প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গতকাল রাতে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে যোগদানের নির্দেশ পাঠানো হয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। আগামী সোমবার সকাল দশটায় তাঁকে দিল্লিতে উপস্থিত হবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রের এই নির্দেশের মধ্যে সম্পূর্ণ রাজনীতি আছে বলে, অভিযোগ তৃণমূলের। প্রসঙ্গত, গতকাল প্রধানমন্ত্রী কলাইকুন্ডাতে এলেও, তাঁর সঙ্গে রিভিউ বৈঠকে যোগদান করেন নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু ক্ষতিপূরণের রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়ে তিনি স্থান ত্যাগ করেন। যে ঘটনাটি নিয়ে সরব হন একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। আর এরপরেই রাজ্যের মুখ্য সচিবকে দিল্লিতে তলব করে কেন্দ্রীয় সরকার।

গতকাল যশ বিধ্বস্ত উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আবার,গতকাল পশ্চিমবঙ্গের যশ বিদ্ধস্ত জেলাগুলি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল, সফরে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক বৈঠকে যোগদান করেছিলেন তিনি। এরপর কলাইকুন্ডাতে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যোগদান না করে শুধুমাত্র ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তাঁর হাতে তুলে দেন।

গতকাল, প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি তাঁকে ডেকেছেন বলেই দেখা করতে এসেছিলেন তিনি। মুখ্যসচিবকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট জমা দিতে চান। দিঘায় তাঁর একটি বৈঠক আছে। সেখানে যাওয়ার তিনি অনুমতি চাইছেন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী সেখান থেকে চলে যান। গতকাল এভাবে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।

এ প্রসঙ্গে টুইট করে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান যে, পশ্চিমবঙ্গে যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী কোন একক ব্যক্তি নন, তাঁরা প্রতিষ্ঠান। জনসেবার জন্য তাঁরা দুজনেই দায়বদ্ধ ও সংবিধান মেনে চলার শপথ নিয়েছেন তাঁরা। টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার জানান, ঘূর্ণি ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর আধিকারিকেরা অংশগ্রহণ করেননি। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে বয়কট করার সামিল। গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর আচরণকে দুর্ভাগ্যজনক ও অশোভন বলে কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

আর, এরপরই রাজ্যের মুখ্য সচিবকে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। তাঁর এই হঠাৎ বদলির মধ্যে রাজনৈতিক কারণ খুঁজে পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। যে ইস্যুতে কেন্দ্র বিরোধীতায় নামতে চলেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিতে চলেছেন বলে, জানা যাচ্ছে। তবে, বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এর মধ্যে রাজনীতির কোনো ব্যাপার নেই। সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে, একাধিক বিশ্লেষকের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীকে কিছুটা কোনঠাসা করতে, ডানা ছাটতে তাঁর বিস্বস্তকে বদলির এই নির্দেশ দেওয়া হলো।