। অনেক খুঁজে খাতা মিললো। এবার খোঁজ শুরু সেই মেয়ের। নামটা মনে ছিল না। কিন্তু রাজর্ষি ফের মনে করিয়ে দিয়েছে শ্রীপর্ণা। আগেও একটা শ্রীপর্ণা বলে মেয়েকে দেখতে গেছে অনিমা। পছন্দ হয়নি। তার সাথে গুলিয়ে ফেলবে না তো আবার। তাহলে মুশকিল। অবশ্য এর সৎ মা সেটা দেখেই চিনে নেবে। অনেক খোঁজ করে মিললো ডিটেলস। লাল কালিতে কাটা নিচে লেখে পছন্দ নয়। যেমন বাকিদের লেখা। ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন করলো। রিং হচ্ছে বৌদি নাও কথা বলো ফোনটা এগিয়ে দিলো মঞ্জু।

ওপাশ থেকে আওয়াজ এলো – হ্যালো,

অনিমা – প্রশান্তবাবু বলছেন।

প্রশান্তবাবু – হ্যাঁ , আপনি কে?

অনিমা – আমি অনিমা বলছি. রাজর্ষীর মা। আমার ছেলে আপনার মেয়েকে দেখতে গিয়েছিলো মনে পড়ছে নিশ্চই।

প্রশান্ত বাবু – ও হ্যাঁ হ্যাঁ , ভালো আছেন? বাড়ির সবাই ভালো ?

অনিমা – না ভালো নেই। আর ন্যাকা সাজছেন কেন? জানেন না কি করেছে আপনার মেয়ে ?

প্রশান্ত বাবু – ন্যাকা সাজছি? মানে? আর কি করেছে আমার মেয়ে ?

অনিমা – নাটক করবেন না বুঝলেন একদম নাটক করবেন না। আমার ছেলের মতো এমন একটা ছেলেকে বশ করে ফেললেন ? মেয়েকে লেলিয়ে দিলেন। ছিঃ আপনাদের মতো মানুষ দের জন্যই মানুষ ভদ্র সমাজে মুখ দেখাতে পারে না।

প্রশান্ত বাবু – কি সব উল্টো পাল্টা কথা বলছেন আপনি। আমি তো বিন্দুবিসর্গ বুঝতে পারছি না। আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আগামী রবিবার আমরা দিন ঠিক করতে যাবো ছেলের বাড়ি।

অনিমা – ও বাবা গো , তবুও মেয়ে এত কান্ডি করে বেড়াচ্ছে। আর আপনি জানেন না। আপনার স্ত্রী নিশ্চই জানেন ?

প্রশান্ত বাবু – দেখুন আমি ভদ্রলোক , ভদ্রভাবে আমার মেয়েকে মানুষ করেছি। তার সম্পর্কে এই সব কথাবার্তা আপনি বলেন কোন সাহসে।অনেকক্ষন ধরে আপনার এই সব নোংরা নোংরা কথা সহ্য করেছি আর নয়।

অনিমা – ও বাবা বলে কি , আমি নোংরা কথা বলছি , আর আমার ছেলেকে হাত করে সম্পত্তি হাতাতে যে চাইছেন আপনারা আপনারা নোংরা নন ? ছোটোলোক সব। প্রথমেই জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে মেয়ের রং কেমন? মিথ্যা করে বলেছিলেন রং ধপধপে ফর্সা। যদি জানতাম কালো তাহলে ছেলেকে পাঠাতাম না । যখন ছেলে না বলে দিলো তখন তাকে ছেলের ব্যাঙ্কে তাকে হাত করলেন লজ্জা করে না আবার বড় বড় কথা বলছেন।

প্রশান্তবাবু – আমার মেয়ে আপনার ছেলেকে হাত করেছে ?

অনিমা – করেছে তো সে তো বলছে বাড়িতে আপনার মেয়েকে ছাড়া বিয়ে করবে না। আর কাউকে বিয়ে করবে না। আপনার মেয়েও নাকি আমার ছেলেকে ভালোবাসে সেও নাকি আমার ছেলেকে ছাড়া বিয়ে করবে না।

প্রশান্তবাবু – আপনার ছেলে মিথ্যা  কথা বলছে। আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। নিজের ছেলেকে সামলাতে পারেন না আমার মেয়েকে নিয়ে কথা বলছেন ?

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

অনিমা – হুম ধুঁয়া তুলসী পাতা সব, আজ আমার ছেলে আর আপনার মেয়ে দেখা করছে বাইরে জানেন। মেয়েকে এমন শিক্ষা দিয়েছেন যে তার বিয়ে ঠিক হওয়া স্বত্তেও অন্য ছেলের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নচ্ছার, দুশ্চরিত্রা কোথাকার। মেয়েকে সামলান , আমি ওই মেয়েকে কিছুতে বাড়ির বৌ করবো না।

কথা শেষ হতে না হতেই অনিমার থেকে ফোনটা নিয়ে মঞ্জু বললো – শুনুন আমি ওর পিসি বলছি। আপনার মেয়ে আমাদের ছেলের সাথে ঘুরতে গেছে। যদি ভালো মন্দ কিছু হয় তখন কিন্তু আমরা মানব না বলে দিচ্ছি আপনার মেয়ের বদনাম হবে ,অমন মেয়েকে আমরা ঘরে তুলবো না।

প্রশান্তবাবু – আপনারা ঠিক জানেন আপনাদের ছেলের সাথে পর্ণা ঘুরতে গেছে ?

মঞ্জু- না তো কি ? আমরা মিথ্যা বলছি। নিজের মেয়ের খোঁজ জানেন না। আপনি হয়তো জানেন না। আপনার স্ত্রী জানেন। সৎ মা অনেক কিছুই করতে পারে।

প্রশান্তবাবু – দেখুন আমার স্ত্রীর ব্যাপারে উল্টোপাল্টা কথা বলবেন না। আপনাদের ছেলে কেমন? সে কেন যে মেয়েকে অপছন্দ করেছে তার সাথে সম্পর্ক রেখেছে ?

মঞ্জু – ওরে বাবা রে , এ যে উল্টো চাপ দিচ্ছে গো। আপনাদের মেয়ে যদি গায়ে পরে আমাদের ছেলে ছোট সে কি করবে। ছেলেরা এত বোঝে।কতটুকুই বা বয়েস।

প্রশান্তবাবু – তাহলে ছেলের বিয়ে দেবেন না, যে ছেলে এখনো সাবালক নয় বিশ্বাস করুন আমি তার হাতে আমার মেয়েকে দেব না। আপনারা কি আমার মেয়েকে রিজেক্ট করবেন। আমি আপনাদের ওই দুধের শিশুকে রিজেক্ট করছি। মায়ের কোলে শুয়ে থাকা ছেলের হাতে আমার মেয়েকে দেব না। — বলে ফোনটা কেটে দিলেন।

 

মাথায় এবার আগুন জ্বলছে অনিমার। আমার ছেলেকে এমন করে অপমান করলো। আমার ছেলেকে রিজেক্ট করলো। আঁতে ঘ লাগারই কথা – কেননা রিজেক্ট করার পেটেন্ট এখনো পর্যন্ত শুধুমাত্র পাত্রপক্ষের হাতেই থাকে ,এটা তাদের স্বাভাবিক অধিকার। সেখানে পাত্রীপক্ষ হস্তক্ষেপ করবে বা সেই অধিকারে ভাগ বসবে তা কি সহ্য করা যায়। না কিছুতেই নয়।

ফের ফোন করলো। প্রশান্তবাবুই ধরলেন। অনিমা – আপনাদের এতবড় সাহস আমার ছেলেকে এইভাবে অপমান করলেন। ও দুধের শিশু, সাবালক হয়নি ? আপনার মেয়ের যোগ্যতা আছে যে সে আমার ছেলের বৌ হবে?

প্রশান্তবাবু – আপনার ছেলের আপনাদের যোগ্যতা নেই আমার মেয়েকে বৌ বা বৌমা হিসাবে পাওয়ার। আমার মেয়েকে আমি সামলে নেবো। আপনারা আপনাদের ছেলেকে সামলান। যেন আমার মেয়ের সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টাও না করে। ভাগ্যিস এখন আপনাদের ভদ্র লোকের আড়ালে আসল রূপটা দেখতে পেলাম। এখানে আমার মেয়ের বিয়ে হেলে আমার মেয়ের জীবনটা কয়লা হয়ে যেত।

অনিমা – কি বললেন ?

প্রশান্তবাবু – আরো বলছি শুনুন। আপনারা যা লোক তাতে হয়তো আমার মেয়েকে মেরেই ফেলতেন। যে মেয়ে আপনাদের বাড়ির বৌ হবে তার জন্যে আমার রীতিমতো চিন্তা হচ্ছে। আমার পরিচিত কোনো মেয়ের সাথে আপনার ছেলের সম্বন্ধ হলে আমি তো আগে বলবো যে এই বাড়িতে বিয়ে দিও না। তার চেয়ে ভালো মেয়েকে হাত পা বেঁধে জলে ফেলে দাও। বলে ফোনটা কেটে দিলেন।

রগে ফুঁসছে অনিমা। মঞ্জুও তাতে ঘি ঢালছে। ও বাবা বৌদি কি লোক গো , কিভাবে অপমান করলো। বিয়ে হলে মেয়েকে দিয়ে নির্ঘাত সব সম্পত্তি লিখিয়ে নিতো আর তোমাদের মিথ্যা কেস দিয়ে জেল খাটিয়ে সর্বশ্রান্ত করতো। বলো ছেলেকে কাকে বিয়ে করবে বলে লাফাচ্ছে। আসল রূপটা জানুক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!