এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > ডানা ছাঁটা হতে চলেছে বেশ কিছু তৃণমূল নেতার! স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন হেভিওয়েট শীর্ষনেতা

ডানা ছাঁটা হতে চলেছে বেশ কিছু তৃণমূল নেতার! স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন হেভিওয়েট শীর্ষনেতা

 

বরাবরই সংগঠনের উন্নতির ক্ষেত্রে অভিনব পদ্ধতি বা নির্দেশ দিতে দেখা গেছে বীরভূমের স্বনামধন্য তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজের দায়িত্বে থাকা একাধিক জেলার পর্যবেক্ষক হিসেবে জেলার সংগঠনের একেবারে অন্তস্থল থেকে নেতৃত্বদেরকে নির্দেশ দিতে দেখা গেছে অনুব্রতবাবুকে। আর এবার কেতুগ্রামের বুথ স্তরের দলীয় কর্মী সমাবেশে যোগ দিয়ে দলের অঞ্চল সভাপতিদেরকে করা বার্তা দিতে দেখা গেল অনুব্রত মণ্ডলকে।

বস্তুত, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষেত্রে খুব একটা সুখকর হয়নি। তৃণমূলের 42 এ 42 স্বপ্নকে চুরমার করে 34 আসন বিশিষ্ট দলকে 22 টি আসনে সীমাবদ্ধ করে দিতে সক্ষম হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বীরভূম জেলাতে বিজেপির জয়ের প্রভাব সেইভাবে না পড়লেও, বেশ কয়েকটি অঞ্চল এবং পৌরসভাতে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে ব্যাপক পরিমাণ মার্জিনে এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীকে। যার কারণে রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলা নেতৃত্বের কপালে।

তাই এদিনের কেতুগ্রামের কর্মীসভা থেকে অনুব্রতবাবু দলীয় অঞ্চল সভাপতিদেরকে কাজ না করতে পারলে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বার্তা দিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, একাধিক বিষয়ে অঞ্চল সভাপতিদেরকে তীব্র ভৎসনা করতে দেখা যায় কেষ্টবাবুকে। এদিন কেতুগ্রামের কর্মীসভা থেকে কেতুগ্রাম 2 নম্বর ব্লকের পাচুন্দি মাঠে বিকেল পাঁচটার সময় কর্মীসভায় যোগ দিতে আসেন অনুব্রত মণ্ডল। আর সেখানে কেতুগ্রামের 1 নম্বর এবং 2 নম্বর ব্লকের কয়েক হাজার কর্মী সমর্থকদের সামনে মঞ্চে উঠে একের পর এক তথ্য তুলে ধরতে দেখা যায় বীরভূম জেলা সভাপতিকে।

এছাড়াও অঞ্চল সভাপতিদেরকে অনুব্রত মন্ডলের তরফে পরাজয়ের কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়। পাশাপাশি সাংগঠনিক বিফলতার কারণে অনুব্রতবাবুর কাছ থেকে তীব্র ভৎসনা শুনতে হয় ব্লক এবং অঞ্চল সভাপতিদেরকে। এদিনের সভা থেকে কোনো নেতৃত্বকে অনুব্রতবাবু স্বেচ্ছায় অবসর নিতে বলেন, আবার কাউকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে কেতুগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে 34 হাজার 936 ভোটে এগিয়ে ছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বুথ ভিত্তিক বিচারে 124 টি বুথের মধ্যে 102 টি বুথে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও, 44 টি বুথে পিছিয়ে ছিল শাসকদল। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে অনুব্রতবাবু ওই ব্লকের ব্লক সভাপতি তরুণ মুখোপাধ্যায়কে আগামী বিধানসভা ভোটে তিনি কত ভোটে দলকে এগিয়ে রাখতে পারবেন, সেই কথা জানিয়ে তা খাতায় লিখে রাখতে বলেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি কেতুগ্রাম 2 নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের পরিস্থিতি আরও খারাপ। সেইখানে মোট 112 টির মধ্যে 30 টি বুথে এগিয়ে থাকলেও, 82 টি বুথে পিছিয়ে আছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বলে জানান অনুব্রতবাবু। সর্বমোট 6491 ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে রয়েছে বলে জানান অনুব্রত মণ্ডল। যার কারণে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতে দুই নম্বর কেতুগ্রাম ব্লকের ব্লক সভাপতিকে মঞ্চে ডেকে রীতিমতো ভৎসনা করেন কেষ্ট মণ্ডল। ব্লক সভাপতিদের উদ্দেশ্যে এদিনের সভা মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা দেন বীরভূমের জেলা সভাপতি।

প্রসঙ্গত, 2 নম্বর ব্লক সভাপতিকে সরাসরি অনুব্রতবাবু বলেন, “তুই ব্যাপক ভোটে হেরে আছিস। 1 নম্বর ব্লকের যদি লিড না হত, তাহলেতো বিধানসভাটাই হেরে যেতাম। তোকে পদ থেকে সরিয়ে দেব।” পাশাপাশি গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ তুলে নিরোল অঞ্চলের সভাপতিকে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ওই অঞ্চলে গোষ্ঠী কোন্দলে ভর্তি। ঘরে ঘরে গ্রুপ।” কাজেই সেই অঞ্চল সভাপতিকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলে সতর্ক করেন তিনি।

এজন্য সভা থেকে এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে যেন কেউ উত্তেজিত হয়ে বাসে ট্রেনে আগুন না লাগায়, সেই বার্তাও দিতে দেখা যায় বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। পাশাপাশি বিক্ষিপ্ত অশান্তি ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আগামী চার-পাঁচ মাসের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচন হতে পারে বলে কর্মী-সমর্থকদেরকে প্রস্তুত থাকার নিদান দেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।

রাজনৈতিক মহলের মতে, একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেও রীতিমতো সংগঠনের জোরে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের আধিপত্য কায়েম রাখতে সক্ষম হয়েছে। এক্ষেত্রে তার সাংগঠনিক বিচারবুদ্ধির প্রতি যথেষ্ট আস্থাবান রয়েছেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমত পরিস্থিতিতে আগামী দিনে অনুব্রতবাবু সাংগঠনিক বিচক্ষণতায় তৃণমূল কংগ্রেস বীরভূম জেলায় নিজেদের আধিপত্য ধরে থাকতে পারে কিনা, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!