এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুকুল-ঝড় আটকাতে পিকের শরণাপন্ন মমতা-অভিষেক! শুভেন্দুর বেলায় কে? প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরেই!

মুকুল-ঝড় আটকাতে পিকের শরণাপন্ন মমতা-অভিষেক! শুভেন্দুর বেলায় কে? প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরেই!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একসময় তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন মুকুল রায়। আর তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করবেন, এমন কথা কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি। কিন্তু সেই মুকুল রায়কেও তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে প্রায় তিন বছর আগে যোগদান করতে হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিতে। একসময় মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত দিক সামলাতেন। ভোটব্যাঙ্ক শক্তিশালী করা থেকে শুরু করে কি করলে দলের সংগঠন শক্তিশালী হবে, তার সমস্ত সিদ্ধান্ত নিতেন তিনি।

আর তার কথা মতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সংগঠন পরিচালনা করতেন। কিন্তু সেই মুকুল রায় যখন তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করেন, তখন তাকে অতটা গুরুত্ব দিতে চায়নি শাসক দল। তবে তার পরবর্তী সময়কালে সেই মুকুল রায়ের নানা পদক্ষেপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘুমকে উড়িয়ে দিয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা থেকে শুরু করে বিধায়ক, সাংসদদের বিজেপিতে যোগদান করাতে সক্ষম হয়েছিলেন মুকুল রায়।

পরবর্তীতে লোকসভা নির্বাচনে সেই মুকুল রায়ের মস্তিষ্কেই বিজেপি বাংলায় 18 টি আসন পেয়েছিল। আর এর পরেই সেই মুকুল রায়কে দমাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রশান্ত কিশোরের কাঁধে। তবে বর্তমানে তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর যে ব্যক্তির জনপ্রিয়তা সবথেকে বেশি, সেই শুভেন্দু অধিকারীর আচার-আচরণ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

অনেকে বলছেন, মুকুল রায়ের মত শুভেন্দু অধিকারীও খুব তাড়াতাড়ি দলবদল করতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই এক মুকুল রায়কে আটকাতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশান্ত কিশোরের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। আর বর্তমানে রাজ্যের হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শুভেন্দু যদি অধিকারী দলবদল করেন, তাহলে তার সাংগঠনিক ক্ষমতা খর্ব করতে কার শরণাপন্ন হবেন তৃনমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব, এখন তা নিয়ে দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

অনেকে বলছেন, মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করার পর দলের হাল অনেকটাই ধরেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। লোকসভা নির্বাচনে দলের বৈতরণী পার করতে একের পর এক জেলার দায়িত্ব তার কাঁধে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি সেই দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে পালন করেছেন রাজ্যের বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী। তবে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ফলাফল খুব একটা ভালো না হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশান্ত কিশোরকে রণনীতিকার করেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এর পরেই সেই প্রশান্ত কিশোরের কথামত তৃণমূলের সমস্ত কিছু পরিচালনা হলেও, ঠিকমতো গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারীর মত হেভিওয়েট নেতারা। দলে তাকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দেওয়ার কথা হলেও, শেষ পর্যন্ত কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি তাকে। আর এরপর থেকেই ক্রমশ দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীকে। দল কিংবা সরকারের কোনো রকম কর্মসূচিতে যোগ না দিয়ে নিজের মতো করে অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে উপস্থিত হচ্ছেন তিনি।

বিভিন্ন জায়গায় তার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য জল্পনার সৃষ্টি করছে। অনেকে বলছেন, দল ছাড়ার আগে মুকুল রায় যে সমস্ত আচরণ করতেন, ঠিক একই পদ্ধতি দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে। তাই এই পরিস্থিতিতে মুকুল রায়ের চলে যাওয়ার পর তাকে আটকাতে প্রশান্ত কিশোরের ওপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভরসা রাখলেও, শুভেন্দু অধিকারীর মত হেভিওয়েট মুখকে আটকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাকে শিখণ্ডী করে এগোবেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূলের অন্দরমহলে কান পাতলেই শোনা যায়, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে চাপা লড়াই রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মূলত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্রুতগতিতে উত্থান শুভেন্দু অধিকারীর আপত্তির প্রধান কারণ। একসময় বামেদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে শুভেন্দু অধিকারী লড়াই করলেও, কেন তাকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা না দিয়ে কিছুটা নবাগত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের শীর্ষস্তরে জায়গা দেওয়া হয়েছে!

তা নিয়েই আপত্তি বলে দাবি একাংশের। আর এই পরিস্থিতিতে মুকুল রায় যখন বিজেপির সেনাপতি হয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কিভাবে তৃণমূলকে পরাজিত করা যায়, তার প্ল্যানিং করছেন, ঠিক তখনই যদি শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ করেন, তাহলে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সবথেকে বড় ধাক্কা হবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। তাই এই সমস্যাকে উপলব্ধি করে অবিলম্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল নেতৃত্বের শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত বলে মনে করা হচ্ছে।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যদি দলের দূরত্ব না মেটে, তাহলে মুকুল রায়কে আটকাতে প্রশান্ত কিশোরকে আনা হলেও শুভেন্দু অধিকারীকে আটকাতে কাকে আনবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার জোরালো প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!