লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 42 এ 42 এর ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই স্লোগান বাস্তবে রূপায়িত করতে পারেনি তার সৈনিকেরা। উল্টে 22 টি আসন দখল করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। অন্যদিকে 18 টি আসন নিজেদের দখলে নিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে বিজেপি।

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই দিকে দিকে বিভিন্ন পৌরসভা বিজেপির দখলে আসতে শুরু করে। তৃণমূল ত্যাগী উত্তর 24 পরগনার ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের হাত ধরে সেখানকার একাধিক পৌরসভায় গেরুয়া রং লাগে। যার ফলে প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে ঘাসফুল শিবির।

কিন্তু এবার যেন ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরে আসতে শুরু করল। হালিশহর পৌরসভা তৃণমূলের থেকে বিজেপি নিজেদের দখলে নিলেও গতকাল সেখানকার চেয়ারম্যান সহ একাধিক কাউন্সিলর ফের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে নাম লেখান। আর এতে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির।

এদিন এই চেয়ারম্যান সহ আট কাউন্সিলর তৃণমূলে ফিরে এলে কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বাঘকে জঙ্গল থেকে বের করলেও বাঘের মন থেকে কিন্তু জঙ্গলকে মুছে ফেলা যায় না। তাই হালিশহর পৌরসভার কাউন্সিলররা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা রেখে ফের তৃণমূলে ফিরে এলেন।”

তবে বিজেপিতে আসা কাউন্সিলার রা তৃধমূলে ফিরে গেলেও হালিশহর পৌরসভা বিজেপির দখলেই থাকবে বলে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। এদিন তিনি বলেন, “বুধবার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে। আর সেইখানেই ভোটাভুটিতে এই হালিশহর পৌরসভা বিজেপির দখলে চলে আসবে। চেয়ারম্যান কোনোদিনই আমাদের পক্ষে ছিলেন না। আমরা প্রমান করে দেব যে এই পৌরসভা বিজেপির দখলেই রয়েছে।” আর অর্জুন সিংহের এই দাবি ঘিরেই এবার রাজনৈতিক মহলের অন্দরে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।

অনেকে বলছেন, চেয়ারম্যান যদি বিজেপির পক্ষে নাই থাকে, তাহলে তাকে নিজেদের দলে রেখেছিলেন কেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা! তবে সমালোচক এবং নিন্দুকদের বক্তব্যে কান না দিয়ে এখন বিজেপির মূল টার্গেট, হালিশহর পৌরসভাকে নিজেদের দখলে নিয়ে আসা।

আর তাই অনাস্থা প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভোটাভুটির দিকে নজর রেখেই এই হালিশহর পৌরসভা তাদের দখলে আসবে বলে আত্মপ্রত্যয়ী ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ। তবে শেষ পর্যন্ত অর্জুন সিংহের এই দাবি বাস্তবের সঙ্গে মেলে কিনা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।