হেভিওয়েট বিজেপি নেতা তৃণমূল ফিরলে উত্তরবঙ্গে ভরাডুবি হবে বিজেপির? জোর জল্পনা! উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য July 8, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –তৃণমূলের প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিপ্লব মিত্র। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সংগঠন সেই বিপ্লব মিত্রের হাত ধরে ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভরসা রেখেছিলেন তাঁর ওপর। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই সুর কাটতে শুরু করে। অর্পিতা ঘোষকে প্রার্থী করার পরেই রীতিমত সরব হন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের তৎকালীন সভাপতি বিপ্লব মিত্র। পরবর্তীতে অর্পিতা ঘোষ বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হওয়ার পর বিপ্লববাবুকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপরই রীতিমত ক্ষোভে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন বিপ্লব মিত্র। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এক সময় উত্তরবঙ্গ কাঁপানো এই হেভিওয়েট নেতা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সহ একাধিক জেলা থেকে তৃণমূলকে ভাঙতে সক্ষম হবেন বলে মনে করা হলেও, সেভাবে বিপ্লব মিত্রকে বিজেপিতে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। সাম্প্রতিককালে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে যে, বিজেপিতে সেভাবে গুরুত্ব না পেয়ে আবার নিজের প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসের ফিরে যেতে চান বিপ্লব মিত্র। এমনকি নিজেও এই ব্যাপারে তৃনমূল যদি তাকে গ্রহণ করে, তাহলে তিনি অবশ্যই সেখানে ফিরবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিপ্লব মিত্র। আর তৃণমূলের এককালের দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত বিপ্লববাবু যদি 2021 বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেন, তাহলে উত্তরবঙ্গে বিজেপি অনেকটাই চাপে পড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেননা একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একসময় তৃণমূল কংগ্রেসকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তিল তিল করে সাজিয়েছেন এই বিপ্লব মিত্র। তার বিকল্পে অন্য কেউ এই জেলায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি হতে পারে, তা ভাবতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে মাঝে শংকর চক্রবর্তীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিলেও আবার সেই বিপ্লব মিত্রের কাধেই সভাপতির দায়িত্ব তুলে দেন তিনি। আর এর পরেই বিপ্লববাবু ছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের সংগঠন ধরার মতো ব্যক্তি যে কেউ নেই, তা কার্যত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিজেপিতে গিয়ে সেভাবে তৃনমূলকে ভাঙতে পারেননি বিপ্লব মিত্র। ফলে সেই বিপ্লববাবু যদি এবার বিজেপি ছেড়ে আবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন, তাহলে গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি অনেকটাই বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সামনেই 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন। সত্যি সত্যিই যদি শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সংকেত বিপ্লব মিত্রের তৃণমূলে অভিষেক সম্পন্ন হয়, তাহলে উত্তরবঙ্গে বিপ্লববাবুকে কাজে লাগাতে পারে শাসকদল। আর বিপ্লব মিত্রের যেহেতু তৃণমূল দলটা চেনা, তাই তার কাজ করতে কোনো অসুবিধা হবে না বলেই মনে করছে একাংশ। আর যদি তিনি একবার তার কাজ প্রাক্তন দলে ফিরে শুরু করে দেন, তাহলে তা বিরোধীদের কাছে অত্যন্ত চাপের হবে বলেই দাবি করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। আর সেদিক থেকে অনেকে বলছেন যে, গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি উত্তরবঙ্গে আটটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি লোকসভা আসন পেলেও, এই হেভিওয়েট নেতা তৃণমূলে যোগ দিলে তিনি অনেকটাই বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিতে পারবেন। তবে বিজেপি ঘনিষ্ঠমহলে তরফে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, মানুষ 2021 এ পরিবর্তন চাইছে। তাই কে কোথায় যোগ দিল, তাতে কিছু এসে যায় না। শেষ কথা বলবে বাংলার মানুষ। তারা 2021 এ উত্তরবঙ্গে বিজেপিকে বিপুলভাবে সমর্থন করবেন। এদিকে বিপ্লব মিত্রের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে তৃণমূলের তরফে অবশ্য কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে একাংশ অবশ্য বলছেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর যতটা বিপ্লব মিত্রের ক্ষমতা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল, ততটা তিনি ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেননি। তার সাথে যারা বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তারা অনেকেই আবার পরবর্তীতে তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। ফলে এখন কার্যত বিজেপিতে একা হয়ে গিয়েছেন বিপ্লব মিত্র। তাই তার পক্ষে তৃণমূলে না ফিরলে রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকারে চলে যেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই এখন তৃণমূলে ফেরাই তার কাছে প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে দীর্ঘদিন বাড়িতে বসে থাকা রাজনীতিবিদ বিপ্লব মিত্র যদি তৃণমূলে ফিরে আসেন, তাহলে তার পক্ষে বিজেপিকে আটকানো কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এখন শেষ পর্যন্ত বিপ্লব মিত্র কি সিদ্ধান্ত নেন এবং তার সিদ্ধান্তের ফলে উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -