এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > মর্মান্তিক! লকডাউনের জেরে মাত্র ১ ভরি সোনা জোগাড় করতে না পারায় প্রাণ গেল গৃহবধূর!

মর্মান্তিক! লকডাউনের জেরে মাত্র ১ ভরি সোনা জোগাড় করতে না পারায় প্রাণ গেল গৃহবধূর!


নিয়ম অনুযায়ী পণ দেওয়া এবং পণ নেওয়া দুটোই গর্হিত অপরাধ। কিন্তু কত প্রাণ যে এই পণের কারণে যায় তার হিসাব কে রাখে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পণ দেওয়া নেওয়া অপরাধ হলেও এখনো দেখা যায় বিভিন্ন জায়গায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে গেলে মেয়ের বাবাকে গুনতে হয় ভালো দাম। যার পোশাকি নাম পণ। দামের একটু হেরফের হলেই পণ্যকে অর্থাৎ গৃহবধূকে নানান রকম নির্যাতনের শিকার হতে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে নববিবাহিতা বধূটি নিজের প্রাণটুকুও আর আগলে রাখতে পারেনা।

ঠিক সেরকমই একটি ঘটনা ঘটে গেল দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন এলাকায়। জানা গিয়েছে মৃতা বধু বেবি দাসের বিয়েতে 1 ভরি সোনা এবং একটি আলমারি পাওনা রয়ে গিয়েছিল বরের। সমস্ত প্রতিশ্রুতি রাখা হলেও এ দুটি জিনিস দিয়ে উঠতে পারেননি বেবি দাসের বাবা এবং তার জেরেই নববিবাহিতা বধুর ওপর অত্যাচার চরমে উঠেছিল। বেবি দাসের বাড়ির লোকের অভিযোগ, বেবিকে শারীরিক অত্যাচার করে ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বেবি দাসের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, রবিবার ময়নাতদন্তের পর বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতাল থেকে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে এ ঘটনার পর থেকেই বেবির শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর শিবরামপুর এলাকার বাসিন্দা প্রফুল্ল দাসের মেয়ে বেবির সঙ্গে তপন থানার হরসুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিন্নাকুড়ি এলাকার বাসিন্দা পেশায় দুধ ব্যবসায়ী স্বপণ মেহরার আনুষ্ঠানিক বিবাহ সম্পন্ন হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

মৃতার পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে, বিয়ের সময় নগদ টাকা থেকে শুরু করে সোনা, বাইক এবং অন্যান্য জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল বরকে। শুধুমাত্র বাকি পড়েছিল 1 ভরি সোনা এবং একটি আলমারি। তার জেরেই অত্যাচার চরমে ওঠে। এদিকে লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ার ফলে পণের দাবি মেটানো যায়নি। তার জেরে নববিবাহিতা গৃহবধূকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে বলে দাবি তাঁর পরিবারের। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে আরেকটি হত্যার ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বালুরঘাট ব্লকের বড় কাশিপুর এলাকায়।

বড় কাশীপুর এলাকায় এক গৃহবধূকে রবিবার সকালে বাড়ির পাশের জঙ্গলে একটি আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এলাকার মানুষজন এই মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। এবং তারপর ওই মৃতদেহ উদ্ধার করে বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এরপর মৃতদেহ পরিবারের লোকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে প্রতিবেশী সুভাষ বর্মন জানিয়েছেন, ওই গৃহবধূর পরিবারে কোনো রকম অশান্তি ছিলনা। তাই মৃত্যুর কারণও স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছেনা। অন্যদিকে বালুরঘাট থানা থেকে এই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে রাজ্যজুড়ে করোনার কারণে লকডাউন চললেও বিভিন্ন জায়গা থেকে বধূ নির্যাতনের করুণ কাহিনী উঠে আসছে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সমাজতত্ত্ববিদদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রেই বারংবার বলা হচ্ছে, বিবাহ পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সময়ে যেকোনো অনায্য দাবি যেন মেনে না নেওয়া হয় মেয়ের বাড়ির পক্ষ থেকে। এবং যেকোনো অবস্থায় সামান্যতম শারীরিক অত্যাচারের সম্মুখীন হলে পার্শ্ববর্তী থানায় গিয়ে সাহায্য নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, বারবার একই ভুল করে চলেছে কিছু পরিবার এবং তার মাশুল গুনতে হচ্ছে সেই পরিবারের সদস্যাটিকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!