প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত হয়ে উঠেছে ব্যারাকপুর। ব্যাপকহারে সংঘর্ষ, বোমাবাজি, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। এলাকায় অশান্তির জন্য বারবার বিজেপিকে দোষারোপ করেছে তৃণমূল। বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের মদতে তৃণমূল কর্মীদের হেনস্তা করা হয়েছে বলে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচনে পট পরিবর্তন ঘটেছে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বড়োসড়ো জয় পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তবে রাজনৈতিক হাত বদল হলেও, এলাকার অশান্তি বন্ধ হয়নি। এবার অর্জুন সিং এর বাড়ির সামনেই বোমাবাজি, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠে এল।

বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ক্রমশ অশান্তি বাড়ছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। গত কিছুদিন ধরে বারবার ঘটছে সংঘর্ষ, বোমাবাজির ঘটনা। গত শুক্রবার রাতে ভাটপাড়ায় বোমাবাজি চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সেদিন জগদ্দল, কাকিনাড়া, ভাটপাড়া থেকে দশজন সন্দেহভাজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গত শনিবারও এই ঘটনায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সেদিন জগদ্দলের পালঘাট এলাকায় তীব্র সংঘর্ষ, বোমাবাজি চলে। দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ উপস্থিত হলে, পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। বোমার আঘাতে আহত হন এসআই অভিজিৎ ঘোষ, প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। বহু প্রচেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।

এরপর গতকাল রাতে আবার বোমাবাজি ও ভাঙচুর চলল ব্যারাকপুরে। অভিযোগ উঠেছে, ভাটপাড়ায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এর বাড়ির সামনে চলেছে বোমাবাজি ও ভাঙচুর। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, একদল দুষ্কৃতী বহু দোকানের সামনে বোমা ফেলেছে, দোকান লুটপাট করেছে। বেশ কিছু দোকান মালিকের বাড়ির ভেতরে ঢুকেও ভাঙচুর চালিয়েছে, রাস্তার সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা, বেশকিছু দোকান মালিকের কাছে অর্থ দাবি করেছে, টাকা না দিলে দোকান খুলতে দেয়া হবে না বলে হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

গতকাল রাতে ব্যারাকপুরে দুষ্কৃতী হামলাতে আক্রান্ত জনৈক দোকান মালিকের স্ত্রী জানালেন, দুষ্কৃতীরা এসে প্রথমে টাকা চেয়েছিল, টাকা না দেওয়ায় দোকানে ভাঙচুর চালায়। তারা হুমকি দিয়ে গেছে যে, দাবিমত টাকা দিলে তবে দোকান খুলতে দেয়া হবে। আক্রান্ত দোকান মালিকের মেয়ে এ প্রসঙ্গে জানালেন, দুষ্কৃতীদের গুন্ডাগিরিতে সকলের ক্ষতি হচ্ছে। এলাকায় হিন্দু মুসলমান সকলে আক্রান্ত। সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে তিনি আবেদন জানাচ্ছেন যে, এই গুন্ডাগিরি বন্ধ করতে নেতা-নেত্রীরা উদ্যোগ গ্রহণ করুন।

গতকাল বোমাবাজির অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছান ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি চলে। দুই দলের মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা। তবে পুলিশের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বারবার বোমাবাজি, অশান্তি, তোলাবাজি, মারধর, লুটপাটের ঘটনা ঘটছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। ভাটপাড়া, জগদ্দল, কাঁকিনারা বারবার অশান্ত হয়ে উঠছে। একাধিকবার পুলিশ কমিশনার বদল করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। রাজনৈতিক পালাবদল বারবার ঘটলেও পরিস্থিতির কোন বদল এখনো পর্যন্ত ঘটেনি।