এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > দুঘন্টা আগে বনধ প্রত্যাহার করে নিয়ে কি বার্তা দিতে চাইলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ?

দুঘন্টা আগে বনধ প্রত্যাহার করে নিয়ে কি বার্তা দিতে চাইলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ?

ইসলামপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার জেরে আজ সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যে ৬ টা পর্যন্ত ১২ ঘন্টার বাংলা বনধ ডাকে রাজ্য বিজেপি। সকালেই বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে মুকুল রায় জানিয়ে দেন, সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বনধে যোগদান করছেন, বনধ সফল হতে চলেছে। কলকাতা বা সংলগ্ন এলাকা গুলিতে অবশ্য সেভাবে বনধের কোনো প্রভাব দেখা যায় নি। জনজীবন অন্যান্য দিনের মত না হলেও, ছিল প্রায় স্বাভাবিকের কাছাকাছি। দোকানপাট বা যানবাহনও ছিল প্রায় স্বাভাবিকের কাছাকাছি।

তবে বনধ সমর্থনকারীরা বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনের ওভারহেড তারে কলাপাতা বা কলাগাছ ফেলে দিয়ে ফিউজ উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ফলে শিয়ালদহ শাখায় বা হাওড়া শাখায় ট্রেন চলাচল কিছুটা বিঘ্নিত হয়। কিন্তু সড়ক-পরিবহন ছিল বেশ স্বাভাবিক, যদিও বেসরকারি বাস বা গাড়ির সংখ্যা ছিল বেশ কম। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় সরকারি অফিসগুলিতে বা স্কুলগুলিতে উপস্থিতি ছিল বাধ্যতামূলক।

কিন্তু এদিন কলকাতা হাইকোর্টে কোন মামলার কাজ হয় নি। বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সকালেই এক আবেদনে প্রধান বিচারপতিকে জানিয়ে দেন বনধের কারণে যানবাহনের বা নিরাপত্তাজনিত অসুবিধার কারণে আজ আদালতে অনেক আইনজীবীই উপস্থিত হতে পারবেন না। ফলে আজ যেন কোন মামলার শুনানি বা রায়দান না হয়। আজ রাজ্যজুড়েই পুলিশ-প্রশাসন অতিরিক্ত সতর্ক ছিল। তাদের পাশাপাশি আজ বনধ রুখতে রাস্তায় নামে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরাও। বিভিন্ন জায়গায় বনধের জুজু উড়িয়েও রাস্তায় বেরোনো সাধারণ মানুষকে ফুল বা মিষ্টি দিয়ে স্বাগত জানান তাঁরা।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

অন্যদিকে কলকাতা বা সংলগ্ন এলাকাতে বনধ সেভাবে সফল না হলেও, যে জায়গা ঘিরে এই বনধ সেই ইসলামপুর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। বাসে বা টায়ারে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটে। যদিও ইসলামপুরের জন্য পুলিশ-প্রশাসন অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছিল, কিন্তু বনধের সমর্থনে বিজেপি কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি বা টায়ার পোড়ানোর ঘটনায় দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে সেখানে, গ্রেপ্তার হন বেশ কিছু বন্ধ সমর্থনকারীও।

ইসলামপুরের পাশাপাশি দূরের জেলাগুলিতে বনধ মতের উপর সফল। বিশেষ করে যে যে জায়গাগুলিতে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ভালো ফল করেছিল – সেই উত্তরবঙ্গ, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুরে বনধের ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। উত্তরবঙ্গে তো সেভাবে বেসরকারি বাস চোখেই পরে নি। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধে বসেন বিজেপি-কর্মীরা, তবে পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেন। নদীয়া বা উত্তর ২৪ পরগনায় বনধে আংশিক সাড়া পাওয়া গেছে।

এদিকে, আজকের বনধ সফল হয়েছে দাবি করে নির্দিষ্ট সময়ের ২ ঘন্টা আগেই বনধ প্রত্যাহার করে নেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত – সেই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, বনধের উদ্দেশ্য সফল, তাই আমরা দু-ঘণ্টা আগেই বনধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমরা কোথাও কোনও জোর করিনি, স্বতঃস্ফূর্ত বনধ হয়েছে – এ জন্য বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ। ইসলামপুরে যে সংবেদনশীল ঘটনা ঘটেছে, তা মানুষ ভালোভাবে নেননি। সেই ইস্যুতে বনধে বিজেপি ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে।

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি আজকের বনধ সর্বাত্মকভাবে ব্যর্থ – এক কথায় বিজেপির ‘ফ্লপ শো’। আর তাই, তড়িঘড়ি ২ ঘন্টা আগে বনধ প্রত্যাহার করে পালিয়ে বাঁচল বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের আরো দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে বোঝাতে পেরেছেন বনধ কর্মনাশা আর তাই মানুষই এই বনধ রুখে দিয়ে বিজেপিকে বড় বার্তা দিল। আর তাই বিজেপিকে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বনধ প্রত্যাহার করে নিতে হল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!