সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে সারাদেশে ব্যাপক গেরুয়া ঝড় প্রত্যক্ষ করেছে সাধারন মানুষ। বিরোধীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিজেপি আর ক্ষমতায় ফিরবে না বলে দাবি করা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু 2014 সালের থেকে আরও বেশি আসন নিয়ে 2019 এ ক্ষমতা দখল করেছে সেই ভারতীয় জনতা পার্টি।

কিন্তু লোকসভার সেই ফলাফলের কিছুদিন পেরোতে না পেরোতেই হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কিছুটা ধাক্কা খেল। যা নিঃসন্দেহে গেরুয়া শিবিরের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তবে হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে বিজেপির ক্ষমতা দখল করলেও, লোকসভা নির্বাচনের থেকে ফলাফল খারাপ হওয়ায় বাংলায় কি এর কোনো প্রভাব পড়বে!

তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রবল জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে।বস্তুত 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় আঠারোটা আসন পেয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।আগামী 2021 এর বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে তারাই ক্ষমতা দখল করবে বলে ইতিমধ্যেই দাবি করতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।

আর এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কিছুটা ধাক্কা খাওয়ায় বাংলায় তাদের ক্ষমতা দখল কার্যত স্বপ্নই থেকে যাবে বলে দাবি করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানায় বিজেপি কিছুটা ধাক্কা খাওয়ায় বাংলায় তাদের অনেকটা লাভ হল বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

অনেকে বলছেন, এর ফলে বিজেপির অহমিকাবোধ যেমন কিছুটা কমল, ঠিক তেমনই নিজেদের ক্ষমতা দখলের জন্য যা ইচ্ছে তা যে করা যাবে না, তাও বুঝতে শুরু করল ভারতীয় জনতা পার্টি বলে মত বিশিষ্টজনদের। একাংশের দাবি, লোকসভায় বিজেপি ভালো ফলাফল করার পর তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দিতে শুরু করেছিলেন। যার ফলে বিজেপির প্রতি বিশ্বাস হারাতে শুরু করেছিলেন অনেকে। গেরুয়া পার্টিতেও শুরু হয়েছিল পুরাতন বনাম নতুন কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।

কিন্তু দলে শৃঙ্খলা রাখবার জন্য বারবার সরব হতে দেখা গেছে বিজেপি নেতৃত্বকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলায় বিজেপির শৃঙ্খলা দেখা যায়নি। তবে হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রের খারাপ ফলাফল, আগামী দিনে বাংলায় ক্ষমতা দখল করতে গেলে যে দলে শৃঙ্খলা আনতে হবে, সেই ব্যাপারে সাবধানী হবে বিজেপি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

শুধু তাই নয়, তৃণমূলকে সরিয়ে বাংলায় যদি তারা ক্ষমতায় আসতে চায়, তাহলে এখন থেকেই তাদের আরও বেশি করে জনসংযোগে মনোযোগী হতে হবে। তাই পার্শ্ববর্তী রাজ্যে তাদের ফলাফল খারাপ হওয়ায় বাংলায় ক্ষমতা দখল করবার জন্য বিজেপি জনসংযোগকেও আরও বেশি করে কাজে লাগাবে বলেও মনে করছেন একাংশ।

সব মিলিয়ে এখন বাংলায় নিজেদের সংগঠন থেকে শুরু করে অন্যান্য দিকের ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়ে বিজেপি কতটা সঠিক পথে চলতে পারে, সেদিকেই নজর গোটা রাজনৈতিক মহলের।