প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গের করোনা সংক্রমনের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। সম্প্রতি রাজ্যের মোট করোনা সংক্রমণ ২ লক্ষ ৮৪ হাজারের গণ্ডি অতিক্রম করেছে। করোনায় মৃত্যু ঘটেছে ৫৪০০ জনেরও বেশি মানুষের। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সঙ্গে করোনার শিকার হচ্ছেন সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও। রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে যেমন করোনার সংক্রমণ ঘটেছে, তেমনি সংক্রমণ ঘটেছে বিনোদন জগতেও।

গত মঙ্গলবার প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের করোনা আক্রান্ত হবার খবর এসেছিল। ভর্তি হয়েছিলেন তিনি মধ্য কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিকে। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত এই বর্ষীয়ান অভিনেতার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা তিনি জর্জরিত। এমনই খবর মিলেছিল হাসপাতাল সূত্রে।

অবশেষে শনিবার সকালে এল স্বস্তির খবর। ভালো আছেন সৌমিত্র। ভক্তদের উত্‍কণ্ঠা কমিয়ে হাসাপাতালের তরফে জানানো হয়, তাঁর রক্তচাপ এখন স্বাভাবিক আছে। স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়াও করছেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা । জ্বরটাও আর নেই। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। আশার কথা হল, ফুসফুসে সংক্রমণের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে সুস্থ থাকলেও তাঁকে আপাতত রাখা হবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটেই। কারণ ব্লাড প্রেসার, সুগার, সিওপিডি-র মতো একগুচ্ছ রোগ রয়েছে সৌমিত্রর।

প্রসঙ্গত গত জুলাই মাসে করণায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কোয়েল মল্লিক। তাঁর সঙ্গে সঙ্গেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁর পিতা রঞ্জিত মল্লিক, মাতা দীপা মল্লিক, স্বামী নিসপাল সিং রানে সকলেই। যদিও কিছুদিনের মধ্যে তাঁরা সুস্থ হয়ে যান। তাঁর পরিবারের করোনা মুক্তির কথা সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। এরপর করোনা আক্রান্ত হন রাজ চক্রবর্তী। তিনিও করোনা মুক্ত হয়েছেন। এরপর টেলি সিরিয়ালের একাধিক অভিনেতা অভিনেত্রী ও করোনা আক্রান্ত ও করোনা মুক্ত হয়েছেন।

করোনা পরিস্থিতির কারণে রুপোলি পর্দার সঙ্গে তেমন একটা যোগাযোগ ছিল না বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অনেকটা সময় ধরে। তবুও অল্প কিছুদিন আগেই শুটিংয়ের যোগ দিয়েছিলেন তিনি। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় তাঁর জীবন আধারিত সিনেমা ‘অভিযানের’ শুটিং শেষ করেছিলেন। এই ছবিতে অল্প বয়সের সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যিশু সেনগুপ্ত, তবে বেশি বয়সের চরিত্রে তিনি নিজেই অভিনয় করেছিলেন।

বেশ কিছুদিন ধরেই দেহে বেশ কিছু উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি করোনা পরীক্ষা করান। পরীক্ষার ফল পসিটিভ আসে। এরপর কোনরকম ঝুঁকি না নিয়ে গত মঙ্গলবার মধ্য কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিকে তাঁকে ভর্তি করে দেয় তাঁর পরিবার। বর্ষীয়ান অভিনেতার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের একটি বোর্ড গঠিত হয়েছে। করোনার সংক্রমণ, ৮৫ বছর বয়স, তার উপর কোমর্বিডিটি সমস্ত কিছু নিয়েই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চিকিৎসকদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, প্রথমে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে, এমনও শোনা গেছিল। কিন্তু এর পরেই জানা যায় যে, বর্ষীয়ান অভিনেতা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় পীড়িত হয়েছেন। এ কারণেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। অবশেষে শনিবার সকালে স্বস্তির খবর এলো জানা যাচ্ছে ভালো আছেন সৌমিত্র। প্রবাদপ্রতিম এই অভিনেতা দ্রুত করোনা মুক্ত হয়ে ফিরে আসুন এবং তার অভিনয়গুণে মুগ্ধ করুন আপামর দর্শককে এমনটাই সকলের প্রার্থনা।